Ajker Patrika

‘বাতাসে শুকানো যাজক’-এর রহস্য উন্মোচন করলেন বিজ্ঞানীরা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০২ মে ২০২৫, ২০: ০০
মমিটির চামড়া ও টিস্যু অক্ষত থাকায় এটি অলৌকিকভাবে সংরক্ষিত বলে মনে করতেন অনেকে। ছবি: সিএনএন
মমিটির চামড়া ও টিস্যু অক্ষত থাকায় এটি অলৌকিকভাবে সংরক্ষিত বলে মনে করতেন অনেকে। ছবি: সিএনএন

অস্ট্রিয়ার দানিউব নদীর উত্তরে অবস্থিত একটি পাহাড়ি গ্রামের গির্জার গুহায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সংরক্ষিত একটি রহস্যময় মমি অবশেষে বিজ্ঞানের আলোয় উঠে এসেছে। ধারণা করা হতো, মমিটি ১৮ শতকের কোনো ধর্মযাজকের মরদেহ—যিনি সংক্রামক রোগে মারা গিয়েছিলেন এবং পরে কবর থেকে তুলে গির্জার গুহায় স্থানান্তর করা হয়।

আজ শুক্রবার সিএনএন জানিয়েছে, মমিটির চামড়া ও টিস্যু অক্ষত থাকায় এটি অলৌকিকভাবে সংরক্ষিত বলে মনে করতেন অনেকে। অনেক পুণ্যার্থী বিশ্বাস করতেন, এই দেহে আছে নিরাময়ের ক্ষমতা। তবে এক্স-রে স্ক্যানে একটি রহস্যময় বস্তু ধরা পড়ার পর ধারণা করা হচ্ছিল, ওই যাজক হয়তো বিষক্রিয়ায় মারা গিয়েছিলেন।

সম্প্রতি গির্জার গুহায় পানির লিক ধরা পড়ায় সংস্কারকাজ শুরু হয়েছিল। সেই সুযোগে লুডভিগ-ম্যাক্সিমিলিয়ানস ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখের অধ্যাপক আন্দ্রেয়াস নেরলিখ ও তাঁর দল আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে মমিটি বিশ্লেষণ করে। সিটি স্ক্যান, রেডিও কার্বন ডেটিং ও রাসায়নিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে তারা মমিটির পরিচয় ও সংরক্ষণের রহস্য উন্মোচন করে।

গবেষণায় জানা যায়, মমিটি ফ্রান্জ জেভিয়ার সিডলার ফন রোজেনেগ নামের এক অভিজাত ধর্মযাজকের। তিনি ১৭৪৬ সালে মাত্র ৩৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর দেহ কবর দেওয়া হয়নি। সম্ভবত অন্যত্র পাঠানোর জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছিল।

সবচেয়ে চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে, তাঁর শরীরে কোনো কাটাছেঁড়া হয়নি; বরং পায়ুপথের মাধ্যমে তাঁর পেট ও পেলভিক অঞ্চলে কাঠের টুকরো, কাপড়, লিনেন, হেম্প ও দস্তা ক্লোরাইড দেওয়া হয়েছিল। এই উপাদানগুলো পানি শোষণ করে এবং ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে সাহায্য করে, ফলে দেহটি বাতাসে শুকানো অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষিত থেকেছে।

মমিটির খাদ্যাভ্যাস বিশ্লেষণেও দেখা যায়, তিনি ভালো মানের খাবার খেতেন। যেমন শস্য ও প্রচুর মাংস। একজন গ্রামীণ ধর্মযাজকের জীবনের সঙ্গে বিষয়টির মিল রয়েছে। মৃত্যুর সময় তিনি সম্ভবত যক্ষ্মায় আক্রান্ত ছিলেন এবং ফুসফুসে রক্তক্ষরণে মারা যান।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই আবিষ্কার থেকে এটাই প্রমাণিত হয়, ইউরোপেও বিভিন্ন ধরনের সংরক্ষণ পদ্ধতি ছিল, যেগুলো আগে অজানা ছিল। এই গবেষণা ভবিষ্যতে ঐতিহাসিক স্বাস্থ্য, জীবনধারা ও সংস্কৃতি বুঝতে সাহায্য করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভারতের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি, এবার টার্গেট কৃষি পণ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে দিয়েছেন যে, তিনি কৃষি আমদানির উপর নতুন শুল্ক আরোপ করতে পারেন। বিশেষ করে, ভারত থেকে চাল আমদানি এবং কানাডা থেকে সারের আমদানির উপর। কারণ, উভয় দেশের সাথে বাণিজ্য আলোচনা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছাড়াই চলছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসে এক বৈঠকে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। ওই বৈঠকে তিনি আমেরিকান কৃষকদের জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলারের একটি কৃষি ত্রাণ প্যাকেজ উন্মোচন করেন এবং একই সাথে ভারত ও অন্যান্য এশীয় সরবরাহকারীদের কাছ থেকে কৃষি আমদানির তীব্র সমালোচনা করেন।

রিপাবলিকান এই নেতা দাবি করেন, আমদানি দেশীয় উৎপাদকদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে এবং তিনি আমেরিকান উৎপাদকদের রক্ষা করার জন্য শুল্ককে আক্রমণাত্মকভাবে ব্যবহার করে এই সমস্যা সমাধানের তার উদ্দেশ্যের পুনরাবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, তাঁর প্রশাসন ‘আমেরিকান কৃষকদের জন্য ১২ বিলিয়ন ডলার অর্থনৈতিক সহায়তা’ বরাদ্দ করবে, যার অর্থায়ন হবে বাণিজ্য অংশীদারদের কাছ থেকে ইউএস যে শুল্ক রাজস্ব সংগ্রহ করছে তা থেকে।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আসলে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার নিচ্ছি, যদি আপনি একটু ভেবে দেখেন’ এবং যোগ করেন, দেশগুলো ‘এমনভাবে আমাদের সুযোগ নিয়েছে যা আগে কেউ দেখেনি।’

তিনি এই নতুন সাহায্যকে খামার অর্থনীতির স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য বলে অভিহিত করেন, যা তিনি বারবার উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া মুদ্রাস্ফীতি এবং হতাশাজনক পণ্যমূল্যের ফলে হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘কৃষকরা অপরিহার্য জাতীয় সম্পদ, আমেরিকার মেরুদণ্ডের অংশ।’ তিনি যুক্তি দেন, মার্কিন কৃষিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য শুল্কের সুবিধা কাজে লাগানো তাঁর কৌশলের কেন্দ্রবিন্দু।

চাল আমদানির উপর এক দীর্ঘ আলোচনার সময় ভারত বিশেষভাবে একটি উদাহরণ হিসাবে উঠে আসে। এই বিষয়টিকে লুইসিয়ানার এক উৎপাদক দক্ষিণ অঞ্চলের চাষীদের জন্য ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে বর্ণনা করেন।

যখন ট্রাম্পকে জানানো হয় যে, ভারতীয় সংস্থাগুলো মার্কিন খুচরা চাল বাজারে ‘সবচেয়ে বড় দুটি ব্র্যান্ডের’ মালিক, তখন ট্রাম্প বলেন, ‘ঠিক আছে, এবং আমরা এটির যত্ন নেব। এটা দারুণ। এটা খুবই সহজ... শুল্ক, আবারও, দুই মিনিটের মধ্যে সমস্যার সমাধান করে।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘তাদের ডাম্পিং করা উচিত নয়... মানে, আমি এটা শুনেছি, আমি অন্যদের কাছ থেকে এটা শুনেছি। আপনারা এটা করতে পারবেন না।’

তিনি স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করার জন্য কানাডা থেকে আসা সারের উপরও সম্ভাব্য শুল্ক ব্যবস্থার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘এর অনেকটাই কানাডা থেকে আসে, এবং তাই আমাদের যদি প্রয়োজন হয় তবে আমরা সেটির উপর খুব কঠোর শুল্ক আরোপ করব, কারণ এটিই সেই উপায় যার মাধ্যমে আপনি এখানে জোরদার করতে চান।’ তিনি যোগ করেন, ‘এবং আমরা এটি এখানে করতে পারি। আমরা সবাই এটি এখানে করতে পারি।’

ভারত-মার্কিন কৃষি বাণিজ্য গত দশকে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ভারত বাসমতি, অন্যান্য চাল পণ্য, মশলা এবং সামুদ্রিক পণ্য রপ্তানি করে এবং ইউএস থেকে বাদাম, তুলা এবং ডাল আমদানি করে। ভর্তুকি, বাজার প্রবেশাধিকার এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অভিযোগ — বিশেষ করে চাল ও চিনি সংক্রান্ত — নিয়ে বিরোধগুলো পর্যায়ক্রমে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় চাপ সৃষ্টি করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৫৯০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এবার দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে বৈঠক হবে ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমন্ত্রণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ২৯ ডিসেম্বর হোয়াইট হাউসে বৈঠকে বসছেন। আজ সোমবার ইসরায়েলি সরকারের একজন মুখপাত্র বৈঠকের তারিখটি নিশ্চিত করেছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের প্রাথমিক ঘোষণা আসে। তবে আজ ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র শশ বেদ্রোসিয়ান অনলাইন ব্রিফিংয়ে বৈঠকের প্রধান আলোচ্যসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।

বৈঠকে নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প গাজার যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপ এবং ভবিষ্যতের পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবেন। এ ছাড়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েনের বিষয়টি নিয়েও কথা হবে।

গতকাল রোববার নেতানিয়াহু বলেছিলেন, বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে গাজায় হামাসের শাসনের অবসান করা এবং হামাস যেন যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় দেওয়া ‘প্রতিশ্রুতি’ (নিরস্ত্রীকরণ) পূরণ করে, তা নিশ্চিত করা। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ ‘আরও কঠিন’ হবে।

যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপে প্রধানত ইসরায়েলি বন্দী ও ইসরায়েলের হাতে আটক ফিলিস্তিনিদের বিনিময় এবং গাজার কিছু অংশ থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপের চুক্তিতে যুদ্ধপরবর্তী গাজা প্রশাসন নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা, যা একটি অত্যন্ত জটিল ও বহুলাংশে অমীমাংসিত বিষয়। এই ধাপে নেতৃত্ব, ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং আইএসএফ বাহিনীর ভূমিকা নির্ধারণ করা বাকি রয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর থেকে মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী ৫৯০ বারের বেশি এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে জানা গেছে। যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অন্তত ৩৬০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

এদিকে, বৈঠকটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে ইসরায়েলকে একটি নতুন নিরাপত্তা চুক্তি করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। গত সপ্তাহে তিনি সামাজিক মাধ্যমে ইসরায়েলকে সিরিয়ার সঙ্গে ‘শক্তিশালী ও ফলপ্রসূ সংলাপের’ আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে সিরিয়ায় ইসরায়েলের বারবার অনুপ্রবেশ এবং বিমান হামলা সেই আলোচনাকে বহুলাংশে ব্যাহত করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ায় তরুণীকে হত্যার পর ৪ বছর ভারতে লুকিয়ে ছিলেন ঘাতক

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ঘাতক রাজবিন্দর সিং ও হত্যার শিকার টোইয়া কর্ডিঙ্গলি। ছবি: সংগৃহীত
ঘাতক রাজবিন্দর সিং ও হত্যার শিকার টোইয়া কর্ডিঙ্গলি। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে আলোচিত একটি হত্যা মামলায় সাবেক পুরুষ নার্স রাজবিন্দর সিংকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ৪১ বছর বয়সী এই ব্যক্তি ২০১৮ সালে টোইয়া কর্ডিঙ্গলি নামে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণীকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সোমবার জুরি বোর্ডের সদস্যরা তাঁকে দোষী ঘোষণা করলে আদালতে উপস্থিত মানুষ কান্নায় ভেঙে পড়েন।

বিবিসি জানিয়েছে, টোইয়া কর্ডিঙ্গলিকে অন্তত ২৬ বার ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়। সেদিন বিকেলে তিনি তাঁর কুকুর নিয়ে সমুদ্র সৈকতে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। পরদিন সমুদ্রসৈকতের বালিয়াড়িতে অর্ধেক ঢেকে থাকা অবস্থায় মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেন তাঁর বাবা। কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস ও পোর্ট ডগলাস—এই দুই জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রের মাঝখানে অবস্থিত ওই সৈকতটি।

মামলার শুনানিতে আদালত জানান, কর্ডিঙ্গলিকে বারবার ছুরিকাঘাত করা হয় এবং তাঁর দেহ অগভীর বালুকাময় গর্তে ফেলে রাখা হয়—যেখানে তার বেঁচে থাকার কোনো আশাই ছিল না।

অভিযুক্ত রাজবিন্দর সেই সময়টিতে কুইন্সল্যান্ডের ইনিসফেইল এলাকায় বসবাস করতেন, যা হত্যার স্থান থেকে প্রায় দুই ঘণ্টার দূরত্বে। তদন্ত শুরু হওয়ার পরপরই পুলিশের সন্দেহ তাঁর ওপর গিয়ে পড়ে। তবে সেই সময়ই তিনি হঠাৎ অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। ফেলে রেখে যান তাঁর স্ত্রী, তিন সন্তান এবং বাবা-মাকে।

চার বছর ভারতে লুকিয়ে থাকার পর অবশেষে তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অস্ট্রেলিয়ায়। গত মার্চে এই মামলাটির প্রথম বিচার প্রক্রিয়া জুরি বোর্ডের অমতজনিত কারণে স্থগিত হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার বিচার শেষে এবার তাঁকে দোষী ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসিকিউটররা মত দিয়েছেন, রাজবিন্দরের হঠাৎ দেশত্যাগই তাঁর অপরাধবোধের প্রমাণ। ফরেনসিক প্রমাণও তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা একটি কাঠির ওপর পাওয়া ডিএনএ নমুনা অন্য কারও নয়, বরং রাজবিন্দরের হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৩.৮ বিলিয়ন গুণ বেশি। এ ছাড়া কর্ডিঙ্গলির মোবাইল ফোনের গতিবিধি এবং সিংয়ের গাড়ির অবস্থান হত্যাকাণ্ডের সময়ের সঙ্গে মিলে যায়।

টোইয়া কর্ডিঙ্গলি স্থানীয় স্বাস্থ্য পণ্যের দোকানে কাজ করতেন এবং পশু উদ্ধারকারী সংগঠনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর কুইন্সল্যান্ড জুড়ে ব্যাপক শোক দেখা দেয়।

দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর রাজবিন্দর সিংকে আগামী মঙ্গলবার সাজা ঘোষণার জন্য আবার আদালতে হাজির করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পাকিস্তান আর গণতন্ত্র একসঙ্গে যায় না—ইমরান খানকে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় মুখপাত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রণধীর জয়সওয়াল। ফাইল ছবি
রণধীর জয়সওয়াল। ফাইল ছবি

পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল আজ সোমবার সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং পাকিস্তান একসঙ্গে যায় না।’ প্রতিবেশী দেশের গণতন্ত্রের অবস্থা, বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং সেখানে চলমান প্রতিবাদ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জয়সওয়াল এই মন্তব্য করেন।

ইমরান খানের বর্তমান অবস্থা ও সাম্প্রতিক সময়ে তাঁকে নিয়ে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরীর মন্তব্য, নানান আলোচনার জন্ম দিয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিককাঠামো দুর্বল হচ্ছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল বলেন, ভারত সেখানকার সব ঘটনার ওপর নিবিড়ভাবে নজর রাখছে। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।

জয়সওয়াল বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের প্রতিটি ঘটনার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখি। আপনি জানতে চেয়েছেন, পাকিস্তানের গণতন্ত্র দুর্বল হচ্ছে কি না। আসলে গণতন্ত্র আর পাকিস্তান একসঙ্গে যায় না। এ বিষয়ে আমরা যত কম কথা বলব, ততই ভালো।’

পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত সংঘর্ষ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে জয়সওয়াল আফগান বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে সংঘর্ষের খবর আমরা দেখেছি। এতে বহু আফগান বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আমরা নিরপরাধ আফগান জনগণের ওপর এই ধরনের হামলার নিন্দা জানাই।’ ভারত আফগানিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে তাদের সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি হয়। উভয় পক্ষের কর্মকর্তারা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেন, এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

গত শুক্রবার কারাবন্দী পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে ‘মানসিকভাবে অসুস্থ’ এবং ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি’ হিসেবে আখ্যা দেন পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী।

জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী দাবি করেন, ‘ইমরান খান সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রচার চালাচ্ছেন, বিদেশি শক্তির সঙ্গে সমন্বয় করছেন এবং নানা ভুল তথ্য ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করছেন।’ তাঁর ভাষ্য, পাকিস্তানের ‘অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করতেই’ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন তিনি। এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রাষ্ট্রের ওপরে কেউ নয়।’

ইমরান খানের নাম উল্লেখ না করে আইএসপিআর মহাপরিচালক বলেন, একজন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব—যাঁর নাম না নিলেও সবার জানা—নিজের অহংকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যে তিনি মনে করেন, ‘আমিই কিছু।’ এই বিভ্রান্তিকর মানসিকতার কারণেই তাঁর বয়ান ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিতে’ পরিণত হয়েছে।

এর আগে কারাগারে থাকা ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন। এরপরই পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে মারা গেছেন—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলড্রেসে বেরিয়ে যান একজন, গৃহকর্মী বলে সন্দেহ

দল বিলুপ্ত করে বিএনপিতে বাংলাদেশ এলডিপির সেলিম, প্রার্থী হবেন ধানের শীষের

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

‘নারীশাসিত পুরুষ’: সাহস থাকলে সামনে এসে কথা বল—আসিফকে ওমর সানীর চ্যালেঞ্জ

২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার গঠন করবে জামায়াত: শফিকুর রহমান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত