Ajker Patrika

চীনা টিকায় নির্ভরশীল দেশগুলোয় সংক্রমণ বাড়ছে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ জুন ২০২১, ১৩: ২৬
Thumbnail image

ঢাকা: চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি সিনোফার্মের কোভিড টিকার ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোয় করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে এই টিকা পুরোপুরি কার্যকর না হওয়ায় করোনার বিস্তার বাড়ছে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে ওয়ার্ল্ড ইন ডেটা নামক একটি ডেটা-ট্র্যাকিং প্রকল্পের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, মঙ্গোলিয়া, পূর্ব আফ্রিকার দেশ সেশেলস, চিলি এবং বাহরাইনের মতো দেশগুলোয় ৫০ থেকে ৬৮ শতাংশ নাগরিককে চীনা টিকা দেওয়া হয়েছে। অথচ গত ১০ সপ্তাহের করোনা প্রাদুর্ভাবের শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে এই দেশগুলোও রয়েছে। টিকাগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে সুরক্ষা দিতে পারলে পরিস্থিতি এমন হতো না বলে মন্তব্য করেছেন হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ জিন ডংগিয়ান। পরিস্থিতির প্রতিকারে চীনাদের দায়িত্ব রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিশ্বের ৯০টির বেশি দেশে চীনা টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গোলিয়া দ্রুত টিকা প্রয়োগ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে; মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ লোককে টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও গত রোববার সেখানে ২ হাজার ৪০০ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, যা এক মাস আগের তুলনায় চার গুণ বেশি।

চীনা টিকা সিনোফার্মের ওপর নির্ভরশীল সেশেলসে করোনা শনাক্তের হার প্রতি ১০ লাখে ৭১৬ জন। ফাইজারের টিকা ব্যবহারকারী ইসরায়েলের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৪ দশমিক ৯৯। চীনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করা সত্ত্বেও সম্প্রতি ৩৫০ জনের বেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা আক্রান্তের খবর দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের ঝুঁকি প্রশমনকারী দল।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য প্রকাশের আগেই বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সিনোফার্মের টিকার অনুমোদন দেয়। এ দুই দেশেই টিকা গ্রহণকারীরা ব্যাপকভাবে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস।

এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা উল্লিখিত দেশগুলোর সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাবের সঙ্গে টিকার কোনো যোগসূত্র দেখছে না। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে উদ্ধৃত করে বলছে, নির্দিষ্ট কিছু দেশে প্রাদুর্ভাব রোধ করার মতো পর্যাপ্তসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া হয়নি বলে সংক্রমণ বাড়ছে। এসব দেশে বিধিনিষেধ অব্যাহত রাখা দরকার বলেও উল্লেখ করা হয়। চীনের টিকা ব্যবহারকারী কিছু দেশ এটিকে নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং মহামারি প্রতিরোধে ভালো ভূমিকা রাখছে বলেও উল্লেখ করেছে মন্ত্রণালয়।

অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিন্ডার্স ইউনিভার্সিটির কলেজ অব মেডিসিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথের অধ্যাপক নিকোলাই পেত্রোভস্কি বলেছেন, সিনোফার্মের টিকা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ন্যূনতম প্রভাব ফেলেছিল। এ ক্ষেত্রে একটি বড় ঝুঁকি হলো টিকা নেওয়া লোকদের খুব কম লক্ষণ থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে অন্যের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। এসব দেশের নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রসঙ্গত, ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্নার টিকার কার্যকারিতার হার ৯০ শতাংশের বেশি। চীনের সিনোফার্ম টিকার কার্যকারিতার হার ৭৮ দশমিক ১ এবং সিনোভ্যাকের কার্যকারিতা ৫১ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত