আজকের পত্রিকা ডেস্ক

একটা সময় ছিল, যখন ভুঁড়ি ছিল আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির প্রতীক। বোঝাত, মানুষটি ভালো খান, সুখে আছেন। বয়স্কদের কাছে তো বটেই, সমাজে ভুঁড়িওয়ালাদের একটা আলাদা সম্মান ছিল। সাহিত্যে, সিনেমায় ভুঁড়িকে প্রায়ই আলস্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হতো। পেট মোটা মানেই যেন আরামপ্রিয়, কর্মবিমুখ কেউ। কার্টুনে রাজনীতিবিদদের ব্যঙ্গ করতে ভুঁড়িকে বড় করে দেখানো হতো। গ্রামেগঞ্জে ভুঁড়ি ছিল যেন একটা ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’—‘লোকটা তো বেশ খায়!’
কিন্তু সময় বদলেছে। একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। আর আপাতত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়। বিজ্ঞানী জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে,২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫ কোটিতে। তখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগবে।
বিশ্বজুড়েও একই চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী স্থূলতার শিকার হবে। এই সমস্যার কেন্দ্রে রয়েছে সেই পরিচিত ভুঁড়ি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পেটের মেদ।’
পেটের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া শুধু দেখতে খারাপ নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এর চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর এটি। নব্বইয়ের দশকেই গবেষণা জানিয়েছিল, পেটের মেদের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের সরাসরি যোগ আছে। স্থূলতা শুধু পেটেই হয় না। শরীরের বিভিন্ন অংশে মেদ জমা হওয়ার ধরনে এর ভিন্নতা দেখা যায়। তবে পেটের মেদ সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ।
ভারতের স্বাস্থ্য সমীক্ষা বলছে, দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশ নারী ও ১২ শতাংশ পুরুষের পেটে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের প্রায় প্রতি দুজনের মধ্যে একজনের এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। শহরে এর প্রভাব গ্রামে চেয়ে বেশি। এর একটি বড় কারণ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এর ফলে, শরীর ইনসুলিনের প্রতি আর আগের মতো সাড়া দেয় না। পেটের মেদ শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয়দের শরীরের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) শ্বেতাঙ্গদের সমান হলেও তাদের শরীরে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি চর্বি থাকে। তবে শরীরে কেবল কতটা চর্বি আছে সেটাই আসল কথা নয়, সেটা কোথায় জমা হচ্ছে সেটাও জরুরি। ভারতীয়দের চর্বি সাধারণত পেটের আশপাশে এবং ত্বকের নিচে জমা হয়। তবে সব সময় ভেতরের অঙ্গের আশপাশে ক্ষতিকর ভিসেরাল ফ্যাট হিসেবে নয়।
গবেষণা বলছে, ভারতীয়দের ‘ফ্যাট সেলগুলো’ বা চর্বি কোষগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই চামড়ার নিচে চর্বি জমাতে তাদের সমস্যা হয়। ফলে অতিরিক্ত চর্বি লিভার ও অগ্ন্যাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে ছড়িয়ে যায়। আর এতেই বাড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি।
বিজ্ঞানীরা এখনো এর সঠিক কারণ জানেন না। তবে মনে করা হয়, এর মূলে রয়েছে দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস। একসময় ভারতে দুর্ভিক্ষ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সেই সময় শরীর অল্প খাবারেই বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে শিখেছিল। পেট ছিল সেই শক্তি জমা করার প্রধান জায়গা। খাবার সহজলভ্য হওয়ার পরও সেই প্রবণতা রয়ে গেছে। আর সেটাই এখন ডেকে আনছে বিপদ।
এই বিষয়ে দিল্লির ফরটিস-সি-ডক সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর ডায়াবেটিস, মেটাবলিক ডিজিজ অ্যান্ড এন্ডোক্রাইনোলজির প্রধান অনূপ মিশ্র বলেন, ‘ভারতের বহু প্রজন্ম দুর্ভিক্ষ আর খাদ্যাভাবের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে। এই অবস্থায় শরীর নিজেকে টিকিয়ে রাখতে শিখে যায়—যতটা সম্ভব শক্তি জমাতে হবে বলে সে মনে করে। আর সেই শক্তি জমার জায়গা পেট। এই প্রবণতাই ভবিষ্যতে গিয়ে হয়ে ওঠে ভুঁড়ির কারণ।’ তিনি বলেন, ‘এটা অনুমানভিত্তিক হলেও যুক্তিসংগত এক বিবর্তন তত্ত্ব—যা প্রমাণ করা কঠিন, কিন্তু ভাবনাটা বাস্তবসম্মত।’
গত বছর ভারতীয় স্থূলতা কমিশনের এক গবেষণায় দক্ষিণ এশীয়দের জন্য স্থূলতার নতুন সংজ্ঞা প্রস্তাব করা হয়। এখানে শুধু বিএমআই নয়, শরীরে চর্বির অবস্থান, শারীরিক সক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট রোগগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে স্থূলতাকে দুই ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে শরীরের ওজন অনুযায়ী বিএমআই বেশি থাকে, কিন্তু পেটে চর্বি জমে না, কোনো বিপাকীয় রোগও থাকে না এবং দেহের কার্যকারিতাও স্বাভাবিক থাকে। এই ধাপের রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে হালকা ওষুধেই ভালো ফল মেলে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে পেটে জমে যায় ভিসেরাল ফ্যাট, যেটি শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। সাথে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, হাঁটুর ব্যথা বা হৃদকম্পনের মতো উপসর্গ। এই ধাপে ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই চিকিৎসাও হয় তুলনামূলকভাবে জটিল এবং নিয়মিত নজরদারির আওতায় রাখতে হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই শ্রেণিবিন্যাস চিকিৎসার ধরন নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুঁড়ি দেখা দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ এই পেটের চর্বি যত নিরীহ মনে হয়, আসলে ততটা নয়। ড. অনূপ মিশ্র বলেন, ‘অনেক সময় এমনও দেখা যায়—ওজন স্বাভাবিক, কিন্তু পেটের ভেতরে জমে থাকা চর্বি বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গেছে।’
ভারতের চিকিৎসকেরা মনে করছেন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই এই বিপদের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড, বাহারি বাইরের খাবার, রেডিমেড প্যাকেটজাত খাবার আর বাসার চড়া তেলে রান্না—সব মিলেই পেটের চর্বি বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্রুত। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ক্যামেরুন, ভারত ও ভিয়েতনামে মাথাপিছু ‘আলট্রা প্রসেসড ফুড’ ও পানীয়র বিক্রি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। ফলে ভুঁড়ির আশঙ্কাও বাড়ছে হু হু করে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, পেটের মেদ একবার দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ওজন কমানোর কিছু নতুন ওষুধ এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। আশ্চর্য লাগলেও সত্যি, অনেক স্বাভাবিক ওজনের মানুষের শরীরেও বিপজ্জনক মাত্রার পেটের মেদ থাকতে পারে। ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাত্রার পরিবর্তনই এর প্রধান কারণ। ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত খাবার, আর অতিরিক্ত তেল-মসলার খাবার এখন আমাদের রোজকার সঙ্গী।
তাহলে উপায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে ভারতীয়দের জীবনযাত্রায় আরও বেশি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। কারণ আমাদের শরীর অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণের জন্য ততটা তৈরি নয়। তাই, ভুঁড়ি শুধু হাসির বিষয় নয়। এটা একটা বিপদ সংকেত। ভারত যেন এক স্বাস্থ্য বোমার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি

একটা সময় ছিল, যখন ভুঁড়ি ছিল আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির প্রতীক। বোঝাত, মানুষটি ভালো খান, সুখে আছেন। বয়স্কদের কাছে তো বটেই, সমাজে ভুঁড়িওয়ালাদের একটা আলাদা সম্মান ছিল। সাহিত্যে, সিনেমায় ভুঁড়িকে প্রায়ই আলস্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হতো। পেট মোটা মানেই যেন আরামপ্রিয়, কর্মবিমুখ কেউ। কার্টুনে রাজনীতিবিদদের ব্যঙ্গ করতে ভুঁড়িকে বড় করে দেখানো হতো। গ্রামেগঞ্জে ভুঁড়ি ছিল যেন একটা ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’—‘লোকটা তো বেশ খায়!’
কিন্তু সময় বদলেছে। একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। আর আপাতত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়। বিজ্ঞানী জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে,২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫ কোটিতে। তখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগবে।
বিশ্বজুড়েও একই চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী স্থূলতার শিকার হবে। এই সমস্যার কেন্দ্রে রয়েছে সেই পরিচিত ভুঁড়ি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পেটের মেদ।’
পেটের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া শুধু দেখতে খারাপ নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এর চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর এটি। নব্বইয়ের দশকেই গবেষণা জানিয়েছিল, পেটের মেদের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের সরাসরি যোগ আছে। স্থূলতা শুধু পেটেই হয় না। শরীরের বিভিন্ন অংশে মেদ জমা হওয়ার ধরনে এর ভিন্নতা দেখা যায়। তবে পেটের মেদ সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ।
ভারতের স্বাস্থ্য সমীক্ষা বলছে, দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশ নারী ও ১২ শতাংশ পুরুষের পেটে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের প্রায় প্রতি দুজনের মধ্যে একজনের এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। শহরে এর প্রভাব গ্রামে চেয়ে বেশি। এর একটি বড় কারণ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এর ফলে, শরীর ইনসুলিনের প্রতি আর আগের মতো সাড়া দেয় না। পেটের মেদ শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয়দের শরীরের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) শ্বেতাঙ্গদের সমান হলেও তাদের শরীরে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি চর্বি থাকে। তবে শরীরে কেবল কতটা চর্বি আছে সেটাই আসল কথা নয়, সেটা কোথায় জমা হচ্ছে সেটাও জরুরি। ভারতীয়দের চর্বি সাধারণত পেটের আশপাশে এবং ত্বকের নিচে জমা হয়। তবে সব সময় ভেতরের অঙ্গের আশপাশে ক্ষতিকর ভিসেরাল ফ্যাট হিসেবে নয়।
গবেষণা বলছে, ভারতীয়দের ‘ফ্যাট সেলগুলো’ বা চর্বি কোষগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই চামড়ার নিচে চর্বি জমাতে তাদের সমস্যা হয়। ফলে অতিরিক্ত চর্বি লিভার ও অগ্ন্যাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে ছড়িয়ে যায়। আর এতেই বাড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি।
বিজ্ঞানীরা এখনো এর সঠিক কারণ জানেন না। তবে মনে করা হয়, এর মূলে রয়েছে দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস। একসময় ভারতে দুর্ভিক্ষ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সেই সময় শরীর অল্প খাবারেই বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে শিখেছিল। পেট ছিল সেই শক্তি জমা করার প্রধান জায়গা। খাবার সহজলভ্য হওয়ার পরও সেই প্রবণতা রয়ে গেছে। আর সেটাই এখন ডেকে আনছে বিপদ।
এই বিষয়ে দিল্লির ফরটিস-সি-ডক সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর ডায়াবেটিস, মেটাবলিক ডিজিজ অ্যান্ড এন্ডোক্রাইনোলজির প্রধান অনূপ মিশ্র বলেন, ‘ভারতের বহু প্রজন্ম দুর্ভিক্ষ আর খাদ্যাভাবের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে। এই অবস্থায় শরীর নিজেকে টিকিয়ে রাখতে শিখে যায়—যতটা সম্ভব শক্তি জমাতে হবে বলে সে মনে করে। আর সেই শক্তি জমার জায়গা পেট। এই প্রবণতাই ভবিষ্যতে গিয়ে হয়ে ওঠে ভুঁড়ির কারণ।’ তিনি বলেন, ‘এটা অনুমানভিত্তিক হলেও যুক্তিসংগত এক বিবর্তন তত্ত্ব—যা প্রমাণ করা কঠিন, কিন্তু ভাবনাটা বাস্তবসম্মত।’
গত বছর ভারতীয় স্থূলতা কমিশনের এক গবেষণায় দক্ষিণ এশীয়দের জন্য স্থূলতার নতুন সংজ্ঞা প্রস্তাব করা হয়। এখানে শুধু বিএমআই নয়, শরীরে চর্বির অবস্থান, শারীরিক সক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট রোগগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে স্থূলতাকে দুই ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে শরীরের ওজন অনুযায়ী বিএমআই বেশি থাকে, কিন্তু পেটে চর্বি জমে না, কোনো বিপাকীয় রোগও থাকে না এবং দেহের কার্যকারিতাও স্বাভাবিক থাকে। এই ধাপের রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে হালকা ওষুধেই ভালো ফল মেলে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে পেটে জমে যায় ভিসেরাল ফ্যাট, যেটি শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। সাথে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, হাঁটুর ব্যথা বা হৃদকম্পনের মতো উপসর্গ। এই ধাপে ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই চিকিৎসাও হয় তুলনামূলকভাবে জটিল এবং নিয়মিত নজরদারির আওতায় রাখতে হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই শ্রেণিবিন্যাস চিকিৎসার ধরন নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুঁড়ি দেখা দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ এই পেটের চর্বি যত নিরীহ মনে হয়, আসলে ততটা নয়। ড. অনূপ মিশ্র বলেন, ‘অনেক সময় এমনও দেখা যায়—ওজন স্বাভাবিক, কিন্তু পেটের ভেতরে জমে থাকা চর্বি বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গেছে।’
ভারতের চিকিৎসকেরা মনে করছেন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই এই বিপদের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড, বাহারি বাইরের খাবার, রেডিমেড প্যাকেটজাত খাবার আর বাসার চড়া তেলে রান্না—সব মিলেই পেটের চর্বি বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্রুত। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ক্যামেরুন, ভারত ও ভিয়েতনামে মাথাপিছু ‘আলট্রা প্রসেসড ফুড’ ও পানীয়র বিক্রি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। ফলে ভুঁড়ির আশঙ্কাও বাড়ছে হু হু করে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, পেটের মেদ একবার দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ওজন কমানোর কিছু নতুন ওষুধ এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। আশ্চর্য লাগলেও সত্যি, অনেক স্বাভাবিক ওজনের মানুষের শরীরেও বিপজ্জনক মাত্রার পেটের মেদ থাকতে পারে। ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাত্রার পরিবর্তনই এর প্রধান কারণ। ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত খাবার, আর অতিরিক্ত তেল-মসলার খাবার এখন আমাদের রোজকার সঙ্গী।
তাহলে উপায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে ভারতীয়দের জীবনযাত্রায় আরও বেশি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। কারণ আমাদের শরীর অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণের জন্য ততটা তৈরি নয়। তাই, ভুঁড়ি শুধু হাসির বিষয় নয়। এটা একটা বিপদ সংকেত। ভারত যেন এক স্বাস্থ্য বোমার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

একটা সময় ছিল, যখন ভুঁড়ি ছিল আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির প্রতীক। বোঝাত, মানুষটি ভালো খান, সুখে আছেন। বয়স্কদের কাছে তো বটেই, সমাজে ভুঁড়িওয়ালাদের একটা আলাদা সম্মান ছিল। সাহিত্যে, সিনেমায় ভুঁড়িকে প্রায়ই আলস্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হতো। পেট মোটা মানেই যেন আরামপ্রিয়, কর্মবিমুখ কেউ। কার্টুনে রাজনীতিবিদদের ব্যঙ্গ করতে ভুঁড়িকে বড় করে দেখানো হতো। গ্রামেগঞ্জে ভুঁড়ি ছিল যেন একটা ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’—‘লোকটা তো বেশ খায়!’
কিন্তু সময় বদলেছে। একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। আর আপাতত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়। বিজ্ঞানী জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে,২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫ কোটিতে। তখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগবে।
বিশ্বজুড়েও একই চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী স্থূলতার শিকার হবে। এই সমস্যার কেন্দ্রে রয়েছে সেই পরিচিত ভুঁড়ি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পেটের মেদ।’
পেটের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া শুধু দেখতে খারাপ নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এর চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর এটি। নব্বইয়ের দশকেই গবেষণা জানিয়েছিল, পেটের মেদের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের সরাসরি যোগ আছে। স্থূলতা শুধু পেটেই হয় না। শরীরের বিভিন্ন অংশে মেদ জমা হওয়ার ধরনে এর ভিন্নতা দেখা যায়। তবে পেটের মেদ সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ।
ভারতের স্বাস্থ্য সমীক্ষা বলছে, দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশ নারী ও ১২ শতাংশ পুরুষের পেটে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের প্রায় প্রতি দুজনের মধ্যে একজনের এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। শহরে এর প্রভাব গ্রামে চেয়ে বেশি। এর একটি বড় কারণ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এর ফলে, শরীর ইনসুলিনের প্রতি আর আগের মতো সাড়া দেয় না। পেটের মেদ শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয়দের শরীরের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) শ্বেতাঙ্গদের সমান হলেও তাদের শরীরে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি চর্বি থাকে। তবে শরীরে কেবল কতটা চর্বি আছে সেটাই আসল কথা নয়, সেটা কোথায় জমা হচ্ছে সেটাও জরুরি। ভারতীয়দের চর্বি সাধারণত পেটের আশপাশে এবং ত্বকের নিচে জমা হয়। তবে সব সময় ভেতরের অঙ্গের আশপাশে ক্ষতিকর ভিসেরাল ফ্যাট হিসেবে নয়।
গবেষণা বলছে, ভারতীয়দের ‘ফ্যাট সেলগুলো’ বা চর্বি কোষগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই চামড়ার নিচে চর্বি জমাতে তাদের সমস্যা হয়। ফলে অতিরিক্ত চর্বি লিভার ও অগ্ন্যাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে ছড়িয়ে যায়। আর এতেই বাড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি।
বিজ্ঞানীরা এখনো এর সঠিক কারণ জানেন না। তবে মনে করা হয়, এর মূলে রয়েছে দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস। একসময় ভারতে দুর্ভিক্ষ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সেই সময় শরীর অল্প খাবারেই বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে শিখেছিল। পেট ছিল সেই শক্তি জমা করার প্রধান জায়গা। খাবার সহজলভ্য হওয়ার পরও সেই প্রবণতা রয়ে গেছে। আর সেটাই এখন ডেকে আনছে বিপদ।
এই বিষয়ে দিল্লির ফরটিস-সি-ডক সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর ডায়াবেটিস, মেটাবলিক ডিজিজ অ্যান্ড এন্ডোক্রাইনোলজির প্রধান অনূপ মিশ্র বলেন, ‘ভারতের বহু প্রজন্ম দুর্ভিক্ষ আর খাদ্যাভাবের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে। এই অবস্থায় শরীর নিজেকে টিকিয়ে রাখতে শিখে যায়—যতটা সম্ভব শক্তি জমাতে হবে বলে সে মনে করে। আর সেই শক্তি জমার জায়গা পেট। এই প্রবণতাই ভবিষ্যতে গিয়ে হয়ে ওঠে ভুঁড়ির কারণ।’ তিনি বলেন, ‘এটা অনুমানভিত্তিক হলেও যুক্তিসংগত এক বিবর্তন তত্ত্ব—যা প্রমাণ করা কঠিন, কিন্তু ভাবনাটা বাস্তবসম্মত।’
গত বছর ভারতীয় স্থূলতা কমিশনের এক গবেষণায় দক্ষিণ এশীয়দের জন্য স্থূলতার নতুন সংজ্ঞা প্রস্তাব করা হয়। এখানে শুধু বিএমআই নয়, শরীরে চর্বির অবস্থান, শারীরিক সক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট রোগগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে স্থূলতাকে দুই ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে শরীরের ওজন অনুযায়ী বিএমআই বেশি থাকে, কিন্তু পেটে চর্বি জমে না, কোনো বিপাকীয় রোগও থাকে না এবং দেহের কার্যকারিতাও স্বাভাবিক থাকে। এই ধাপের রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে হালকা ওষুধেই ভালো ফল মেলে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে পেটে জমে যায় ভিসেরাল ফ্যাট, যেটি শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। সাথে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, হাঁটুর ব্যথা বা হৃদকম্পনের মতো উপসর্গ। এই ধাপে ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই চিকিৎসাও হয় তুলনামূলকভাবে জটিল এবং নিয়মিত নজরদারির আওতায় রাখতে হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই শ্রেণিবিন্যাস চিকিৎসার ধরন নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুঁড়ি দেখা দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ এই পেটের চর্বি যত নিরীহ মনে হয়, আসলে ততটা নয়। ড. অনূপ মিশ্র বলেন, ‘অনেক সময় এমনও দেখা যায়—ওজন স্বাভাবিক, কিন্তু পেটের ভেতরে জমে থাকা চর্বি বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গেছে।’
ভারতের চিকিৎসকেরা মনে করছেন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই এই বিপদের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড, বাহারি বাইরের খাবার, রেডিমেড প্যাকেটজাত খাবার আর বাসার চড়া তেলে রান্না—সব মিলেই পেটের চর্বি বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্রুত। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ক্যামেরুন, ভারত ও ভিয়েতনামে মাথাপিছু ‘আলট্রা প্রসেসড ফুড’ ও পানীয়র বিক্রি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। ফলে ভুঁড়ির আশঙ্কাও বাড়ছে হু হু করে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, পেটের মেদ একবার দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ওজন কমানোর কিছু নতুন ওষুধ এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। আশ্চর্য লাগলেও সত্যি, অনেক স্বাভাবিক ওজনের মানুষের শরীরেও বিপজ্জনক মাত্রার পেটের মেদ থাকতে পারে। ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাত্রার পরিবর্তনই এর প্রধান কারণ। ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত খাবার, আর অতিরিক্ত তেল-মসলার খাবার এখন আমাদের রোজকার সঙ্গী।
তাহলে উপায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে ভারতীয়দের জীবনযাত্রায় আরও বেশি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। কারণ আমাদের শরীর অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণের জন্য ততটা তৈরি নয়। তাই, ভুঁড়ি শুধু হাসির বিষয় নয়। এটা একটা বিপদ সংকেত। ভারত যেন এক স্বাস্থ্য বোমার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি

একটা সময় ছিল, যখন ভুঁড়ি ছিল আভিজাত্য ও প্রতিপত্তির প্রতীক। বোঝাত, মানুষটি ভালো খান, সুখে আছেন। বয়স্কদের কাছে তো বটেই, সমাজে ভুঁড়িওয়ালাদের একটা আলাদা সম্মান ছিল। সাহিত্যে, সিনেমায় ভুঁড়িকে প্রায়ই আলস্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হতো। পেট মোটা মানেই যেন আরামপ্রিয়, কর্মবিমুখ কেউ। কার্টুনে রাজনীতিবিদদের ব্যঙ্গ করতে ভুঁড়িকে বড় করে দেখানো হতো। গ্রামেগঞ্জে ভুঁড়ি ছিল যেন একটা ‘স্ট্যাটাস সিম্বল’—‘লোকটা তো বেশ খায়!’
কিন্তু সময় বদলেছে। একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। আর আপাতত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়। বিজ্ঞানী জার্নাল দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে,২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৪৫ কোটিতে। তখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এই সমস্যায় ভুগবে।
বিশ্বজুড়েও একই চিত্র। ধারণা করা হচ্ছে, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি প্রাপ্তবয়স্ক এবং এক-তৃতীয়াংশ শিশু ও কিশোর-কিশোরী স্থূলতার শিকার হবে। এই সমস্যার কেন্দ্রে রয়েছে সেই পরিচিত ভুঁড়ি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পেটের মেদ।’
পেটের চারপাশে অতিরিক্ত চর্বি জমা হওয়া শুধু দেখতে খারাপ নয়। চিকিৎসকেরা বলছেন, এর চেয়েও অনেক বেশি ক্ষতিকর এটি। নব্বইয়ের দশকেই গবেষণা জানিয়েছিল, পেটের মেদের সঙ্গে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের সরাসরি যোগ আছে। স্থূলতা শুধু পেটেই হয় না। শরীরের বিভিন্ন অংশে মেদ জমা হওয়ার ধরনে এর ভিন্নতা দেখা যায়। তবে পেটের মেদ সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের কারণ।
ভারতের স্বাস্থ্য সমীক্ষা বলছে, দেশটির প্রায় ৪০ শতাংশ নারী ও ১২ শতাংশ পুরুষের পেটে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে। মহিলাদের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের প্রায় প্রতি দুজনের মধ্যে একজনের এই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। শহরে এর প্রভাব গ্রামে চেয়ে বেশি। এর একটি বড় কারণ ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স। এর ফলে, শরীর ইনসুলিনের প্রতি আর আগের মতো সাড়া দেয় না। পেটের মেদ শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দেখা গেছে, দক্ষিণ এশীয়দের শরীরের বডি মাস ইনডেক্স (বিএমআই) শ্বেতাঙ্গদের সমান হলেও তাদের শরীরে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে বেশি চর্বি থাকে। তবে শরীরে কেবল কতটা চর্বি আছে সেটাই আসল কথা নয়, সেটা কোথায় জমা হচ্ছে সেটাও জরুরি। ভারতীয়দের চর্বি সাধারণত পেটের আশপাশে এবং ত্বকের নিচে জমা হয়। তবে সব সময় ভেতরের অঙ্গের আশপাশে ক্ষতিকর ভিসেরাল ফ্যাট হিসেবে নয়।
গবেষণা বলছে, ভারতীয়দের ‘ফ্যাট সেলগুলো’ বা চর্বি কোষগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। তাই চামড়ার নিচে চর্বি জমাতে তাদের সমস্যা হয়। ফলে অতিরিক্ত চর্বি লিভার ও অগ্ন্যাশয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে ছড়িয়ে যায়। আর এতেই বাড়ে ডায়াবেটিস ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি।
বিজ্ঞানীরা এখনো এর সঠিক কারণ জানেন না। তবে মনে করা হয়, এর মূলে রয়েছে দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস। একসময় ভারতে দুর্ভিক্ষ ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সেই সময় শরীর অল্প খাবারেই বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে শিখেছিল। পেট ছিল সেই শক্তি জমা করার প্রধান জায়গা। খাবার সহজলভ্য হওয়ার পরও সেই প্রবণতা রয়ে গেছে। আর সেটাই এখন ডেকে আনছে বিপদ।
এই বিষয়ে দিল্লির ফরটিস-সি-ডক সেন্টার অব এক্সেলেন্স ফর ডায়াবেটিস, মেটাবলিক ডিজিজ অ্যান্ড এন্ডোক্রাইনোলজির প্রধান অনূপ মিশ্র বলেন, ‘ভারতের বহু প্রজন্ম দুর্ভিক্ষ আর খাদ্যাভাবের মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছে। এই অবস্থায় শরীর নিজেকে টিকিয়ে রাখতে শিখে যায়—যতটা সম্ভব শক্তি জমাতে হবে বলে সে মনে করে। আর সেই শক্তি জমার জায়গা পেট। এই প্রবণতাই ভবিষ্যতে গিয়ে হয়ে ওঠে ভুঁড়ির কারণ।’ তিনি বলেন, ‘এটা অনুমানভিত্তিক হলেও যুক্তিসংগত এক বিবর্তন তত্ত্ব—যা প্রমাণ করা কঠিন, কিন্তু ভাবনাটা বাস্তবসম্মত।’
গত বছর ভারতীয় স্থূলতা কমিশনের এক গবেষণায় দক্ষিণ এশীয়দের জন্য স্থূলতার নতুন সংজ্ঞা প্রস্তাব করা হয়। এখানে শুধু বিএমআই নয়, শরীরে চর্বির অবস্থান, শারীরিক সক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট রোগগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবে স্থূলতাকে দুই ধাপে ভাগ করা হয়েছে।
প্রথম ধাপে শরীরের ওজন অনুযায়ী বিএমআই বেশি থাকে, কিন্তু পেটে চর্বি জমে না, কোনো বিপাকীয় রোগও থাকে না এবং দেহের কার্যকারিতাও স্বাভাবিক থাকে। এই ধাপের রোগীদের ক্ষেত্রে সাধারণত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং প্রয়োজনে হালকা ওষুধেই ভালো ফল মেলে। কিন্তু দ্বিতীয় ধাপে পেটে জমে যায় ভিসেরাল ফ্যাট, যেটি শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। সাথে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, হাঁটুর ব্যথা বা হৃদকম্পনের মতো উপসর্গ। এই ধাপে ঝুঁকি অনেক বেশি, তাই চিকিৎসাও হয় তুলনামূলকভাবে জটিল এবং নিয়মিত নজরদারির আওতায় রাখতে হয়।
চিকিৎসকেরা বলছেন, এই শ্রেণিবিন্যাস চিকিৎসার ধরন নির্ধারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভুঁড়ি দেখা দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কারণ এই পেটের চর্বি যত নিরীহ মনে হয়, আসলে ততটা নয়। ড. অনূপ মিশ্র বলেন, ‘অনেক সময় এমনও দেখা যায়—ওজন স্বাভাবিক, কিন্তু পেটের ভেতরে জমে থাকা চর্বি বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে গেছে।’
ভারতের চিকিৎসকেরা মনে করছেন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনই এই বিপদের অন্যতম কারণ। অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড, বাহারি বাইরের খাবার, রেডিমেড প্যাকেটজাত খাবার আর বাসার চড়া তেলে রান্না—সব মিলেই পেটের চর্বি বাড়িয়ে দিচ্ছে দ্রুত। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে ক্যামেরুন, ভারত ও ভিয়েতনামে মাথাপিছু ‘আলট্রা প্রসেসড ফুড’ ও পানীয়র বিক্রি সবচেয়ে দ্রুতগতিতে বেড়েছে। ফলে ভুঁড়ির আশঙ্কাও বাড়ছে হু হু করে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, পেটের মেদ একবার দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ওজন কমানোর কিছু নতুন ওষুধ এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। আশ্চর্য লাগলেও সত্যি, অনেক স্বাভাবিক ওজনের মানুষের শরীরেও বিপজ্জনক মাত্রার পেটের মেদ থাকতে পারে। ভারতীয় চিকিৎসকদের মতে, জীবনযাত্রার পরিবর্তনই এর প্রধান কারণ। ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত খাবার, আর অতিরিক্ত তেল-মসলার খাবার এখন আমাদের রোজকার সঙ্গী।
তাহলে উপায়? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর চেয়ে ভারতীয়দের জীবনযাত্রায় আরও বেশি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। কারণ আমাদের শরীর অতিরিক্ত চর্বি গ্রহণের জন্য ততটা তৈরি নয়। তাই, ভুঁড়ি শুধু হাসির বিষয় নয়। এটা একটা বিপদ সংকেত। ভারত যেন এক স্বাস্থ্য বোমার ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
১ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
১ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
১ দিন আগে
মাংসপেশি মজবুত করতে এবং শরীর বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের উপকারের চেয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে...
১ দিন আগেডা. পূজা সাহা

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা
দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা
দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়
অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।
স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।
দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।
কিছু সাধারণ পরামর্শ
লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
দাঁতে ব্যথা হলে আগে কারণ জানা
দাঁতে ব্যথা মানেই শুধু ক্যাভিটি নয়। দাঁতের গোড়ায় পাথর জমে যাওয়া, স্নায়ুতে প্রদাহ, মাড়ির সংক্রমণ কিংবা দাঁতের ক্ষয়—এসব কারণেও ব্যথা হতে পারে। তাই দাতে ব্যথা হলে প্রথমে কারণটা জানা জরুরি। অস্থায়ী স্বস্তির জন্য দিনে কয়েকবার কুসুম গরম পানিতে লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করা যেতে পারে। দাঁতের সেনসিটিভিটি কমানোর টুথপেস্টও কিছুটা সহায়ক। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য অবশ্যই দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
দাঁতের যত্ন মানেই সার্বিক সুস্থতা
দাঁতের যত্ন শুধু সুন্দর হাসির জন্য নয়, শরীরের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের অংশও। দাঁতের ক্ষয় বা সংক্রমণ অবহেলা করলে তা মাড়ি, হাড় এমনকি হৃদ্রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দিতে পারে। সঠিক যত্নে এই সমস্যা অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়।
টক খাবারে দাঁতের ক্ষয়
অতিরিক্ত টক বা অ্যাসিডযুক্ত খাবার দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ফল, লেবু, টমেটো বা টক স্যুপ নিয়মিত খেলে দাঁতের বাইরের স্তর ক্ষয় হয়ে যেতে পারে। এতে দাঁত সংবেদনশীল হয়ে পড়ে, ব্যথা বা ঝাঁজালো অনুভূতি দেখা দেয়। যাদের পারিবারিকভাবে দাঁত দুর্বল, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। দাঁতের ক্ষয় পুরোপুরি বন্ধ না হলেও চিকিৎসার মাধ্যমে তা মেরামত করা অনেকটা সম্ভব। ক্ষয়ের পরিমাণ অনুযায়ী ফিলিং বা অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় টক খাবার খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আর দাঁত ব্রাশ করার আগে অন্তত ৩০ মিনিট বিরতি দিন। অ্যাসিডজাতীয় খাবার খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করলে এনামেল আরও নরম হয়ে ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ায়।
স্কেলিং নিয়ে ভুল ধারণা
অনেকের ধারণা, দাঁতের স্কেলিং করালে দাঁত নরম বা আলগা হয়ে যায়। বাস্তবে এ তথ্য ভুল। স্কেলিংয়ের সময় দাঁতের পাথর বা ক্যালকুলাস সরানো হয়। স্কেলিংয়ের পর কিছু সময়ের জন্য দাঁত আলগা মনে হতে পারে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দাঁতে দাগ বা পাথর দেখা দিলে স্কেলিং করানো উচিত। তবে দাঁত সাদা করতে চাইলে আলাদা ব্লিচিং বা হোয়াইটেনিং চিকিৎসা লাগে।
দাঁত আঁকাবাঁকা হলে করণীয়
শিশুদের ক্ষেত্রে দুধদাঁত সময়ের আগে কিংবা পরে পড়লে স্থায়ী দাঁত সোজাভাবে ওঠে না। ফলে দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে যায়। এতে শুধু চেহারার সৌন্দর্য নয়, উচ্চারণেও প্রভাব পড়তে পারে। এ সমস্যা থাকলে দাঁতের চিকিৎসকের পরামর্শে অর্থোডন্টিক চিকিৎসা (ব্রেস অথবা অ্যালাইনার) নেওয়া যায়। তবে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিশুর বয়স, দাঁতের অবস্থা এবং মুখের গঠন বিবেচনা করা জরুরি।
কিছু সাধারণ পরামর্শ
লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতা সমস্যা। আর আপাত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
১ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
১ দিন আগে
মাংসপেশি মজবুত করতে এবং শরীর বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের উপকারের চেয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে...
১ দিন আগেডা. মো. নূর আলম

স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
কশেরুকা কী
মানবদেহের মেরুদণ্ড অনেক কশেরুকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কশেরুকা অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে তৈরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স কিংবা ক্ষয়ের কারণে কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়, শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে। এতে দুই কশেরুকা একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায় এবং হাড়ে ধারালো দানা তৈরি হয়, যা এক্স-রেতে দেখা যায়। এ দানাগুলো স্নায়ুতে চাপ দিলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দিতে পারে।
ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, সেটাকে বলে ‘স্লিপড ডিস্ক’। সাধারণত দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া কিংবা ঘাড়ে আঘাতের কারণে এটি হয়। ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মেরুদণ্ডের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কেন বাড়ছে এই রোগ
আগের তুলনায় এখন স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে; বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন; যেমন আইটি কিংবা বিপিও খাতের কর্মীরা—তাঁদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৭ জন কোনো না কোনোভাবে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন।
স্পন্ডিলাইটিসের প্রধান ধরন
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস: ঘাড়ের অংশে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ, কলারবোন ও ঘাড়সংলগ্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা হতে পারে।
লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস: এতে কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়, যা পিঠ ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এটি একধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা মেরুদণ্ড এবং শ্রোণির সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্টকে প্রভাবিত করে। এতে নিতম্ব, কোমর এবং পিঠে ক্রমাগত
ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো একত্রে মিশে যেতে পারে, যাকে বলে ‘Bamboo Spine’। এতে রোগী ধীরে ধীরে চলাচলের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
সাধারণ লক্ষণ
সম্ভাব্য কারণ
পরামর্শ
যদি ঘাড়, পিঠ অথবা কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে, আঙুল অবশ হয় বা চলাফেরায় অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে স্পন্ডিলাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-৬

স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
কশেরুকা কী
মানবদেহের মেরুদণ্ড অনেক কশেরুকা দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কশেরুকা অস্থি ও তরুণাস্থির সমন্বয়ে তৈরি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স কিংবা ক্ষয়ের কারণে কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্ক তার স্থিতিস্থাপকতা হারায়, শুকিয়ে যায় এবং ফেটে যেতে পারে। এতে দুই কশেরুকা একে অপরের সঙ্গে ঘষা খায় এবং হাড়ে ধারালো দানা তৈরি হয়, যা এক্স-রেতে দেখা যায়। এ দানাগুলো স্নায়ুতে চাপ দিলে হাত বা পায়ে তীব্র ব্যথা ও অসাড়তা দেখা দিতে পারে।
ডিস্ক যখন তার জায়গা থেকে সরে যায়, সেটাকে বলে ‘স্লিপড ডিস্ক’। সাধারণত দুর্ঘটনা, পড়ে যাওয়া কিংবা ঘাড়ে আঘাতের কারণে এটি হয়। ডিস্কের স্থিতিস্থাপকতা কমে গেলে মেরুদণ্ডের নড়াচড়া কঠিন হয়ে পড়ে।
কেন বাড়ছে এই রোগ
আগের তুলনায় এখন স্পন্ডিলাইটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে; বিশেষ করে যাঁরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করেন; যেমন আইটি কিংবা বিপিও খাতের কর্মীরা—তাঁদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এখন প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ৭ জন কোনো না কোনোভাবে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথায় ভুগছেন।
স্পন্ডিলাইটিসের প্রধান ধরন
সার্ভাইক্যাল স্পন্ডিলাইটিস: ঘাড়ের অংশে এই ব্যথা শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে কাঁধ, কলারবোন ও ঘাড়সংলগ্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ঘাড় ঘোরাতে কষ্ট হয়, মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা হতে পারে।
লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস: এতে কোমরের নিচের অংশে ব্যথা হয়, যা পিঠ ও পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অ্যানকিলোজিং স্পন্ডিলাইটিস: এটি একধরনের প্রদাহজনিত আর্থ্রাইটিস, যা মেরুদণ্ড এবং শ্রোণির সঙ্গে যুক্ত হয়ে স্যাক্রোইলিয়াক জয়েন্টকে প্রভাবিত করে। এতে নিতম্ব, কোমর এবং পিঠে ক্রমাগত
ব্যথা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেরুদণ্ডের হাড়গুলো একত্রে মিশে যেতে পারে, যাকে বলে ‘Bamboo Spine’। এতে রোগী ধীরে ধীরে চলাচলের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন।
সাধারণ লক্ষণ
সম্ভাব্য কারণ
পরামর্শ
যদি ঘাড়, পিঠ অথবা কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা থাকে, আঙুল অবশ হয় বা চলাফেরায় অসুবিধা দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। সময়মতো চিকিৎসা নিলে স্পন্ডিলাইটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা যায়।
লেখক: জ্যেষ্ঠ কনসালট্যান্ট, আলোক হাসপাতাল লিমিটেড, মিরপুর-৬

একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতা সমস্যা। আর আপাত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
১ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
১ দিন আগে
মাংসপেশি মজবুত করতে এবং শরীর বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের উপকারের চেয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে...
১ দিন আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কখন বলবেন বেশি রক্ত যাচ্ছে
পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে তাকে বলা হয় ম্যানোরেজিয়া। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তপাত হলে, সংখ্যায় বেশি প্যাড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে এবং ব্লিডিংয়ের সঙ্গে চাকা চাকা রক্তপাত হলে।
কেন বেশি ব্লিডিং হতে পারে
করণীয়
হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের ক্ষেত্রে, রক্তপ্রবাহ এবং পেটের খিঁচুনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যদি অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের কারণে পিরিয়ডকে ভয় পান, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এর অনেক চিকিৎসা রয়েছে, যা সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। যেমন হরমোনের সমস্যা আছে কি না বা প্লিসটিক ওভারেসি সিনড্রোম আছে কি না অথবা থাইরো হরমোনের সমস্যা আছে কি না। আলট্রাসনো করেও অনেক সময় দেখা হয়, জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কি না। ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে, যাদের হরমনাল ইমব্যালেন্স থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হরমোন ব্যালেন্স করার জন্য প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমোন দিয়ে থাকি। আবার থাইরো হরমোনের তারতম্য থাকলে থাইরো হরমোনের রিপ্লেসমেন্ট বা যে কারণে হচ্ছে, সেটার ওষুধ দিয়ে থাকি। টিউমার থাকলে অনেক সময় অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এই অপারেশন সব সময় যে দরকার হয় এমন নয়; বা অতিরিক্ত ব্লিডিং হলেই যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
লেখক: হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
কখন বলবেন বেশি রক্ত যাচ্ছে
পিরিয়ডের সময় বেশি রক্তপাত হলে তাকে বলা হয় ম্যানোরেজিয়া। এর সাধারণ লক্ষণগুলো হলো
সাত দিনের বেশি সময় ধরে রক্তপাত হলে, সংখ্যায় বেশি প্যাড ব্যবহারের প্রয়োজন হলে এবং ব্লিডিংয়ের সঙ্গে চাকা চাকা রক্তপাত হলে।
কেন বেশি ব্লিডিং হতে পারে
করণীয়
হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের ক্ষেত্রে, রক্তপ্রবাহ এবং পেটের খিঁচুনি আপনার স্বাভাবিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে। যদি অতিরিক্ত মাসিকের রক্তপাতের কারণে পিরিয়ডকে ভয় পান, তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। এর অনেক চিকিৎসা রয়েছে, যা সাহায্য করতে পারে। বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথমে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোর দরকার হয়। যেমন হরমোনের সমস্যা আছে কি না বা প্লিসটিক ওভারেসি সিনড্রোম আছে কি না অথবা থাইরো হরমোনের সমস্যা আছে কি না। আলট্রাসনো করেও অনেক সময় দেখা হয়, জরায়ুতে কোনো টিউমার আছে কি না। ওষুধ দেওয়ার ক্ষেত্রে, যাদের হরমনাল ইমব্যালেন্স থাকে, তাদের ক্ষেত্রে হরমোন ব্যালেন্স করার জন্য প্রজেস্টেরন-জাতীয় হরমোন দিয়ে থাকি। আবার থাইরো হরমোনের তারতম্য থাকলে থাইরো হরমোনের রিপ্লেসমেন্ট বা যে কারণে হচ্ছে, সেটার ওষুধ দিয়ে থাকি। টিউমার থাকলে অনেক সময় অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। তবে এই অপারেশন সব সময় যে দরকার হয় এমন নয়; বা অতিরিক্ত ব্লিডিং হলেই যে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হতে হবে, তা কিন্তু নয়।
লেখক: হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতা সমস্যা। আর আপাত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
১ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
১ দিন আগে
মাংসপেশি মজবুত করতে এবং শরীর বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের উপকারের চেয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে...
১ দিন আগেনাহিদা আহমেদ

মাংসপেশি মজবুত করতে এবং শরীর বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের উপকারের চেয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে, তিনি প্রতিদিন ৬০ গ্রামের মতো প্রোটিন গ্রহণ করতে পারবেন। কিডনির সমস্যাসহ বিশেষ কিছু রোগের ক্ষেত্রে আবার পরিমাণ কমাতে হবে। আবার মেয়েদের মাসিকের সময় এবং গর্ভকালে এই প্রোটিনের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হারে বেড়ে থাকে।
অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে শরীরে যেসব সমস্যা হতে পারে—
নিশ্বাসে দুর্গন্ধ
মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ফলে নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে শরীর কিটোসিস নামক একটি বিপাকীয় অবস্থায় চলে যায়। এই অবস্থায় বিভিন্ন রাসায়নিক তৈরি হয় বলে শরীরে অপ্রীতিকর গন্ধ তৈরি হয়।
কিডনি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে প্রোটিন ভেঙে অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি হয়।
এ থেকে তৈরি হয় নাইট্রোজেন বা বর্জ্য পদার্থ। যেসব রোগীর কিডনির বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে দুর্বল কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য আরও বেশি শক্তি ক্ষয় করে। এর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
পানিশূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে
অতিরিক্ত নাইট্রোজেন বের করার জন্য শরীরে বিভিন্ন তরল ও পানির নিষ্কাশন বেড়ে যায়। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তৃষ্ণার্ত না করেও এটি আপনাকে পানিশূন্য করে দিতে পারে।
ডায়রিয়া হতে পারে
অত্যধিক দুগ্ধজাত অথবা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে আঁশের অভাব দেখা দিতে পারে। এতে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি বিশেষভাবে সত্য হবে, যদি আপনার দুধজাতীয় খাবার খাওয়ায় সমস্যা থাকে কিংবা ভাজা মাংস, মাছ এবং হাঁস-মুরগির মতো উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণ করেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে
অনেকে শর্করা কমিয়ে দিয়ে প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। তাঁদের ক্ষেত্রে শরীরে আঁশের ঘাটতি হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘ সময় প্রতিদিন একটানা ১০০ গ্রামের বেশি লাল মাংস খেলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা, ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি, বৃহদন্ত্র ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া বেশি প্রোটিন গ্রহণ ফুসফুসের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়া, কোলন ও স্তন ক্যানসারে ভূমিকা রাখে। এমনকি অতিরিক্ত লাল মাংস গ্রহণে আর্থ্রাইটিস, গাউট, পেপটিক আলসার, পিত্তথলিতে পাথর, প্যানক্রিয়াস প্রদাহ, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করে।
লেখক: পুষ্টিবিদ, ফরাজি হসপিটাল, বারিধারা

মাংসপেশি মজবুত করতে এবং শরীর বেড়ে ওঠার জন্য প্রোটিন জরুরি। কিন্তু অতিরিক্ত প্রোটিন শরীরের উপকারের চেয়ে উল্টো ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন গ্রহণ করবেন, সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। কোনো ব্যক্তির আদর্শ ওজন ৬০ কেজি হলে, তিনি প্রতিদিন ৬০ গ্রামের মতো প্রোটিন গ্রহণ করতে পারবেন। কিডনির সমস্যাসহ বিশেষ কিছু রোগের ক্ষেত্রে আবার পরিমাণ কমাতে হবে। আবার মেয়েদের মাসিকের সময় এবং গর্ভকালে এই প্রোটিনের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হারে বেড়ে থাকে।
অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে শরীরে যেসব সমস্যা হতে পারে—
নিশ্বাসে দুর্গন্ধ
মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের ফলে নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে। অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণে শরীর কিটোসিস নামক একটি বিপাকীয় অবস্থায় চলে যায়। এই অবস্থায় বিভিন্ন রাসায়নিক তৈরি হয় বলে শরীরে অপ্রীতিকর গন্ধ তৈরি হয়।
কিডনি নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে প্রোটিন ভেঙে অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি হয়।
এ থেকে তৈরি হয় নাইট্রোজেন বা বর্জ্য পদার্থ। যেসব রোগীর কিডনির বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে দুর্বল কিডনি শরীর থেকে অতিরিক্ত বর্জ্য পদার্থ নিষ্কাশনের জন্য আরও বেশি শক্তি ক্ষয় করে। এর ফলে কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
পানিশূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে
অতিরিক্ত নাইট্রোজেন বের করার জন্য শরীরে বিভিন্ন তরল ও পানির নিষ্কাশন বেড়ে যায়। স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তৃষ্ণার্ত না করেও এটি আপনাকে পানিশূন্য করে দিতে পারে।
ডায়রিয়া হতে পারে
অত্যধিক দুগ্ধজাত অথবা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে আঁশের অভাব দেখা দিতে পারে। এতে ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি বিশেষভাবে সত্য হবে, যদি আপনার দুধজাতীয় খাবার খাওয়ায় সমস্যা থাকে কিংবা ভাজা মাংস, মাছ এবং হাঁস-মুরগির মতো উৎস থেকে প্রোটিন গ্রহণ করেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে
অনেকে শর্করা কমিয়ে দিয়ে প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। তাঁদের ক্ষেত্রে শরীরে আঁশের ঘাটতি হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হতে পারে। দীর্ঘ সময় প্রতিদিন একটানা ১০০ গ্রামের বেশি লাল মাংস খেলে হৃদ্রোগের আশঙ্কা, ব্রেইন স্ট্রোকের ঝুঁকি, বৃহদন্ত্র ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ছাড়া বেশি প্রোটিন গ্রহণ ফুসফুসের নানা রোগে আক্রান্ত হওয়া, কোলন ও স্তন ক্যানসারে ভূমিকা রাখে। এমনকি অতিরিক্ত লাল মাংস গ্রহণে আর্থ্রাইটিস, গাউট, পেপটিক আলসার, পিত্তথলিতে পাথর, প্যানক্রিয়াস প্রদাহ, কিডনি রোগসহ বিভিন্ন জটিলতা তৈরি করে।
লেখক: পুষ্টিবিদ, ফরাজি হসপিটাল, বারিধারা

একসময়কার আভিজাত্যের প্রতীক সেই ভুঁড়িই এখন চিন্তার কারণ। ভারতে বাড়ছে স্থূলতা সমস্যা। আর আপাত নিরীহ সেই ভুঁড়িই হয়তো সবচেয়ে বড় বিপদ ডেকে আনছে। ২০২১ সালে ভারতে ১৮ কোটি মানুষ ছিলেন স্থূল বা অতিরিক্ত ওজনের। বিশ্বে স্থূল মানুষের সংখ্যার দিক থেকে ভারতের অবস্থা ছিল দ্বিতীয়।
১৩ এপ্রিল ২০২৫
দাঁতের সমস্যা এখন আর শুধু বয়স্কদের নয়, সব বয়সে দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, বয়স বাড়লে দাঁত দুর্বল হয়। আসলে তা নয়। তবে দাঁতের সমস্যায় বেশির ভাগ কারণই প্রতিরোধযোগ্য। নিয়মিত যত্ন নিলে আর সঠিক অভ্যাসেই দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।
১ দিন আগে
স্পন্ডিলাইটিস হলো মেরুদণ্ডের বাত অথবা আর্থ্রাইটিস। এতে কশেরুকা (মেরুদণ্ড গঠন করে এমন হাড়) ও মেরুদণ্ড ও শ্রোণি চক্রের মাঝের সন্ধিতে প্রদাহ দেখা দেয়। ফলে মেরুদণ্ডের চারপাশের রগ, লিগামেন্ট বা সন্ধি বন্ধনীতে ব্যথা শুরু হয়।
১ দিন আগে
পিরিয়ডের সময় কী পরিমাণ রক্তপাত হলে তাকে অতিরিক্ত ধরা হবে, তার নির্দিষ্ট সংজ্ঞা হয়তো অনেকের জানা নেই। এমন সমস্যা এক দিনে তৈরি হয় না। আপনার শরীরের ভেতরকার কোনো সমস্যাই এর জন্য দায়ী। তাই এমন সমস্যায় অবশ্যই ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবতে হবে।
১ দিন আগে