Ajker Patrika

পুতিনের বারবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা শান্তির বার্তা নাকি চতুর কৌশল

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ১৭
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

পুতিন কি আসলেই শান্তি চান? নাকি কেবলই লোক দেখানো?—রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে সম্প্রতি বারবারই উঠছে এই প্রশ্ন। কারণ, এখন ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতির ঘোষণা যেন ক্রেমলিনের চালাকিতে পরিণত হয়েছে! গতকাল সোমবার পুতিন আবারও তিন দিনের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেওয়ার পর এ নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা।

এর আগে, গত ২০ এপ্রিল খ্রিষ্টানদের ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে ৩০ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জানান, মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে এই ‘ইস্টার ট্রুস’–এর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এরপর গতকাল আবার ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এবারও মানবিক কারণে যুদ্ধ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান তিনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০ বছরপূর্তি উপলক্ষে আগামী ৮ থেকে ১০ মে যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।

এক বিবৃতিতে ক্রেমলিন জানিয়েছে, ৭২ ঘণ্টার জন্য সমস্ত সামরিক তৎপরতা বন্ধ থাকবে। মস্কো আশা করে, ইউক্রেনও একই পদক্ষেপ নেবে।

কিন্তু ইউক্রেন পাল্টা প্রশ্ন তুলেছে—রাশিয়া যদি সত্যিই শান্তি চায়, তাহলে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে না কেন? ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন, ‘রাশিয়া যদি শান্তিই চায়, তাহলে এখনই গোলাগুলি থামাতে হবে। ৮ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা কেন?’ এ সময় তিনি অন্তত ৩০ দিনের একটি পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান।

বিবিসির বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—ইউক্রেনে এমন ক্ষণস্থায়ী যুদ্ধবিরতি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট আসলে কী চাচ্ছেন? তাঁর পরিকল্পনা কি সত্যিই এই সংঘাতের অবসান? নাকি কেবলই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রভাবিত করতে চান তিনি?

সমালোচকেরা বলছেন, এটি নিছকই পিআর (প্রচারণা) কৌশল। তাঁদের ভাষ্য—এর আগের ইস্টার ট্রুসের সময়ও রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। নিজেদের ঘোষিত যুদ্ধবিরতি তারা নিজেরাই ভেঙেছে। ইউরোপীয়দের অভিযোগ—মূলত ৩০ ঘণ্টার ওই বিরতিকে ব্যবহার করে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে এমন বার্তা পাঠাতে চেয়েছে যে, ইউক্রেন নয়, রাশিয়াই এই যুদ্ধের একমাত্র শান্তিপ্রিয় পক্ষ।

অবশ্য আছে ভিন্নমতও, ইউক্রেনের সমালোচকেরা বলছেন যে কিয়েভই যুদ্ধবিরতিকে অবহেলা করেছে। তাদের দাবি—ইউক্রেন ও ইউরোপীয় মিত্ররা বরাবরই যুদ্ধ জিইয়ে রাখতে চায়।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘গত কয়েক দিন ইউক্রেনে রাশিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তার কোনো যুক্তি নেই। এসব দেখে মনে হচ্ছে, পুতিন আসলে যুদ্ধ থামাতে চান না। শুধু আমাকে ভুল বুঝিয়ে রাখতে চাচ্ছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কি ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞা, নাকি সেকেন্ডারি স্যাংশন দরকার?’

মূলত রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার ইঙ্গিত দিয়ে ট্রাম্পের এই পোস্টের পরই ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন পুতিন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, স্পষ্টতই ওয়াশিংটনকে দেখাতে এমন চতুর পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়া। ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে যে, রাশিয়া আসলে যুদ্ধ চায় না। তবে এই কৌশল এখন ব্যর্থ হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, মস্কোর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্য করেছে। তবে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) পরিষ্কার করে বলেছেন, বেসামরিক প্রাণহানি কমাতে তিনি প্রথমে একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি দেখতে চান। কিন্তু প্রেসিডেন্ট দুই দেশের নেতাদের প্রতি ক্রমশ হতাশ হয়ে পড়ছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

মার্কিন বিমানবাহিনীর রণতরি থেকে সাগরে পড়ে গেল ৮০০ কোটি টাকার যুদ্ধবিমান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত