Ajker Patrika

সিজার-পরবর্তী ব্যায়াম

উম্মে শায়লা রুমকী
সিজার-পরবর্তী ব্যায়াম

বেশির ভাগ নারীর একটি সাধারণ প্রশ্ন হলো, সিজারের ঠিক কত দিন পর থেকে ব্যায়াম করা যায়? এর উত্তরটা হলো, প্রত্যেকের শরীরের গঠন আলাদা। গর্ভকালীন কোনো জটিলতা ছিল কি না, তার ওপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে।

কিন্তু সাধারণভাবে হিলিং বা পুরো চামড়া জোড়া লাগতে ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগে। অনেক সময় ওপরের চামড়া শুকালেও ভেতরের স্তরগুলো পুরোপুরিভাবে না-ও শুকাতে পারে! তাই যেকোনো ব্যায়াম করার আগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সিজার-পরবর্তী ব্যায়াম 
সাধারণত সিজারের দু-এক দিন পর থেকে দুটো ব্যায়াম করা জরুরি।

শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
প্রথম দিকে শুয়ে করা ভালো। চিৎ হয়ে শুয়ে ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস নিন, তিন সেকেন্ড ধরে রেখে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। তিন বেলা করে এই প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি করুন পাঁচবার। ছয় সপ্তাহ পার হয়ে গেলে ব্রিদিং এক্সারসাইজ দ্বিতীয় ধাপে করবেন। এবার শুয়ে পেটে এক হাত রাখুন। নাক দিয়ে শ্বাস নিন, খেয়াল করুন পেট ফুলে উঠছে কি না। এরপর দশ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। এবার মুখ দিয়ে শিস দেওয়ার মতো করে শ্বাস ছেড়ে দিন। আট থেকে দশবার পুনরাবৃত্তি করুন। দিনে দুই বেলা এই ব্যায়াম করতে পারবেন।

কিগেল এক্সারসাইজ
কিগেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যায়াম। প্রথম দিকে ক্যাথেটার খুলে ফেলার পর থেকে কিগেল করতে পারেন। চিৎ হয়ে শুয়ে পেলভিক ফ্লোর মাংসপেশি শক্ত করুন, পাঁচ সেকেন্ড ধরে রাখুন, এবার শিথিল করুন। পাঁচ থেকে আটবার প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি করুন। সহজভাবে বললে, অনেক সময় আমরা প্রস্রাব আটকে রাখতে যেমন তলপেটের নিম্ন ভাগের মাংসপেশি শক্ত করে ফেলি, অনেকটা সে রকম।

হাঁটা
প্রথম চার থেকে ছয় সপ্তাহ বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। পরবর্তী সময়ে বেশি ব্যায়াম করতে এই বিশ্রাম দরকার, এতে কাটা অংশ পুরোপুরি শুকায়। এই বিশ্রামের সময়টাতে খুব ধীরগতিতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট হাঁটতে পারেন। ছয় সপ্তাহ পর থেকে গতি বাড়িয়ে দশ থেকে পনেরো মিনিট হাঁটা দরকার। এরপর ছয় মাস পর থেকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারবেন। তবে পুরোপুরি পরিশ্রমযুক্ত ব্যায়াম বা অ্যারোবিক ব্যায়াম, যেমন জগিং, ড্যান্সিং, দৌড়ানোর মতো ব্যায়াম করতে এক বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করা জরুরি। অনেকের তলপেটের মাংসপেশি বেশ খানিকটা ঝুলে যায়।

এমনটা হলে ছয় মাস পর থেকে পেটের আলাদা ব্যায়াম শুরু করতে পারেন। চিৎ হয়ে শুয়ে দুই পা একসঙ্গে তুলে ধরতে হবে। ৪৫ ডিগ্রি তুলে ধরতেই পেটে চাপ অনুভব করবেন, এই অবস্থানে দশ সেকেন্ড ধরে রাখুন। দশবার পুনরাবৃত্তি করুন। এই ব্যায়াম করতে অসুবিধা হলে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা দরকার। মনে রাখবেন, কোনো ব্যায়ামই শরীরের সহ্য ক্ষমতার বাইরে করা যাবে না।

লেখক: ফিজিওথেরাপি পরামর্শক, ফিজিক্যাল থেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার (পিটিআরসি)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত