Ajker Patrika

দূরে থাক অবসাদ

ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২১, ১১: ০২
দূরে থাক অবসাদ

আনন্দ, ভয়, রাগ, দুঃখ—জন্মগতভাবে আমাদের এই চারটি অনুভূতি রয়েছে। এগুলো প্রকাশ করতে না পারলে আমরা বিভিন্ন মানসিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যাই। তার প্রভাব পড়ে শরীরে। মানসিক অবসাদ দূর করতে প্রয়োজনে ওষুধ ব্যবহার করা যেতেই পারে, কিন্তু তা একধরনের নির্ভরশীলতা তৈরি করতে পারে। ওষুধের অনিয়ম ও অপব্যবহার অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি করতে পারে। সেদিক থেকে সাইকোথেরাপি হলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ামুক্ত। সাইকোথেরাপি ব্যায়ামের মতো। এটি মস্তিষ্ক সজীব করবে বাস্তবতার সঙ্গে সংগতি রেখে।

সাইকোথেরাপির উপকারিত

  • মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা নামক অংশ ভয় ও অনুভূতি নিয়ে কাজ করে। যাঁরা বিষণ্নতা বা ডিপ্রেশনে ভুগছেন, তাঁদের অ্যামিগডালা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। সাইকোথেরাপি তাঁদের মস্তিষ্কের অ্যামিগডালা নামের অংশটি ধীরে ধীরে সংকুচিত করে আনে। ফলে বিষণ্নতায় ভোগা মানুষের কষ্ট কমে। আবার হিপোক্যাম্পাস নামে একটি অংশ আছে, যেটি আমাদের আবেগ ও স্মৃতি জমা রাখে। সাইকোথেরাপি এটিকেও ভালো রাখে।
  • মেডিকেল প্রিফ্রন্টাল করটেক্স, যা আমাদের উচ্চমার্গীয় চিন্তা ধারণ করে। এই উচ্চমার্গীয় চিন্তা সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে কাজ করে। সাইকোথেরাপি মস্তিষ্কের এই অংশগুলোতেও পরিবর্তন আনতে পারে।
  • সাইকোথেরাপি মস্তিষ্কের আকৃতি পরিবর্তন করতে পারে।
  • মানুষ যখন নতুন কিছু শেখে, তখন তার মস্তিষ্কের স্নায়ুর সংযোগ পরিবর্তন করে। এই তত্ত্বের ওপর চলে সাইকোথেরাপি। মস্তিষ্ক সব সময় বদলাতে পারে। তাই সাইকোথেরাপির কোনো বয়স নেই।
  • অ্যামিগডালা যত বড় হবে, দুশ্চিন্তা তত বেশি হবে। সামাজিক উদ্বিগ্নতা বা সোশ্যাল অ্যাংজাইটিতে আক্রান্ত যেকোনো বয়সের মানুষের অ্যামিগডালার আয়তন কমিয়ে আনতে পারে সাইকোথেরাপি। ফলে ভয় কম তৈরি হয়। আক্রান্ত ব্যক্তি আরাম বোধ করে।

ওষুধ সেবন ছাড়াই মনঃকষ্ট নিরাময়ে সাইকোথেরাপি অসাধারণ কাজ করে। একটাই কথা, সাইকোথেরাপিতে দীর্ঘ সময় ও ধৈর্য প্রয়োজন। তবে মনে রাখতে হবে, এই সময়টা ব্যক্তির অবচেতন মনের অনুভূতিগুলোকে মুক্তি দেয়।

লেখক: চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত