Ajker Patrika

পলিথিনে বিপদ শাজাহানপুরে

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ২৮
Thumbnail image

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। যেকোনো দোকান থেকে কিছু কিনলেই সঙ্গে মিলছে পলিথিন ব্যাগ। সবজি দোকান, মুদি দোকান, পান-সিগারেটের দোকান, রেস্টুরেন্ট, ফার্মেসি, মাছ, মাংসের দোকানসহ সব ধরনের দোকানেই পলিথিনের একচ্ছত্র আধিপত্য আছে। কম দাম, ওজন কম, সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং সব জায়গায় পাওয়া যায় বলে এই ব্যাগের চাহিদা ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছে বেশি। অথচ ব্যবহারের পর এই পলিথিনগুলোর ঠিকানা হয় বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গা, নর্দমা, ডোবা, নালা, আবাদি জমি এবং নদীতে।

পলিথিনের বিকল্প ব্যবহার করতে না পারলে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে পলিথিনের উৎপাদন বন্ধসহ পলিথিনের বিকল্প ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করার দাবি তুলেছেন।

উপজেলার আড়িয়াবাজার স্ট্যান্ডের মুদি ব্যবসায়ী রাজু আহম্মেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্থানীয় পাইকারি দোকান থেকে আমি এবং আমার মতে ব্যবসায়ীরা পলিথিন ব্যাগ কিনে থাকি। গড়ে প্রতিদিন প্রতিটি দোকান থেকে বিভিন্ন আকারের অন্তত ২০টি করে পলিথিন ব্যাগ ক্রেতাদের কাছে যায়। উপজেলায় সব মিলিয়ে হাজারো দোকান রয়েছে।

রাজু আহম্মেদ আরও বলেন, বেশির ভাগ ক্রেতারাই সঙ্গে ব্যাগ বহন করেন না। তাঁরা মনে করেন দোকানদার পলিথিন ব্যাগে পণ্য দেবেন। কোনো ক্রেতা ২০ টাকার একটি বিস্কুট কিনলেও তাঁকে আমরা একটা পলিথিন দিই। ব্যবসায়ীরা মনে করি পলিথিন ব্যাগে পণ্য না দিতে পারলে ক্রেতাকে অসম্মান করা হয়।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক মাছ ব্যবসায়ী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার দোকান থেকে মাছ কিনে পাটজাত ব্যাগে নিয়েছেন এমন ক্রেতা সপ্তাহ খানিকের মধ্যে পাইনি। যে পরিমাণেই হোক কেউ মাছ কিনলে তাকে পলিথিন ব্যাগে ভরেই দিয়েছি।’

মাঝিড়া স্ট্যান্ড এলাকার একজন শিক্ষক বলেন, পাটজাত একটি ব্যাগ কিনতে অন্তত ৩০ টাকা লাগে। সেটাকে বাড়িতে রেখে নির্দিষ্ট সময় পাওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। মানুষের ব্যস্ততা এখন অনেক বেশি। কখন কোথায় থেকে বাজার করতে হয় তা বলা যায় না। যেখানে পলিথিন ব্যাগ ফ্রি পাওয়া যায়। সেখানে টাকা খরচ করে প্রতিবার ব্যাগ কেনাও সম্ভব না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক প্রভাষক আবু সাঈদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, পলিথিন মানুষের জন্য অভিশাপ। এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ পলিথিন ব্যবহার হয়েছে; সেই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে আমাদের দাম দিতে হবে। প্রচলিত আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে এর উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। এ জন্য সরকার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং প্রশাসনকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

পলিথিনের শেষ ঠিকানা হচ্ছে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গা, ড্রেন, ডোবা, নালা, কৃষি জমি এবং নদীতে। পলিথিন মাটিতে পচেনা। এর ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে মাটির উপরিভাগের পানি নিচের স্তরে যেতে পারে না। জলাবদ্ধতার বড় কারণ পলিথিনের ব্যাগ। এভাবে চলতে থাকলে আর কিছুদিন পর বিভিন্ন জায়গার মাটিতে গাছ হবে না। ইতিমধ্যে করতোয়া নদীসহ অনেক জলাশয় পলিথিন দিয়ে ভরাট হয়েছে।

পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে অভিযান চালানো বিষয়ে জানতে চাইলে শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত