Ajker Patrika

চকলেটের দাম হঠাৎ এত বেড়ে যাওয়ার নেপথ্যে

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ২০: ২২
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোকোর দাম সর্বোচ্চ হওয়ার পর কিছুটা অবশ্য কমে এসেছে। তারপরও ভোক্তাদের এখনো ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামেই চকলেট কিনতে হচ্ছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোকোর দাম সর্বোচ্চ হওয়ার পর কিছুটা অবশ্য কমে এসেছে। তারপরও ভোক্তাদের এখনো ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামেই চকলেট কিনতে হচ্ছে।

চকলেটপ্রেমীদের জন্য ২০২৫ সাল নিয়ে এসেছে এক দুঃসংবাদ। চকলেটের প্রধান উপাদান কোকো’র ঘাটতি ও দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে এবার চকলেট বার, ইস্টার এগ, এমনকি কোকো পাউডারের দামও আকাশছোঁয়া। গত এক বছরে কোকোর দাম প্রায় ৩০০ শতাংশ বেড়েছে।

ফলস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রে এই বছরের ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে চকলেটের খুচরা দাম গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি ছিল। আর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে একটি কিং-সাইজ রিজ’স হার্টস চকলেট বারের দাম ছিল আগের বছরের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি।

যুক্তরাজ্যেও একই পরিস্থিতি। টেস্কো সুপারমার্কেটে হোয়াইট চকলেট টুইক্স ইস্টার এগের দাম ৫ পাউন্ড থেকে বেড়ে ৬ পাউন্ড হয়েছে। অথচ এটির ওজন কমে ৩১৬ গ্রাম থেকে হয়েছে ২৫৮ গ্রাম। এর ফলে প্রতি ইউনিটে দাম বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে কোকোর দাম সর্বোচ্চ হওয়ার পর কিছুটা অবশ্য কমে এসেছে। তারপরও ভোক্তাদের এখনো ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামেই চকলেট কিনতে হচ্ছে।

সোমবার আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে—চকলেটের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ চরম আবহাওয়ার প্রভাব, গাছের বার্ধক্য ও রোগবালাই।

চকলেট তৈরির মূল উপাদান কোকো। বিশ্বের অধিকাংশ কোকো আসে পশ্চিম আফ্রিকা থেকে। বিশেষ করে, ঘানা ও আইভরি কোস্ট থেকে। ২০২৪ সালে অতিবৃষ্টি ও খরার কারণে এই অঞ্চলের ফসল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু ঘানা ও আইভরি কোস্ট নয়, নাইজেরিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতেও কোকো উৎপাদন কমেছে। ফলে বাজারে প্রায় ৫ লাখ টন কোকো ঘাটতি তৈরি হয়। বিশ্লেষক কারস্টেন ফ্রিটসচের মতে, এ বছরও আগের মতো শুষ্ক আবহাওয়া ফসলের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

এই অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়েছে উৎপাদনকারীদের ওপরও। সুইস চকলেট জায়ান্ট ‘ব্যারি ক্যালবট’ ২০২৫ সালের ১১ এপ্রিল তাদের বার্ষিক বিক্রির পূর্বাভাস হ্রাস করেছে। এর ফলে সেদিনই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ২০ শতাংশ পড়ে যায়। এটি কোম্পানিটির ইতিহাসে একদিনে সবচেয়ে বড় পতনের ঘটনা।

চকলেটের দাম বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, ২০২৩ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ বৃষ্টি, আর ২০২৪ সালে চরম খরা। ধারণা করা হচ্ছে, এল নিনোর আবহাওয়া প্যাটার্ন এর জন্য দায়ী। যদিও বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভবিষ্যতে লা নিনো আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যা সাময়িকভাবে উৎপাদন বাড়াতে পারে।

এ ছাড়া বহু কোকো গাছ পুরোনো হয়ে গেছে। আর সেই তুলনায় নতুন গাছ রোপণ হয়নি। কৃষি খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ না হওয়ায় ফলন কমে যাচ্ছে। আবার পশ্চিম আফ্রিকার নতুন বন সংরক্ষণ আইনের ফলে কৃষকেরা নতুন জমিতে কোকো চাষ করতে পারছেন না, ফলে সরবরাহ বাড়ছে না।

এদিকে আন্তর্জাতিক কোকো সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ মৌসুমে সম্ভবত চার বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো ১ লাখ ৪২ হাজার টন অতিরিক্ত কোকো উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তবে এটি কেবল সাময়িক স্বস্তি দিতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত