Ajker Patrika

কৃত্রিম অগ্ন্যাশয়: ডায়াবেটিস মোকাবিলায় নতুন সম্ভাবনা

অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী 
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৫৮
কৃত্রিম অগ্ন্যাশয়: ডায়াবেটিস মোকাবিলায় নতুন সম্ভাবনা

ডায়াবেটিস এখন বিশ্বে যে একটি প্রধান ক্রনিক রোগ, সে সম্বন্ধে তেমন মতবিরোধ থাকার কথা নয়। আমাদের দেশও ডায়াবেটিস বিস্তারের বাইরে নয়। এই গ্রহের অর্ধেক মানুষ জানেন না যে তাঁদের রক্তে সুগার বেড়েছে। অনেকে একে তেমন তোয়াক্কা করেন না। সুগার বেশি নিয়েই হেঁটে-চলে বেড়াচ্ছেন। যখন ডায়াবেটিস জটিল হয়ে হৃদ্‌যন্ত্রে ব্যামো শুরু হয়েছে, কিডনি বিকল হয়েছে, পায়ে পচন ধরছে আর চোখের দৃষ্টি চলে গেছে, তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন রোগীরা। বিভিন্ন পথ আছে ডায়াবেটিস মোকাবিলার—আজ সেসব নিয়ে আলোচনা নয়। আজ নতুন এক উদ্ভাবনের কথা বলব।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মানবদেহে সফলভাবে কৃত্রিম প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয় টেস্ট করেছেন। এই নতুন প্রযুক্তি যাঁদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস আছে, এ ছাড়া যাঁদের কিডনি ডায়ালাইসিস হচ্ছে, তাঁদের জন্য সহায়ক হবে। নতুন এক ট্রায়ালে দেখা গেছে, এই ডিভাইস ব্যবহার করে রোগীরা নিরাপদে রক্তের গ্লুকোজ মোকাবিলা করতে পারেন। আর লো ব্লাড গ্লুকোজের ঝুঁকিও কমাতে পারেন।

কিডনি বিকল হওয়ার একটি প্রধান কারণ হলো ডায়াবেটিস। বলা যায় ৩০ শতাংশ এমন সমস্যার মূলে আছে এ রোগটি। কৃত্রিম অগ্ন্যাশয়ের এ সংস্করণটি কাজ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। এটি একটি ছোট ও বহনযোগ্য মেডিকেল ডিভাইস। এমনভাবে করা হয়েছে এর ডিজাইন যে এটি কাজ করতে পারে সুস্থ স্বাভাবিক অগ্ন্যাশয়ের মতো। করতে সক্ষম হয় রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ। যেভাবে দেহের অগ্ন্যাশয় নিয়ন্ত্রণ করে, সেভাবে কাজ করে কৃত্রিম অগ্ন্যাশয়। এই ডিজিটাল ডিভাইসটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইনসুলিন ডেলিভারি করতে সক্ষম। একে শরীরের বাইরে ব্যবহার করতে হয়।

এর ভেতরে তিনটি অংশ রয়েছে। একটি গ্লুকোজ সেন্সর, একটি কম্পিউটার অ্যালগরিদম, যা গণনা করে ইনসুলিনের মাত্রা; অন্যটি ইনসুলিন পাম্প। ব্যবহারকারীর স্মার্টফোন থেকে সংকেত যায় ইনসুলিন পাম্পে, যাতে রোগীর কী পরিমাণ ইনসুলিন দরকার, সেটি সমন্বয় হয়ে যায়। গ্লুকোজ সেন্সর পরিমাপ করে রোগীর রক্তে গ্লুকোজের মান। আর এই বার্তা চলে যায় স্মার্টফোনে, যাতে প্রয়োজনে পুনঃসমন্বয় সম্ভব হয়। কৃত্রিম অগ্ন্যাশয় ব্যবহারকারী রোগীরা তাঁদের ৫৩ শতাংশ সময় থাকেন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে। কৃত্রিম অগ্ন্যাশয় যাঁরা পরেন, তাঁদের রক্তে গ্লুকোজের গড় মান কমই থাকে। এটি রোগীদের বিপজ্জনক লো ব্লাড গ্লুকোজের ধাক্কা অনেক কমিয়ে দেয়। এর আরেকটি সুফল হলো, আঙুল বারবার ফুটো করে রক্তের গ্লুকোজ পরিমাপ করার চাহিদা অনেক কমায়। ডায়াবেটিস মোকাবিলার জন্য সময় ব্যয় করার ঝামেলাও কমায় এটি। এতে নিজেকে অনেক হালকা লাগে, মুক্ত আর ঝামেলাহীন মনে হয়।

এই ডিভাইস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অবশ্যই হবে সুখবর।

লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত