Ajker Patrika

স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ওষুধ সেবনে বাড়ে বিষণ্নতা: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
এই ওষুধ বিষণ্নতা ও আত্মহত্যার চিন্তার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। ছবি: ন্যাচারডটকম
এই ওষুধ বিষণ্নতা ও আত্মহত্যার চিন্তার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। ছবি: ন্যাচারডটকম

টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্তদের এবং স্থূলতা সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন তাদের যেসব ওষুধ গ্রহণ করতে হয়, সে ওষুধগুলো বিষণ্নতা বাড়ার কারণ। এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষকেরা বলছেন, ওজন কমানো এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের ওষুধ হিসেবে পরিচিত—ওজেম্পিক ও ওয়েগোভির প্রভাবে মস্তিষ্কে পরিবর্তন আসে, যার কারণে বিষণ্নতার ঝুঁকি তৈরি হয়। এই ওষুধগুলো হরমোনে প্রভাব ফেলে, রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষুধা দমন করে। তবে, গবেষণায় দেখা গেছে, এই ওষুধগুলো মস্তিষ্কের সেই অংশগুলোর ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে, যে অংশগুলো আনন্দ ও পুরস্কারের অনুভূতির সঙ্গে যুক্ত ডোপামিন রাসায়নিকের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।

‘কারেন্ট নিউরোফার্মাকোলজি’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, এসব ওষুধ ডোপামিনের মাত্রা ব্যাহত করতে পারে, যার ফলে যাদের ডোপামিন কার্যক্রম কম (হাইপোডোপামিনার্জিয়া), তাদের মধ্যে বিষণ্নতা ও আত্মহত্যার চিন্তার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। যদিও এই ওষুধগুলো স্থূলতা ও ডায়াবেটিস চিকিৎসায় কার্যকর হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, তবে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এর সম্ভাব্য প্রভাব চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল, ইরান এবং ইসরায়েলের গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, এই ওষুধগুলো যাদের মস্তিষ্কে অতিরিক্ত ডোপামিন কার্যক্রম (হাইপারডোপামিনার্জিয়া) রয়েছে, তাদের জন্য উপকারী হলেও যাদের ডোপামিনের কার্যক্রম কম, তাদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

গবেষকেরা আরও আবিষ্কার করেছেন, এসব ওষুধের প্রভাব কিছু জিনের ওপর পড়ে, যেগুলো মেজাজ নিয়ন্ত্রণ এবং পুরস্কারের অনুভূতির সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘ মেয়াদে এই ওষুধের ব্যবহার ডোপামিন সিস্টেমের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে বলে গবেষণায় সতর্ক করা হয়েছে। আর এ কারণে বিষণ্নতা, হতাশা, মেজাজের পরিবর্তন এবং আত্মহত্যার চিন্তা বাড়তে পারে।

গবেষণাটির জ্যেষ্ঠ লেখক ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি হেলথ সায়েন্সেস এবং অ্যারিয়েল ইউনিভার্সিটির গবেষণা অধ্যাপক ড. কেনেথ ব্লাম বলেন, “এসব ওষুধের ইতিবাচক প্রভাব নিয়ে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছে, তার মাঝে এই গবেষণার সতর্কবার্তা অবহেলা করা উচিত নয়। আমরা চিকিৎসক সমাজকে অনুরোধ করছি, তারা যেন সতর্কতার সঙ্গে এই ওষুধ ব্যবহার করেন, যাতে আবার ‘ওজন কমাতে গিয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে’—এমন করুণ পরিস্থিতি তৈরি না হয়। ”

সহলেখক ও আসক্তি মনোরোগবিদ্যা গবেষক ড. মার্ক এস গোল্ড বলেন, ‘এই গবেষণাপত্রটি এ ধরনের ওষুধের ব্যাপক ব্যবহারের বিষয়ে নতুন করে ভাবার গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হাজির করেছে। এফডিএ (খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন) ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার উচিত আমাদের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এসব ওষুধের লেবেলিং ও পর্যবেক্ষণ কঠোরভাবে পুনর্বিবেচনা করা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত