Ajker Patrika

পরিযায়ী পাখি শিকার বৃদ্ধি

বটিয়াঘাটা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৭: ৩৫
পরিযায়ী পাখি শিকার বৃদ্ধি

শীতের আগমনে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা বৃদ্ধি পেয়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায়। ইতিমধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলার বিভিন্ন খাল-বিল ও জলাশয় পরিযায়ী পাখি আসতে শুরু করেছে। তবে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় পাখি শিকারিরা আইনের তোয়াক্কা না করে এসব পরিযায়ী পাখি শিকারে মেতে উঠেছেন। খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া, দাকোপ এলাকায় বেশির ভাগ পাখি শিকার করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সনাতন পদ্ধতির পাশাপাশি অভিনব পদ্ধতিতে বাঁশি বাজিয়ে ফাঁদে ফেলে পরিযায়ী পাখি শিকার করছেন শিকারিরা। পরে এসব পাখি আকারভেদে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা কিংবা এর থেকেও বেশি দামে বিক্রি করা হয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শিকারিরা অবাধে পরিযায়ী পাখি শিকার করে আসছেন। ভোরের আলো ফোটার আগেই শিকার করা পাখিগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়। শিকারিরা রাতে ধান খেতে বসে পাখির ডাকের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বাঁশি বাজান। বাঁশির শব্দে উড়ন্ত পাখিরা বিভ্রান্ত হয়ে নিচে নেমে শিকারির পাতা ফাঁদে পড়ে আটকে যায়। এ ছাড়া শিকারিরা নাইলনের সুতা দিয়ে ছোট-বড় ফাঁদ তৈরি করে পাখির চলার পথে পেতে রাখেন। রাতের বেলা পাখিরা যখন উড়ে বেড়ায় তখন ওই ফাঁদে শত শত পাখি আটকা পড়ে। আবার চোখে আলো ফেলে, কেঁচো দিয়ে বড়শি পেতে, কোচ মেরে ও অবৈধ জাল পেতেও পাখি শিকার করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করেন, প্রশাসন এসব দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। প্রশাসনের ও এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের টাকা ও পাখি দিয়ে শিকার নিষিদ্ধ করা স্থানগুলোতেও পাখি শিকার অব্যাহত রেখেছেন শিকারিরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পাখি শিকারিরা বলেন, ‘আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে টাকা ও পাখি দিয়ে প্রতি রাতেই পাখি শিকার করে থাকি। আপনারা যদি পত্রিকায় লেখালেখি করেন তাহলে আপনাদেরকেও পাখি ও টাকা দিয়ে সন্তুষ্ট করব। দয়া করে আমাদের বিরুদ্ধে কিছু লিখবেন না।’

পাখি শিকারি শাহীন ও বিজয় বলেন, ‘আমরা জানি, পরিযায়ী পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু পাখি শিকার করাটা খুবই মজা ও আনন্দের। আমরা পাখি শিকার করি ঠিকই কিন্তু বিক্রি করার জন্য না। পাখির মাংস খেতে ভালো লাগে। তাই মাঝেমধ্যে পাখি শিকার করি।’

উপজেলার মাইলমারা এলাকার পাখি সংরক্ষণ পরিষদ ও পাখি সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি ও ইউপি সদস্য অলোকেশ সরকার বলেন, ‘পাখি শিকারিদের প্রতিহত করতে আমরা প্রতি রাতে ধানখেত পাহারা দিই। সরকারি সহযোগিতা পেলে আমাদের সংগঠনটিকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে পারতাম।’

বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মমিনুর রহমান বলেন, ‘পরিযায়ী পাখি আমাদের দেশের একটি সম্পদ। এদেরকে রক্ষণাবেক্ষণ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। পাখি শিকারিদের শনাক্ত করতে পারলে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

খুলনা জেলার বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা মিহির কুমার দো বলেন, ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের ৩৮ (১) ধারা মোতাবেক পরিযায়ী পাখি শিকার বা ধরা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ক্ষেত্রে পাখি শিকারিরা এক বছর কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানাসহ উভয়ে দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন। আমরা ইতিমধ্যে শীত মৌসুমে পরিযায়ী পাখি শিকার রোধে শিকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন জারি করে মাঠ পর্যায় আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত