Ajker Patrika

শরীর বিষমুক্ত রাখুন

জাকিয়া নাজনীন
আপডেট : ০৭ এপ্রিল ২০২২, ০৮: ৪০
শরীর বিষমুক্ত রাখুন

আজ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। এ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের মূল প্রতিপাদ্য, ‘আমাদের গ্রহ, আমাদের স্বাস্থ্য।’ এবারের লক্ষ্য, পৃথিবী এবং এখানে বসবাসকারী মানুষের মঙ্গলের বিষয়ে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ। পরিবেশদূষণ বাড়ার ফলে ক্যানসার, অ্যাজমা, হৃদ্‌রোগের মতো রোগগুলোর ঝুঁকি বাড়ছে দিন দিন। ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।

পরিবেশের অন্যান্য দূষণের মধ্যে আমাদের দেশে বেড়েছে বায়ুদূষণ। ফলে তা পরিবেশের জন্য তো বটেই, মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সুস্থ থাকতে তাই ব্যক্তিগত সাবধানতা অবলম্বন ভীষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। বায়ুদূষণের কারণে শ্বাসতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যখন বাতাস দূষিত এবং বৃষ্টি হচ্ছে, তখন মাটিতেও বাতাসে মিশে থাকা রাসায়নিক উপাদান মিশে যাচ্ছে। এ ছাড়া মাটি আরও নানাভাবেই দূষিত হচ্ছে। ফলে দূষিত বাতাস থেকে যে রাসায়নিক উপাদানগুলো মাটিতে চলে যাচ্ছে, সেগুলো ফল, সবজি ও অন্যান্য শস্যকেও দূষিত করছে। ফলে দৈনন্দিন খাবারের মাধ্যমে তা আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে, যা স্বাস্থ্যহানির কারণ।

 বায়ুদূষণ থেকে বাঁচতে

  • করোনা সাবধানতা ছাড়াও বায়ুদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে বাইরে বের হলে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
  • শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা ছাড়াও বায়ুদূষণের কারণে আমাদের ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বায়ুদূষণ ত্বকের অ্যালার্জির অন্যতম কারণ। তাই বাহ্যিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতন হতে হবে।
  • শরীরকে বিষমুক্ত করতে ডিটক্সিফিকেশনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। যে দূষণ বাইরে থেকে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে তা পরিষ্কারের জন্য ডিপ ব্রিদিংয়ের অভ্যাস বা শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম সাহায্য করবে।
  • প্রতিনিয়ত বাতাস দূষিত হচ্ছে। এর মধ্য় থেকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন শরীরে জোগান দিতে হবে। খুব ভোরের দিকে বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। ফলে সে সময় যদি শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যায়, সেটা শরীরের জন্য ভালো কাজ করবে।
  • ফল ও সবজি থেকে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান দূর করার জন্য ফল ও সবজি বাজার থেকে আনার পর এক ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে তারপর কাটুন। তাতে ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান কিছুটা হলেও কমে আসবে বলে আশা করা যায়।

 শরীর ডিটক্সিফিকেশন একটি বিশদ ব্যাপার। ডিটক্সের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ফাস্টিং বা না খেয়ে থাকা ও কিছু হারবাল জুস পান করা। এখন রোজার মাস। প্রতিদিন সাহ্‌রি ও ইফতারের মধ্যবর্তী যে সময় ফাস্টিং এমনিতেই হয়ে যাচ্ছে এখন। ডিটক্সিফিকেশনের জন্য যে জুসের কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো রোজা শেষে ইফতারে প্রথম পানীয় হিসেবে পান করা যেতে পারে। তবে অ্যালার্জি বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে।

এখন পালংশাকের মৌসুম না হলেও বাজারে পাওয়া যায় শাকটি। সেটির স্মুদি বানিয়ে পান করা যায় ডিটক্স পানীয় হিসেবে। পালংশাকের সঙ্গে আদা, কলা, বাদাম ব্লেন্ড করে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে স্মুদি। পালংশাক না পেলে শসা দিয়েও ডিটক্স পানীয় তৈরি করা যায়। পানিসমৃদ্ধ শসা ও পুষ্টিগুণে ভরপুর পুদিনা স্বাস্থ্যকর খাবার। একটি বড় জারে পানি নিয়ে তাতে কয়েক টুকরো শসা ও তাজা পুদিনাপাতা দিয়ে এটি কিছু সময়ের জন্য ঢেকে রাখুন। তারপর সে পানি পান করুন।

এ ছাড়া সাহ্‌রি ও ইফতারে প্রচুর পানি পান করুন। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান শরীর বিষমুক্ত করতে সহায়তা করে।

লেখক: পুষ্টিবিদ ও হোলস্টিক লাইফস্টাইল মোডিফায়ার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত