Ajker Patrika

নারীর মৃত্যু, ফসলের ক্ষতি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫৮
নারীর মৃত্যু, ফসলের ক্ষতি

কালবৈশাখীতে গাছ ভেঙে মাথায় পড়ায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকজন। এ ছাড়া ঘরবাড়ি, গাছগাছালিসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

রৌমারী: কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ঝড়ের আঘাতে ছবিয়া খাতুন (৪৩) নামের এক নারী মারা গেছেন এবং ১০ জন আহত হন।

ছবিয়া খাতুন উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমরভাঙ্গী (ভিটাপাড়া) গ্রামের দুলাল হোসেনের স্ত্রী। আহতরা হলেন একই গ্রামের শাহাদৎ হোসেন, লালবানু, লালকুড়া গ্রামের নুর হোসেন, আব্দুল হাই, লুৎফর রহমান, মরিয়ম, ফরিজল, আছমা খাতুন, হনুফা, মিনহাজ, হারিজ। বন্দবেড় ইউনিয়নের ফলুয়ারচর গ্রামের মামুন মিয়া।

ছবিয়ার স্বামী দুলাল হোসেন বলেন, ‘আকাশ খারাপ দেখে আমরা বাড়ির উঠানে রাখা ভুট্টা ঘরে তুলছিলাম। এ সময় ঝড়ের তাণ্ডবে একটি গাছ ভেঙে আমাদের ওপর পড়ে। আমার স্ত্রী মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

রৌমারীর বকবান্দা নামাপাড়া গ্রামের ফজর আলী বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে নতুন বাড়ি বানিয়েছিলাম। ঝড় বাড়ি উড়িয়ে নিয়ে গেছে। চালের একটি টিনেরও খোঁজ পাইনি। এখন কীভাবে থাকব?’

রৌমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান জানান, উপজেলার রৌমারী সদর, বন্দবেড় ও যাদুরচর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীতে চারটি বাড়ি নিশ্চিহ্ন, তিন শতাধিক ঘর ভেঙে গেছে, উল্টে গেছে পাঁচটি বৈদ্যুতিক খুঁটি। আনুমানিক তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

চিলমারী: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ঝড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপড়ে পড়েছে শত শত গাছ ও বাঁশঝাড়।

উপজেলার বেলেরভিটা এলাকার কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগিয়েছিলেন। হঠাৎ কালবৈশাখীর তাণ্ডবে বেশির ভাগ জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই এলাকার কৃষক আকবর আলী বলেন, ‘ঝড়ে আমার দুই বিঘা জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঝড়ে ১৫০ হেক্টর বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া ২৫ হেক্টর ভুট্টাখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

বোদা: পঞ্চগড়ের বোদায় উপজেলার বেংহারী বনগ্রাম, বড়শশী ও কাজলদিঘী কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কয়েক মিনিটের শিলাবৃষ্টিতে হতাহতের কোনো খবর না পাওয়া গেলেও ক্ষতি হয়েছে শসা, আম, লিচু ও ধানের।

বোদার বড়শশী এলাকার বাসেদ আলী জানান, আচমকা ঝড়ে বোরো ধানের ক্ষতি হয়। আড়াই বিঘা জমির অধিকাংশ ধান নষ্ট হয়ে গেছে।

বোদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন অর রশিদ জানান, শিলাবৃষ্টিতে কয়েকটি ইউনিয়নের ক্ষতি হয়। তবে ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি।

পাটগ্রাম: লালমনিরহাটের পাটগ্রামে শিলাবৃষ্টিতে শত শত হেক্টর ভুট্টা ও ধানখেতের ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া অনেক বসতঘরের টিন ছিদ্র হয়ে গেছে।

উপজেলার পাটগ্রাম পৌরসভা, জগতবেড়, জোংড়া, শ্রীরামপুর, বুড়িমারী ও পাটগ্রাম ইউনিয়নে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

পাটগ্রাম ইউনিয়নের টেপুরগাড়ি গ্রামের কৃষক নুর ইসলাম বলেন, ‘যেভাবে বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে, তাতে ভুট্টা শেষ, বোরো ধানের খেতও শেষ। আমার প্রায় ১৫ একর ভুট্টা ও ধানখেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গ্রামের বহু কৃষকের শত শত একর ধান ও ভুট্টাখেতের ক্ষতি হয়েছে।’

পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল গাফ্ফার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারও হাত নেই। ভুট্টাখেতের পানি দ্রুত নিষ্কাশন ও অবশিষ্ট বোরোখেতের পরিচর্যার জন্য মাঠপর্যায়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত