Ajker Patrika

উল্টা গন্ডারে নোবেল জয়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
Thumbnail image

‘হাসতে নাকি জানে না কেউ কে বলেছে ভাই?/এই শোন না কত হাসির খবর বলে যাই।’ কবি রোকনুজ্জামান খানের ‘হাসি’ কবিতার মতোই প্রতিবছর অদ্ভুত ১০টি হাসির গল্প শোনে বিশ্ববাসী। আর সেই হাসির গল্পের কারিগরদের দেওয়া হয় ‘নোবেল পুরস্কার’! ঠিক নোবেল নয়, আইজি নোবেল। কখনো কখনো এ তালিকায় চলে আসেন বিশ্বনেতাদের কেউ কেউ। চলতি বছর আইজি নোবেলজয়ী হাসির গল্প পাওয়া গেছে সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে।

মাটি থেকে বেশ ওপরে হাওয়ায় দোল খাচ্ছে বেশ বড় গন্ডার। একটি নয়, ১২টি। পুরো ১০ মিনিট বাতাসে ঝুলে ছিল এগুলো। প্রথম দেখায় মনে হবে, প্রাণীগুলোকে ফাঁসিতে ঝোলানো হচ্ছে। সেটি আবার হেলিকপ্টারে দড়ি বেঁধে! নামিবিয়ায় উদ্ভট এই কাজ করে ‘আইজি নোবেল’ পুরস্কার জিতেছেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্য প্রাণী চিকিৎসক রবিন রেডক্লিফ ও তাঁর সহকর্মীরা।

প্রতিবছর উদ্ভট বিভিন্ন কাজের জন্য ১০টি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দিয়ে থাকে রসালো বিজ্ঞান ম্যাগাজিন ‘অ্যানালস অব ইম্প্রুভেবল রিসার্চ’। ম্যাগাজিনের অর্থ বাংলা করলে দাঁড়াবে ‘অসম্ভব গবেষণার ইতিহাস’। অসম্ভবই বটে! বিশ্বের অনেক রথী-মহারথীও এ পুরস্কার জিতেছেন। এ তালিকায় আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। গত বছর করোনা নিয়ে তাঁর কার্যক্রম এবং মন্তব্যের জন্য ‘চিকিৎসা’ ক্যাটাগরিতে ব্যঙ্গাত্মক আইজি নোবেল পেয়েছেন এই নেতা।

আইজি নোবেলজয়ীদের গল্প বলতে প্রতিবছর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় এক অনুষ্ঠান। হলরুম অট্টহাসিতে ভরে যায়। পুরস্কার নিতে যাঁরা উপস্থিত হন, তাঁদের একদিক থেকে ভাগ্যবানই বলা যায়। কেননা, সত্যিকারের নোবেলজয়ীদের আনা হয় পুরস্কার প্রদানের জন্য। তবে চলতি বছর করোনাভাইরাসের কারণে অনলাইনেই হাসিতে ফেটে পড়েন অধীর আগ্রহে থাকা দর্শকরা।

গন্ডারের ঘটনা এবার ‘ট্রান্সপোর্টেশন’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। পুরস্কারজয়ী রবিন বলেন, ‘বাসস্থান সংকটের কারণে আফ্রিকায় প্রাণী সরিয়ে নেওয়া এখন স্বাভাবিক ঘটনা। অনেক দেশেই হেলিকপ্টারে করে এদের নিয়ে যাওয়া হয়। নামিবিয়া সরকারও এ পদক্ষেপ নিতে চেয়েছিল। তাই আমাদের বলা হয়, আগে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু করতে। মূলত এভাবে ঝুলিয়ে রাখলে গন্ডারের স্বাস্থ্যগত কোনো সমস্যা হয় কি না, সেটি জানাই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য। এতে আমাদের সঙ্গ দিয়েছে দেশটির পরিবেশ, বন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।’

পুরস্কারজয়ীদের যে ট্রফি দেওয়া হয়, সেটিও বেশ হাস্যকর। তাঁদের এমন একটি ট্রফি দেওয়া হয়, যেটি পিডিএফ আকারে প্রিন্টআউট করে নিতে হয়। অর্থাৎ একটি কাগজের মতো বস্তু। এর সঙ্গে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের জিম্বাবুয়ে নোট দেওয়া হয়। যাক বাবা, কিছু অর্থ পাওয়া গেল তাহলে। এমন আরও উদ্ভট কাজ করা যাবে এখন। কিন্তু না, এ নোট আসলে জালনোট!

বাকি ৯টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কারজয়ীদের গল্পগুলোও বেশ মজাদার। কয়েকটি এমন: ফুটপাতে পড়ে থাকা চুইংগামের ব্যাকটেরিয়ার জেনেটিক বিশ্লেষণের জন্য বাস্তুতন্ত্রে লাইলা সাতারি; সিনেমা হলে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বুঝতে বাতাস পর্যবেক্ষণের জন্য রসায়নে জর্গ উইকার; কোনো দেশের রাজনীতিবিদরা কত মোটা, সেটি সে দেশের দুর্নীতির নির্দেশক–এমন বিশ্লেষণের জন্য অর্থনীতিতে ব্লাভাসকি এবং ‘শারীরিক সম্পর্কের সময় যে শ্বাসপ্রশ্বাস হয়, সেটি শ্বাসের সমস্যার ওষুধের মতোই কাজ করে’–এই বিশ্লেষণের জন্য মেডিসিন বিভাগে অলকে কেম বুলুট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত