Ajker Patrika

কর্মীদের পূর্ণকালীন অফিসে ফেরাতে বেতন বাড়াচ্ছে মার্কিন কোম্পানিগুলো

আপডেট : ২৬ মার্চ ২০২৪, ০৯: ২২
কর্মীদের পূর্ণকালীন অফিসে ফেরাতে বেতন বাড়াচ্ছে মার্কিন কোম্পানিগুলো

কোভিডের ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেনি অনেক প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে কর্মীদের মধ্যে হোম অফিস ছেড়ে পূর্ণকালীন অফিসে অবস্থানে অনীহা এখনো ব্যাপকভাবেই রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোম্পানিগুলো কর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

পশ্চিমে এখনো অনেক চাকরি হাইব্রিড—রিমোট অফিস করছেন অনেকে, কেউ কেউ মাঝেমধ্যে অফিসে আসেন। অনেক কোম্পানি অবশ্য কর্মীদের পূর্ণকালীন অফিস করতে বাধ্য করছে। বোয়িং, ইউপিএস, জেপিমরগান চেজের মতো বৃহৎ করপোরেশনগুলো সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিসে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক করেছে। 

কিন্তু এ ধরনের কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেকে এখন পূর্ণকালীন অফিস করতে কর্মীদের বাড়তি বেতন দেওয়ার কথা বলছে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিডকাল থেকে শুরু করে কর্মঘণ্টায় এবং অফিসে উপস্থিতির ক্ষেত্রে নমনীয় অবস্থান নিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দেখা গেছে, বেতনের প্রায় ২০ শতাংশ সমান কর্মদিবস এখনো বাড়ি থেকে কাজ করছেন কর্মীরা। 

ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান জিপরিক্রুটারের প্রধান অর্থনীতিবিদ জুলিয়া পোলাক বলেন, ‘যে নিয়োগকর্তারা (অফিসে অবস্থান নিয়ে) নমনীয়তার বিষয়ে প্রতিযোগিতা করতে পারে না, তাদের বেতনের ক্ষেত্রে আরও আক্রমণাত্মক প্রতিযোগিতা করতে হবে।’ 

এখন দেখা যাচ্ছে, ফলাফল সেটিই হয়েছে; পূর্ণকালীন অফিস করাতে কর্মীদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে। 

জিপরিক্রুটারের ডেটা অনুসারে, মার্কিন কোম্পানিগুলো গত মার্চ নাগাদ অফিসে পূর্ণকালীন ব্যক্তিগত উপস্থিতির জন্য গড়ে বাৎসরিক ৮২ হাজার ৩৭ ডলার অফার করছে। এটি ২০২৩-এর তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি, যেখানে বিভিন্ন খাতে হাইব্রিড কর্মপরিবেশের জন্য গড়ে ৫৯ হাজার ৯৯২ ডলার এবং সম্পূর্ণ হোম অফিসের জন্য ৭৫ হাজার ৩২৭ ডলার দেওয়া হয়। এখন বেতন বৃদ্ধির ফলে কর্মীরা প্রাক্‌-মহামারি সময়কার অফিসের সময়সূচিতে ফিরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। 

মহামারির সময় অফিসে উপস্থিতি ও কর্মঘণ্টার ক্ষেত্রে যে নমনীয়তা দেখানো হয়েছিল, তাতেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন কর্মীরা। তাঁরা আর এই আরাম ছাড়তে চাইছেন না। ফলে তাঁদের অফিসে ফেরাতে বেশি চাপ দিলে বেশি বেতন দিতে হবে—পরিস্থিতি এখন এমন। 

জিপরিক্রুটারের ডেটায় দেখা যায়, ২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কর্মী সম্পূর্ণ হোম অফিস থেকে পূর্ণকালীন অফিসে ফিরে এসেছেন, তাঁদের বেতন ২৯ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। 

তবে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের চিত্র যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাজ্যে ১৫ হাজার নিয়োগকর্তা এবং কর্মচারীদের একটি জরিপে দেখা যায়, ৪৩ শতাংশ কর্মী পূর্ণকালীন অফিসে ফিরে এসেছেন। এর মানে হলো, ইউরোপে বেতন বাড়ানোর পরও পূর্ণকালীন অফিসে ফিরে আসার প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দুর্বল। 

তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক বারবারা পেট্রোঙ্গোলো বলছেন, এই বেতন বৈষম্যের একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি রয়েছে: এটি শ্রমবাজারে বৈষম্যকে শক্তিশালী করতে পারে। যেসব কর্মী ঘরে অন্যদের যত্ন নেওয়ার দায়িত্বও পালন করেন, তাঁরা হাইব্রিড বা হোম অফিস পছন্দ করেন, বিশেষ করে নারীরা। তাই, যদি সর্বোচ্চ বেতনের চাকরিগুলোতে কম নমনীয়তা দেখানো হয়, তাহলে কর্মশক্তির কিছু অংশ উচ্চ বেতনের সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি বসরা সত্যিই তাঁদের কর্মীদের অফিসে ফেরাতে চান, তাহলে বর্তমান প্রণোদনা কিছু সময়ের জন্য থাকতে পারে। তবে নমনীয় কাজের ধরনগুলো অদৃশ্য হয়ে যাবে এমন কোনো লক্ষণ নেই। যেমন—মার্চের ডেটায় দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৩ শতাংশ পেশাদার এবং ব্যবসা-সেবা প্রতিষ্ঠান নিয়োগের সময় হাইব্রিড বা দূরবর্তী কাজের সুযোগ সংবলিত বিজ্ঞাপন দেয়। ফলে হোম অফিস করতে চাওয়া দক্ষ কর্মীদের হাতে এখনো বিকল্প রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত