মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
শিল্পী-সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের একটা বড় অংশকে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতেই হয়। এই সংগ্রামে অত্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে যুক্ত ছিলেন নাট্যকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অন্য সব মাধ্যম।
মুক্তিযুদ্ধের পরের কথা লিখতে গেলে অবশ্যই ষাটের দশকের কথা বলতে হয়। আবার ষাটের দশকের কথা বলতে গেলে পঞ্চাশ দশকটা আসে। কেমন ছিল সেই দুটি দশক? পূর্ব বাংলার মানুষ দরিদ্র—তার মধ্যে নিম্নবিত্ত আছে কিছু, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের সংখ্যা খুব কম। স্কুলের শিক্ষকেরা খুবই অল্প বেতন পান, কেরানিকুল, পিয়ন চাপরাশিদের জীবন-জীবিকা বড়ই দুর্বিষহ। দেশভাগের পর একদল লোক হিন্দুর সম্পত্তি দখল, কালোবাজারি, নানা ধরনের দালালি করে বেশ কিছু পয়সা কামিয়েছে। শিল্প-সাহিত্যে হিন্দুদেরই ছিল সিংহভাগ অধিকার। তাদের দেশত্যাগের ফলে একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই শূন্যতা পূরণে মুসলিমদের মধ্যে একটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের প্রভাবে কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু হয়েছে। রাজনীতি টালমাটাল হলেও শিল্প-সাহিত্যের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়নি। বাম রাজনীতির ধারার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয়তাবাদী ধারাও প্রখর। বঞ্চনা পাকিস্তানিদের অপরাজনীতির ফলে প্রবল হলেও প্রতিবাদী চেতনাও বাড়তে থাকে সর্বত্রই। ষাটের দশকে এই চেতনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এই সময় মধ্যবিত্তের মধ্যে শিল্পের একটা রুচিও তৈরি হয়। উচ্চাঙ্গসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত ও আধুনিক গানের একধরনের সমঝদারও তৈরি হয়। যাত্রা-নাটকেও দর্শক আগের চেয়ে সর্বত্র বেশি দেখা দিতে থাকে। একদিকে মিছিল, সমাবেশ, কারাবরণ ও রাজনৈতিক নিপীড়ন, অন্য দিকে নানা শিল্পের চর্চায় এ দেশের মধ্যবিত্ত সমৃদ্ধ হতে থাকে। শিল্প ও সংগ্রামের চৈতন্যই উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধের দিকে অগ্রসর হয়।
মুক্তিযুদ্ধে অসমসাহসী তরুণদের আত্মত্যাগ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবন বাজি রাখা অংশগ্রহণের ফলে একটা বড় বিজয় অর্জিত হয়। বাঙালি একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে স্বাধীন এক জাতিসত্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যাঁরা দেশ শাসন করবেন, তাঁরা বাঙালি, তাঁদের ভাষা বাংলা এবং নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মালিকানা বাঙালি ও আরও ৪০টি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর।
১৯৭২ সাল থেকেই নিয়মিত নাট্যচর্চা শুরু হয়। কাব্যে-চিত্রকলায় বাঙালির পরিচয়টা কীভাবে প্রকাশ করা যায়, তার জন্য একটা যেন জীবন-মরণ পণ শুরু হয়ে যায়। যথার্থই শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে এক অভ্যুত্থান। মুক্তিযুদ্ধের তাজা স্মৃতি নিয়ে চলচ্চিত্র, কবিতা, নাটক, চারুকলার সূচনা হয়। কিন্তু রাজনীতি একটা অস্থিরতায় পড়ে যায়। এই অস্থিরতার একটা চূড়ান্ত পরিণতি পঁচাত্তরের মধ্য-আগস্টের নিশি হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড শিল্পীদের মানসভূমিতে একটা বিরাট আঘাত হানে। সুবিধাবাদী রাজনীতিকেরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নামে কেউ কেউ দৃশ্যের অন্তরালে চলে যায় আর কেউ কেউ নিজেদের ভোল পাল্টে ক্ষমতার কাছে আশ্রয় নেয়। শিল্পী-সাহিত্যিক ও একশ্রেণির নাগরিক এবং ছাত্ররা এই পরিস্থিতিতে তাদের আপসহীন ভূমিকা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে আশির দশকজুড়ে একটা রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন চলে, যার ফলে সেনা শাসনের অবসান ঘটে।
কিন্তু সেই শুরু থেকেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। তাই শিল্পী-সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের একটা বড় অংশকে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতেই হয়। এই সংগ্রামে অত্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে যুক্ত ছিলেন নাট্যকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অন্য সব মাধ্যম। চলচ্চিত্রের কর্মীরাও তাঁদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে কাজ করতে থাকেন। কিন্তু সত্তরের দশকের যে চলচ্চিত্র, তা আশির দশকে এসে এক ভয়ংকর রূপ নেয়। অশ্লীলতা ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেয়। সে সময়ে মুষ্টিমেয় কিছু চলচ্চিত্রকার প্রাণপণ চেষ্টা করে দু-চারটি ছবি করে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন।
নব্বইয়ের দশকে এসে মিডিয়া কিছুটা মুক্ত হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের একচ্ছত্র আধিপত্যের জায়গায় বেশ কয়েকটি টেলিভিশন যুক্ত হয়। এই সময়ে একুশে টেলিভিশন এসে সংবাদ প্রচারকে প্রাচীন পদ্ধতি থেকে অবমুক্ত করে। এর প্রভাব অন্যান্য চ্যানেলেও দেখা দেয়। নতুন নতুন অনুষ্ঠানেও দর্শকেরা অনুপ্রাণিত হয়। এই সময়ে মঞ্চনাটকের ভালো ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী-পরিচালক মিডিয়ায় যুক্ত হন। এই যুক্ত হওয়ার ফলে মিডিয়া জনপ্রিয় হয় বটে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে নাট্যচর্চা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঐতিহাসিকভাবে এই ক্ষতি ক্ষণিকের। মঞ্চ তার নিজস্ব পরাক্রমেই চলতে থাকে। মিডিয়া খুবই বিজ্ঞাপনের কাছে অর্থনির্ভর। তাই এই মাধ্যমের মালিকদের সে রকম সংস্কৃতি না থাকায় অনুষ্ঠানের মানের চেয়ে বিজ্ঞাপনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। একসময় ভিন্ন রাজনীতির প্রভাবে বন্ধ হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত একুশে টেলিভিশন। ফলে অন্য চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনের কাছে আত্মসমর্পণ করে মাধ্যমটির অনুষ্ঠানের বিপর্যয় ডেকে আনে। কিন্তু সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু চ্যানেলে একুশের প্রভাব লক্ষ করা যায়। তাই তারা সংবাদের মাধ্যমে অনেক দুর্নীতিকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করেছে। সংবাদপত্র এসব ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে।
এর মধ্যেই এসেছে ইন্টারনেট। সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওটিটি প্ল্যাটফর্মসহ সব মাধ্যমই এখন জনপ্রিয়। তরুণ প্রজন্ম এসব ব্যবহার করতে খুবই সিদ্ধহস্ত। কিন্তু যখন গণজাগরণ মঞ্চ হয়েছিল, তখন তরুণেরা সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদমুখর হয়েছিল। প্রতিবাদমুখর সেই কিশোর-তরুণদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রবলভাবে লক্ষণীয়। মুক্তিযুদ্ধের ভালো নাটক, চলচ্চিত্রেও তাদের সরব উপস্থিতি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আজও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সেই গান তাদের মধ্যে সাড়া জাগায়। একটা গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে এ দেশের ৫০ বছরের রাজনীতি চলছে, তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের একটা অন্ধকার যুগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এসবকে প্রতিহত করার জন্য একটা দুর্বার সাংস্কৃতিক আন্দোলন যে প্রয়োজন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শিল্পী-সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের একটা বড় অংশকে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতেই হয়। এই সংগ্রামে অত্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে যুক্ত ছিলেন নাট্যকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অন্য সব মাধ্যম।
মুক্তিযুদ্ধের পরের কথা লিখতে গেলে অবশ্যই ষাটের দশকের কথা বলতে হয়। আবার ষাটের দশকের কথা বলতে গেলে পঞ্চাশ দশকটা আসে। কেমন ছিল সেই দুটি দশক? পূর্ব বাংলার মানুষ দরিদ্র—তার মধ্যে নিম্নবিত্ত আছে কিছু, মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত মানুষের সংখ্যা খুব কম। স্কুলের শিক্ষকেরা খুবই অল্প বেতন পান, কেরানিকুল, পিয়ন চাপরাশিদের জীবন-জীবিকা বড়ই দুর্বিষহ। দেশভাগের পর একদল লোক হিন্দুর সম্পত্তি দখল, কালোবাজারি, নানা ধরনের দালালি করে বেশ কিছু পয়সা কামিয়েছে। শিল্প-সাহিত্যে হিন্দুদেরই ছিল সিংহভাগ অধিকার। তাদের দেশত্যাগের ফলে একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সেই শূন্যতা পূরণে মুসলিমদের মধ্যে একটা সচেতনতা তৈরি হয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের প্রভাবে কবিতা, গল্প, উপন্যাস এবং লিটল ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু হয়েছে। রাজনীতি টালমাটাল হলেও শিল্প-সাহিত্যের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়নি। বাম রাজনীতির ধারার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয়তাবাদী ধারাও প্রখর। বঞ্চনা পাকিস্তানিদের অপরাজনীতির ফলে প্রবল হলেও প্রতিবাদী চেতনাও বাড়তে থাকে সর্বত্রই। ষাটের দশকে এই চেতনা ক্রমেই বাড়তে থাকে। এই সময় মধ্যবিত্তের মধ্যে শিল্পের একটা রুচিও তৈরি হয়। উচ্চাঙ্গসংগীত, রবীন্দ্রসংগীত ও আধুনিক গানের একধরনের সমঝদারও তৈরি হয়। যাত্রা-নাটকেও দর্শক আগের চেয়ে সর্বত্র বেশি দেখা দিতে থাকে। একদিকে মিছিল, সমাবেশ, কারাবরণ ও রাজনৈতিক নিপীড়ন, অন্য দিকে নানা শিল্পের চর্চায় এ দেশের মধ্যবিত্ত সমৃদ্ধ হতে থাকে। শিল্প ও সংগ্রামের চৈতন্যই উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান ও মুক্তিযুদ্ধের দিকে অগ্রসর হয়।
মুক্তিযুদ্ধে অসমসাহসী তরুণদের আত্মত্যাগ ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের জীবন বাজি রাখা অংশগ্রহণের ফলে একটা বড় বিজয় অর্জিত হয়। বাঙালি একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরে স্বাধীন এক জাতিসত্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। যাঁরা দেশ শাসন করবেন, তাঁরা বাঙালি, তাঁদের ভাষা বাংলা এবং নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মালিকানা বাঙালি ও আরও ৪০টি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর।
১৯৭২ সাল থেকেই নিয়মিত নাট্যচর্চা শুরু হয়। কাব্যে-চিত্রকলায় বাঙালির পরিচয়টা কীভাবে প্রকাশ করা যায়, তার জন্য একটা যেন জীবন-মরণ পণ শুরু হয়ে যায়। যথার্থই শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে এক অভ্যুত্থান। মুক্তিযুদ্ধের তাজা স্মৃতি নিয়ে চলচ্চিত্র, কবিতা, নাটক, চারুকলার সূচনা হয়। কিন্তু রাজনীতি একটা অস্থিরতায় পড়ে যায়। এই অস্থিরতার একটা চূড়ান্ত পরিণতি পঁচাত্তরের মধ্য-আগস্টের নিশি হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ড শিল্পীদের মানসভূমিতে একটা বিরাট আঘাত হানে। সুবিধাবাদী রাজনীতিকেরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের নামে কেউ কেউ দৃশ্যের অন্তরালে চলে যায় আর কেউ কেউ নিজেদের ভোল পাল্টে ক্ষমতার কাছে আশ্রয় নেয়। শিল্পী-সাহিত্যিক ও একশ্রেণির নাগরিক এবং ছাত্ররা এই পরিস্থিতিতে তাদের আপসহীন ভূমিকা চালিয়ে যেতে থাকে। ফলে আশির দশকজুড়ে একটা রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন চলে, যার ফলে সেনা শাসনের অবসান ঘটে।
কিন্তু সেই শুরু থেকেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ষড়যন্ত্র চলতে থাকে। তাই শিল্পী-সাহিত্যিক ও সাংবাদিকদের একটা বড় অংশকে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকতেই হয়। এই সংগ্রামে অত্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে যুক্ত ছিলেন নাট্যকর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অন্য সব মাধ্যম। চলচ্চিত্রের কর্মীরাও তাঁদের আন্দোলনের অংশ হিসেবে কাজ করতে থাকেন। কিন্তু সত্তরের দশকের যে চলচ্চিত্র, তা আশির দশকে এসে এক ভয়ংকর রূপ নেয়। অশ্লীলতা ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে দর্শক মুখ ফিরিয়ে নেয়। সে সময়ে মুষ্টিমেয় কিছু চলচ্চিত্রকার প্রাণপণ চেষ্টা করে দু-চারটি ছবি করে তাঁদের দায়িত্ব পালন করেন।
নব্বইয়ের দশকে এসে মিডিয়া কিছুটা মুক্ত হয়। বাংলাদেশ টেলিভিশনের একচ্ছত্র আধিপত্যের জায়গায় বেশ কয়েকটি টেলিভিশন যুক্ত হয়। এই সময়ে একুশে টেলিভিশন এসে সংবাদ প্রচারকে প্রাচীন পদ্ধতি থেকে অবমুক্ত করে। এর প্রভাব অন্যান্য চ্যানেলেও দেখা দেয়। নতুন নতুন অনুষ্ঠানেও দর্শকেরা অনুপ্রাণিত হয়। এই সময়ে মঞ্চনাটকের ভালো ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী-পরিচালক মিডিয়ায় যুক্ত হন। এই যুক্ত হওয়ার ফলে মিডিয়া জনপ্রিয় হয় বটে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে নাট্যচর্চা সাময়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঐতিহাসিকভাবে এই ক্ষতি ক্ষণিকের। মঞ্চ তার নিজস্ব পরাক্রমেই চলতে থাকে। মিডিয়া খুবই বিজ্ঞাপনের কাছে অর্থনির্ভর। তাই এই মাধ্যমের মালিকদের সে রকম সংস্কৃতি না থাকায় অনুষ্ঠানের মানের চেয়ে বিজ্ঞাপনের দিকে ঝুঁকে পড়ে। একসময় ভিন্ন রাজনীতির প্রভাবে বন্ধ হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত একুশে টেলিভিশন। ফলে অন্য চ্যানেলগুলো বিজ্ঞাপনের কাছে আত্মসমর্পণ করে মাধ্যমটির অনুষ্ঠানের বিপর্যয় ডেকে আনে। কিন্তু সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু চ্যানেলে একুশের প্রভাব লক্ষ করা যায়। তাই তারা সংবাদের মাধ্যমে অনেক দুর্নীতিকে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থাও নিশ্চিত করেছে। সংবাদপত্র এসব ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে।
এর মধ্যেই এসেছে ইন্টারনেট। সোশ্যাল মিডিয়া, ইউটিউব, ওটিটি প্ল্যাটফর্মসহ সব মাধ্যমই এখন জনপ্রিয়। তরুণ প্রজন্ম এসব ব্যবহার করতে খুবই সিদ্ধহস্ত। কিন্তু যখন গণজাগরণ মঞ্চ হয়েছিল, তখন তরুণেরা সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রতিবাদমুখর হয়েছিল। প্রতিবাদমুখর সেই কিশোর-তরুণদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রবলভাবে লক্ষণীয়। মুক্তিযুদ্ধের ভালো নাটক, চলচ্চিত্রেও তাদের সরব উপস্থিতি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। আজও স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সেই গান তাদের মধ্যে সাড়া জাগায়। একটা গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে এ দেশের ৫০ বছরের রাজনীতি চলছে, তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের একটা অন্ধকার যুগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে। এসবকে প্রতিহত করার জন্য একটা দুর্বার সাংস্কৃতিক আন্দোলন যে প্রয়োজন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৭ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪