Ajker Patrika

রোগ শনাক্তে এন্ডোসকপির প্রয়োজনীয়তা

ডা. মোহাম্মদ তানভীর জালাল 
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৪: ৫৬
Thumbnail image

বর্তমানে সারা বিশ্বেই কিছু রোগ শনাক্তে এন্ডোসকপি খুব জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। আর চিকিৎসকদের কাছে এই পরীক্ষা পদ্ধতি একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সহায়ক পদ্ধতি।

এন্ডোসকপি হলো চিকিৎসাজনিত কারণে শরীরের ভেতরের কোনো অঙ্গ বাইরে থেকে সরাসরি দেখা। এটি একটি পরীক্ষা পদ্ধতি, যা দিয়ে শরীরের খাদ্যনালির সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন অর্গান পর্যবেক্ষণ করা হয়। আবার এর মাধ্যমে শরীরের ফাঁপা অঙ্গগুলোর ভেতরেও পরীক্ষা করা যায়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে খুব দ্রুত রোগ নির্ণয় করা যায়। এই যন্ত্রে দুটি নল থাকে। একটি দিয়ে বাইরে থেকে রোগীর শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গের ভেতরে তীব্র আলো ফেলা হয়। অর্থাৎ একটি ফ্লেক্সিবল টিউবের মাথায় লাইট ও ক্যামেরা লাগানো থাকে, যা রোগীর শরীরের ভেতরে প্রবেশ করানো হয়। এর মাধ্যমে শরীরের ভেতরের অবস্থা বা ছবি চিকিৎসকেরা পর্যবেক্ষণ করেন।

তবে বিভিন্ন রোগের জন্য বিভিন্ন ধরনের এন্ডোসকপি করা হয়। এটি ব্যবহার করে চিকিৎসকেরা শরীরের ভেতরে যেকোনো ধরনের অস্বস্তি অবস্থা, ক্ষত বা প্রদাহ এবং অস্বাভাবিক কোষ বৃদ্ধি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে শনাক্ত করেন।

যেসব অঙ্গে এন্ডোসকপি করা হয়
খাদ্যনালি, ফুসফুস ও বুকের কেন্দ্রীয় বিভাজন অংশ, স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ, পাকস্থলী ও পেলভিস, নাক, শ্বসনতন্ত্র, কান, মূত্রনালির ভেতরের অংশ, জয়েন্ট, তলপেট ইত্যাদি।

এন্ডোসকপি কেন করা হয়
যেসব কারণে এন্ডোসকপি করা হয় সেগুলো হলো: 
· পেটব্যথা
· আলসার
· খাবার গিলতে অসুবিধা
· খাদ্যনালিতে রক্তপাত
· পেটের অভ্যাসে পরিবর্তন আসা ইত্যাদি।

খাদ্যনালির ক্ষেত্রে ক্যানসার, পলিপ, স্ট্রিকচার, রিফ্ল্যাক্স ইসোফ্যাজাইটিস, আলসার, অ্যাকালেশিয়া কার্ডিয়া, ডাইভার্টিকুলাম ইত্যাদি রোগ নিরূপণ করা হয় এন্ডোসকপি দিয়ে। এ ছাড়া পাকস্থলী ও ডিওডেনামের আলসার, ক্যানসার, পাকস্থলীর বহির্মুখ সরু হয়ে যাওয়া বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণসহ আরও অনেক রোগের কারণ নির্ণয় করা হয় এ পদ্ধতিতে।

এন্ডোসকপি করার পূর্বে করণীয়
· ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা খালি পেটে থাকতে হবে
· টেস্ট করার সময় চেতনানাশক স্প্রে বা ওষুধ খাওয়ানো হয়।
· ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হয়।

যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে
· বমি বমি ভাব হতে পারে।
· পেটে অল্প সময়ের জন্য ব্যথা হতে পারে।
· ঘুম ঘুম লাগতে পারে।
· অল্প রক্তপাত হতে পারে।
· মৃদু সংক্রমণও হতে পারে ইত্যাদি।

এটি করার সময় যেহেতু একটি নল সরাসরি ক্ষতস্থানে বা প্রয়োজনীয় স্থানে প্রবেশ করানো হয়, তাই সেটি দিয়ে সেই ক্ষতস্থানের স্যাম্পল নিয়ে আসা সম্ভব হয়। তবে কেবল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা সার্জন দিয়ে এন্ডোসকপি করতে হয়। অন্যথায় সমস্যা হতে পারে।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ এবং কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
চেম্বার: ১৯ গ্রিন রোড, এ কে কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত