Ajker Patrika

শিশুর দাঁতের জন্য

ডা. পূজা সাহা
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ০২
শিশুর দাঁতের জন্য

কীভাবে শিশুদের দাঁতের যত্ন নিতে হয়—প্রতিটি মা-বাবার জন্য এটি খুব সাধারণ জিজ্ঞাসা।

শিশুদের দুধদাঁত জন্মের ছয় মাস থেকে আড়াই বছর পর্যন্ত গজাতে থাকে। বুকের দুধ খেলে শিশুর মুখের ব্যায়াম হওয়ায় চোয়াল সুগঠিত হয়। এ জন্য দাঁত আগে গজায়। ফিডার খাওয়া শিশুদের অনেক সময় প্রথম দাঁত এক বছর পরেও গজাতে পারে। এতে ভয়ের কিছু নেই। ৬ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত দুধদাঁত ওঠার পর স্থায়ী দাঁত ওঠে।

শিশুর দাঁতে ক্ষয় বা গর্ত, অর্থাৎ ডেন্টাল ক্যারিজ হয়। এটিই আমাদের দেশে পরিচিত দাঁতের পোকা হিসেবে। মূলত চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্য মুখের ভেতরে একধরনের জীবাণুর সঙ্গে মিশে অ্যাসিড তৈরি করে। এই অ্যাসিড দাঁতের ওপরের শক্ত আবরণ বা এনামেলকে ক্ষয় করে গর্তের সৃষ্টি করে। শিশুদের দাঁতের ব্যথা হওয়ার বড় কারণ এ ধরনের ক্ষয়।

দাঁত ক্ষয়ের কারণ

  • অনেক শিশুই মায়ের বুকের দুধ বা ফিডার খেতে খেতে ঘুমায়। দীর্ঘক্ষণ ঘুমানোর কারণে দুধের মিষ্টি দাঁতের এনামেলের ওপর পেলিক্যাল বা ডেন্টাল প্ল্যাক নামে একধরনের আবরণ সৃষ্টি করে। এই পেলিক্যাল লাখ লাখ জীবাণুর সঙ্গে মিশে অ্যাসিড তৈরি করে, যা শিশুর দাঁত ক্ষয়রোগের প্রধান কারণ।
  • মিষ্টিজাতীয় খাবার যেমন—চকলেট, আইসক্রিম, কোক, জুস শিশুর দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো খেয়ে দাঁত পরিষ্কার না করলে দাঁত ক্ষয় হতে পারে।

যা করবেন

  • শিশুর দাঁত ঠিকমতো পরিষ্কার রাখবেন। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও সকালে ঘুম থেকে উঠে নাশতার পরে দাঁত ব্রাশ করার অভ্যাস করাতে হবে। শিশু যত দিন পর্যন্ত নিজে ব্রাশ করতে পারবে না, তত দিন মা-বাবাই দাঁত ব্রাশ করে দেবেন।
  • শিশুর দাঁত ওঠার আগে পরিষ্কার সুতি কাপড় হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে মুখের ভেতর পরিষ্কার করে দেবেন। দাঁত ওঠার পর নরম বেবি টুথব্রাশ দিয়ে সতর্কতার সঙ্গে দাঁত ও জিহ্বা পরিষ্কার করতে হবে। বেবি টুথপেস্ট না পেলে বা বড়দের টুথপেস্ট খেয়ে ফেলার আশঙ্কা থাকলে পেস্ট না দিলেও চলবে। 

অভিভাবকদের অনেকেরই ধারণা, দুধদাঁত তো পড়েই যাবে, এর বেশি যত্ন নেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু সময়ের আগে দুধদাঁত পড়ে গেলে বা ফেলে দিতে হলে স্থায়ী দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে ওঠে। দাঁতের ধর্মই হচ্ছে ফাঁকা জায়গা দখল করা। কোনো দাঁত সময়ের আগে ফেলে দিলে পেছনের দাঁত সেখানে হেলে পড়ে অথবা জায়গা দখল করে নেয়। এ জন্য সেই শূন্যস্থানে যে স্থায়ী দাঁত ওঠার কথা ছিল, সেটি ওঠার জায়গা না পেয়ে অন্য দিক দিয়ে ওঠে। তখনই দাঁত আঁকাবাঁকা হয়। এ ছাড়া হাতের বুড়ো আঙুল চোষা, মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া, জিহ্বা দিয়ে ধাক্কা দেওয়া, পেসিফায়ার ব্যবহার করা, দীর্ঘদিন বোতলের মাধ্যমে খাওয়ানো, এসব কারণে স্থায়ী দাঁত উঁচু হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 
শিশুর প্রাথমিক দাঁত বা দুধদাঁত যত ভালো থাকবে, ভবিষ্যতে স্থায়ী দাঁত ততই সুন্দর হবে। শিশুর দাঁতের ক্ষয়রোগ এড়াতে দুধদাঁতের যত্ন নিতে হবে। শিশুর প্রথম ছয় বছরে অন্তত তিনবার ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে শিশুর দাঁতের কোনো সমস্যা না হয়।

লেখক: ডেন্টাল সার্জন, সিকদার ডেন্টাল কেয়ার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাংলাদেশের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাল দিল্লি

‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ ব্যানারে বিমানবন্দর এলাকায় আ.লীগের মিছিল

ইটনায় এবার ডিলার নিয়োগে ঘুষ চাওয়ার কল রেকর্ড ফাঁস

কুষ্টিয়ায় গভীর রাতে বিএনপি নেতার বাড়িতে গুলি, দেখে নেওয়ার হুমকি

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত