Ajker Patrika

ব্ল্যাক ডেথের উৎসস্থল খুঁজে পাওয়ার দাবি গবেষকদের

ব্ল্যাক ডেথের উৎসস্থল খুঁজে পাওয়ার দাবি গবেষকদের

প্রায় ৭০০ বছর আগের রহস্যের সমাধানের দাবি করছেন গবেষকেরা। ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে পরিচিত বুবোনিক প্লেগ রোগের উৎসস্থল খুঁজে পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন তাঁরা। ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায় রোগটিতে কোটি কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

১৪ শতকের মাঝামাঝি সময়ের ভয়াবহ এই মহামারি মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্য বিপর্যয় বলে মনে করা হয়। বছরের পর বছর গবেষণা চালিয়েও বিজ্ঞানীরা বুবোনিক প্লেগের উৎপত্তি কোথায় তা জানাতে পারছিলেন না। তবে এবার ইঙ্গিত মিলেছে, মধ্য এশিয়ার কিরগিজস্তানে ১৩৩০ সালের দিকে এই রোগের উদ্ভব।

স্কটল্যান্ডের স্টারলিং ইউনিভার্সিটি, জার্মানির ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ইভোল্যুশনারি অ্যানথ্রোপলজি এবং ইউনিভার্সিটি অব তুবিনজেনের একদল গবেষক কিরগিজস্তানের উত্তরাঞ্চলে ইসিক কুল লেকের কাছের একটি কবরস্থান থেকে সংগ্রহ করা দেহাবশেষের ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। ১৩৩৮ এবং ১৩৩৯ সালে সেখানে দাফনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায় লক্ষ্য করার পর গবেষণার জন্য এই এলাকাটি বেছে নেন গবেষকেরা।

ইঁদুরসহ কিছু প্রাণী এবং সেগুলোর বাহকে প্লেগ ব্যাকটেরিয়া ‘ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস’ বাস করেইউনিভার্সিটি অব তুবিনজেনের গবেষক ড. মারিয়া স্পাইরো জানান, গবেষক দলটি সাতটি দেহাবশেষের ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষকেরা এসব দেহাবশেষ থেকে দাঁত নিয়ে গবেষণা করেছেন। গবেষক দলটি তিনটি দেহাবশেষের ডিএনএতে প্লেগ ব্যাকটেরিয়া ‘ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস’ খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন।

স্টারলিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ড. ফিলিপ স্লাভিন আবিষ্কারটি সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের গবেষণা কেবল বুবোনিক প্লেগ রোগের উৎসস্থল খুঁজে পায়নি, বরং ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর মধ্যে একটির অবসান ঘটিয়েছে।’

বুবোনিক প্লেগ একটি প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ যা ইয়েরসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্টি হয়। প্রধানত ইঁদুরসহ কিছু প্রাণী এবং সেগুলোর বাহকে এই ব্যাকটেরিয়া বাস করে। ঐতিহাসিকভাবে এটিকে ব্ল্যাক ডেথ নামেও ডাকা হতো। এতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন হাত ও পায়ের আঙুল কালো হয়ে যায়। আক্রান্ত রোগীর সময় মতো চিকিৎসা না করানো হলে ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে। তাই এই রোগকে ব্ল্যাক ডেথ বলা হয়। চতুর্দশ শতাব্দীতে এই বুবোনিক প্লেগের প্রকোপে এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকায় কয়েক কোটি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত