Ajker Patrika

পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে কমিটি

নিজস্ব প্রতিবেদক ও কাউনিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২১, ২১: ৪০
পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে কমিটি

কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে পুলিশের নির্যাতনে তাজুল ইসলামের মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার সকালে চার সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়।

এ দিকে, হত্যার ঘটনার সব ধরনের প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে ঘটনায় করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত, অপমৃত্যুর মামলার বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চ এ আদেশ দেন। গত মঙ্গলবার রংপুরের ঘটনার বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। পরে আদালত এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দেন।

গতকাল বুধবার নির্দেশ অনুযায়ী আদালতকে জানানো হয়, ওই ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।

গতকাল দুপুরে বুধবার মুঠোফোনে অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) সাজ্জাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মেহেদুল করিমকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান, উপপুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) আবু বক্কর সিদ্দিক ও সহকারী কমিশনার (পরশুরাম জোন) কাজী আরিফুজ্জামান।

তিনি বলেন, সার্বিক বিষয়ে তদন্ত করে কমিটিকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ নির্যাতনে ওই ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগে বিক্ষুদ্ধ লোকজন জড়ো হয়ে থানা ঘেরাও করে হামলা ও ভাঙচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। এ ঘটনায় হারাগাছ থানা পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পৃথক দুইটি মামলা করেছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সন্ধ্যার দিকে হারাগাছ পৌর এলাকার নতুন বাজার বছির বানিয়ার তেপথি মোড়ে অভিযানে যায় পুলিশ। এ সময় তাজুল ইসলামকে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী সন্দেহে আটক করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে মারপিট করে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। পরে হ্যান্ডকাফ খুলে দ্রুত সেখান থেকে চলে যায় পুলিশ। তাজুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী জড়ো হয়ে থানা ঘেরাও করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে।

হারাগাছ থানার ওসি শওকত আলী সরকার বলেন, ‘তাজুল মাদক কারবারি ও মাদকসেবী। তার বিরুদ্ধে থানায় মাদকের মামলা রয়েছে। ঘটনার দিন তাজুল হেরোইন সেবন করছিলেন এমন খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযানে যায়। তাঁকে আটকের পর হাতকড়া পরানো হলে তিনি মলত্যাগ করেন। পরে হাতকড়া খুলে সেখানে রেখে চলে আসে পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পর খবর আসে যে তাজুল মারা গেছেন।’ নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেন ওসি।

এ দিকে, গতকাল বুধবার দুপুর দুইটার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মেহেদুল করিম, উপপুলিশ কমিশনার (ডিবি) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান, উপপুলিশ কমিশনার (সিটিএসবি) আবু বক্কর সিদ্দিক, উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন, ডিউপপুলিশ কমিশনার (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) আবু সায়েম, হারাগাছ থানা ওসি শওকত আলী সরকার ও ইনস্ট্রাক্টর (তদন্ত) ফিরোজ ওয়াহিদ।

এ সময় পুলিশ কমিশনার নিহতের পরিবারের লোকজন, ঘটনার দিন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত