স্ক্যাবিস বা চুলকানি রোগের প্রতিকার ও চিকিৎসা

লে. কর্নেল মো. মফিজুল ইসলাম খান শামীম
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

স্ক্যাবিস হলো ক্ষুদ্র অণুজীবের সংক্রমণে তৈরি হওয়া ছোঁয়াচে চর্মরোগ। এ রোগে আক্রান্ত রোগীর ত্বকে প্রচণ্ড চুলকানি হয়। পরে লাল ফুসকুড়ি ও পানি ফুসকুড়ি দেখা যায়। সাধারণত হাতের আঙুলের ফাঁকে, পুরুষাঙ্গে, অণ্ডকোষে, তলপেটে ও থাইয়ের ওপরের অংশে এ রোগ বেশি দেখা যায়। চুলকানি এত বেশি হয় যে অনেক সময় ত্বকে ক্ষত তৈরি হয়। এ রোগের বৈশিষ্ট্য হলো, রাতে বেশি চুলকায় এবং এতে দ্রুততম সময়ে পরিবারের সবাই আক্রান্ত হয়।

স্ক্যাবিসের দেশব্যাপী প্রাদুর্ভাব

হাসপাতালগুলোর চর্ম বহির্বিভাগে যত রোগী চিকিৎসা নিতে আসে, তাদের ১০ থেকে ১৫ শতাংশ স্ক্যাবিসে আক্রান্ত। এর প্রাদুর্ভাব কয়েক মাস ধরে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ছোঁয়াচে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর আক্রান্ত ব্যক্তিকে অন্যদের থেকে আলাদা রাখতে হবে এবং দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে। স্ক্যাবিস ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়, অপুষ্টিতে ভোগা জনগোষ্ঠী এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে তুলনামূলক বেশি দেখা যায়।

রোগের প্রতিকার

  • ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।
  • পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
  • আক্রান্ত রোগী থেকে অন্যদের আলাদা থাকতে হবে।
  • দ্রুততম সময়ে রোগীকে চর্ম বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে এবং সঠিক নিয়মে চিকিৎসা নিতে হবে।
  • পরিবারের সবাইকে একই সময়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসার সঠিক ব্যবহারবিধি

  • পারমেথ্রিন ক্রিম রাতে ঘুমানোর আগে গলা থেকে পায়ের তালু পর্যন্ত খুব ভালোভাবে মাখতে হবে।
  • ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ওষুধ গায়ে থাকতে হবে। সে সময় পানি ধরা, হাত-পা ও শরীর ধোয়া যাবে না।
  • সকালে কুসুম গরম পানিতে গোসল করে পরিধেয় কাপড়, বিছানার চাদর ও বালিশের কভার ধুয়ে ইস্তিরি করতে হবে।
  • প্রয়োজনে এক সপ্তাহ পর একই নিয়মে আবার পারমেথ্রিন ক্রিম লাগাতে হবে।
  • সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।
  • চুলকানির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হবে।
  • যদি রোগী ক্রাস্টেড স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে পারমেথ্রিন ক্রিম পরপর ৭ দিন রাতে পুরো শরীরে লাগাতে হবে। একই সঙ্গে আইভারমেকটিন-জাতীয় বড়ি প্রথম, দ্বিতীয়, সপ্তম, অষ্টম, নবম, ১৫তম, ১৬তম, ২২তম ও ২৯তম দিনে একটি করে খেতে হবে।

পরামর্শ

  • অন্যদের থেকে যেন পুনরায় সংক্রমণ ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
  • রোগীর যদি অ্যাটোপিক অ্যালার্জি থাকে, তাহলে ওই রোগের চিকিৎসা নিতে হবে।

পরামর্শ: কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা; সাবেক বিভাগীয় প্রধান, এএফএমসি, ঢাকা; চেম্বার: আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর পল্লবী শাখা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত