Ajker Patrika

মাস্কের সঙ্গে ঝগড়া হলেও স্পেসএক্সকে ছাড়তে পারবেন না ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি: সিএনএন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইলন মাস্ক। ছবি: সিএনএন

ইলন মাস্কের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি চরমে পৌঁছালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাস্ক মালিকানাধীন মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের সঙ্গে সব সরকারি চুক্তি বাতিলের হুমকি দেন। তবে, বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনায় উঠে এসেছে এই চুক্তিগুলো বাতিল করা কার্যত অসম্ভব, এবং তা করলে দেশের মহাকাশ কার্যক্রম ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় মারাত্মক বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।

‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্পেসএক্সের সঙ্গে যুক্ত সরকারি চুক্তিগুলোর পর্যালোচনায় নিয়োজিত ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনে করছেন—এই প্রতিষ্ঠান ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এমন কোনো বিকল্প নেই, যারা একই দক্ষতা ও নির্ভরযোগ্যতায় মহাকাশে যন্ত্রপাতি প্রেরণ করতে পারে। ফলে, চুক্তিগুলো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কয়েকটি নির্দিষ্ট চুক্তি নিয়ে আরও যাচাই-বাছাই হতে পারে, তবে এখন পর্যন্ত একটিও বাতিল করা হয়নি। কারণ, স্পেসএক্সই বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মহাকাশবিষয়ক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালে বিশ্বের মোট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ৮৩ শতাংশই সম্পন্ন করেছে মাস্কের এই কোম্পানি।

মার্কিন সরকারের সঙ্গে স্পেসএক্সের সহযোগিতা বহুদিনের। এর প্রযুক্তি বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে দেশটির সামরিক বাহিনীর যোগাযোগব্যবস্থা বজায় রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকার থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পেয়েছে, এবং আরও ১৩ বিলিয়ন ডলার প্রদানের চুক্তি রয়েছে।

তবে ইলন মাস্ক একাই এই খাতে সক্রিয় নন। গত দফার ট্রাম্প প্রশাসনের বরাদ্দে সাতটি চুক্তি পেয়েছিল জেফ বেজোস মালিকানাধীন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ব্লু অরিজিন। তবে স্পেসএক্স পেয়েছে ২৮টি, যা ব্লু অরিজিনের প্রায় ৪ গুণ। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি মাস্কের প্রতিষ্ঠানের নির্ভরযোগ্যতা ও সক্ষমতারই প্রমাণ।

বিশিষ্ট প্রতিরক্ষা ও মহাকাশ বিশ্লেষক টড হ্যারিসন বলেন, ‘স্পেসএক্সের কোনো বিকল্প নেই। অন্য কোনো উৎক্ষেপণ ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের এই সক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়।’

স্পেসএক্স ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র সরকার মাস্কের আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ। চলতি সপ্তাহেই পেন্টাগন ঘোষণা করেছে, যুদ্ধক্ষেত্রে এআই ব্যবহারের প্রযুক্তি উন্নয়নের লক্ষ্যে মাস্কের মালিকানাধীন এক্সএআই নামের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোম্পানির সঙ্গে ২০০ মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করেছে তারা।

এই ঘোষণার আগে সম্প্রতি বিতর্ক সৃষ্টি করে এক্সএআইয়ের তৈরি চ্যাটবট ‘গ্রোক’। সামাজিক মাধ্যম এক্সে নিজেকে ‘মেকাহিটলার’ হিসেবে বর্ণনা করেছিল।

সব মিলিয়ে, ইলন মাস্ক তাঁর বিভিন্ন কোম্পানির মাধ্যমে মার্কিন সরকারের সঙ্গে ৩৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের চুক্তিতে আবদ্ধ রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার গেছে টেসলার নামে, যার অধিকাংশ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত