Ajker Patrika

যেভাবে শনাক্ত হয়েছিল ওমিক্রন

আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ৩২
যেভাবে শনাক্ত হয়েছিল ওমিক্রন

নভেম্বরের শুরুতে দক্ষিণ আফ্রিকার গৌতেং প্রদেশের ল্যাবে করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়ে চমকে যান সেখানকার বিজ্ঞানীরা। তাঁরা ভাইরাসটির জিন পাচ্ছিলেন না, যেটি স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে। এই স্পাইক প্রোটিনের মাধ্যমে করোনাভাইরাস মানুষের কোষে প্রবেশ করে ও ছড়িয়ে যায়।

এই সময়ে আফ্রিকার ওই প্রদেশের চিকিৎসকেরা হঠাৎ করে দুর্বলতা ও মাথাব্যথা নিয়ে আসা রোগীদের ভিড় দেখতে পান। ডেলটা ধরনের সংক্রমণে তৃতীয় ঢেউ পার করার পর কিছুটা নিয়ন্ত্রিত ছিল আফ্রিকার করোনা সংক্রমণ। তবে কয়েক সপ্তাহ যেতে না যেতেই নতুন করোনা রোগী আসতে থাকে।

দক্ষিণ আফ্রিকার মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট গ্লেন্ডা গ্রে বলেন, ল্যানসেট ল্যাবরেটরিজ মালিকানাধীন এক ল্যাবের বিজ্ঞানীরা কয়েকটি নমুনায় ব্যতিক্রম দেখতে পান। তাঁরাই প্রথম সতর্ক করেন।

গত সোমবার একটি সাক্ষাৎকারে গ্লেন্ডা গ্রে বলেন, তাঁরা জানতেন না কী সমস্যা ছিল। তাই তাঁরা ভাইরোলজিস্টদের সতর্ক করেছিলেন। 

দক্ষিণ আফ্রিকার সংবাদমাধ্যম নিউজ২৪-এর খবরে বলা হয়, গত ৪ নভেম্বর বিকেলে ল্যানসেট ল্যাবরেটরির জুনিয়র বিজ্ঞানী অ্যালিসিয়া ভার্মিউলেন একটি করোনার নমুনায় ব্যতিক্রম দেখতে পেয়ে ঊর্ধ্বতনদের জানান। পরবর্তী কয়েক সপ্তাহে এই ধরনের নমুনা আরও দেখা যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যালিসন গ্লাস বলেন, এই ধরনের নমুনা ওই সময় অনেক আসতে থাকে। ২২ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেবল ডিজিজেস এবং ল্যানসেট এক সঙ্গে ওই ধরনটির নাম দেয় বি.১.১.৫২৯। করোনার এস-জিনটি শনাক্ত করা যায়নি কারণ, এটি পরিবর্তিত হয়েছিল। 

বতসোয়ানাতেও নভেম্বরের শুরুতে বিজ্ঞানীরাও একই ধরনের ব্যতিক্রম দেখতে পান করোনার নমুনায়। তাঁরা ভ্রমণকারীদের নমুনায় ওই ব্যতিক্রম দেখতে পান, যারা হংকং এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছিল। এ-সংক্রান্ত তথ্য ডেটা গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি) প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। সেখান থেকেই দ্রুত তথ্যটি ছড়িয়ে যায়। ব্রিটিশ গণমাধ্যম ২৪ নভেম্বর বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করে।

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নিকোলাস ক্রিস্প বলেন, তাঁকে ২৪ নভেম্বর প্রথমবারের মতো ধরনটি সম্পর্কে জানানো হয়। পরদিন দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়। 

গত সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার নতুন ধরনের নাম দেয় ‘ওমিক্রন’। নতুন এই ধরনকে ‘উদ্বেগজনক’ বলেও উল্লেখ করে তারা। 

গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত বিশ্বের ১৫টি দেশে করোনার ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এর পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শনাক্ত হচ্ছে করোনার এই নতুন ধরন। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ আফ্রিকার ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা ভ্রমণ সীমাবদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডসের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত হওয়ার আগেই ইউরোপে পাওয়া যায় এই ধরনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত