Ajker Patrika

পেঁয়াজ তেল সবজির দাম বাড়ছেই

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ মে ২০২২, ১৪: ৩৬
পেঁয়াজ তেল সবজির দাম বাড়ছেই

নওগাঁর মান্দায় ভরা মৌসুমেও পেঁয়াজের দাম হুহু করে বাড়ছে। ভারত থেকে আমদানি বন্ধের অজুহাতে এ পণ্যটির দামে লাগাম টানা যাচ্ছে না। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সয়াবিন ও সরিষা তেলের দাম। বিভিন্ন ধরনের সবজির বাজারেও দাম বেড়েছে। এতে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও খেটে খাওয়া মানুষের উঠেছে নাভিশ্বাস।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের পর কয়েক দিনের ব্যবধানে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। ভারত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় ভরা মৌসুমেও লাগাম টানা যাচ্ছে না এ পণ্যটির দাম। গত বৃহস্পতিবার পেঁয়াজের বৃহৎ পাইকারি মোকাম সাবাইহাটে গিয়ে প্রতিমণ পেঁয়াজ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বর্তমান বাজার দরে কৃষকেরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

একদিকে পেঁয়াজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দাম বেড়েছে বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, করলা, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন রসুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে খাসির মাংস ৭৫০ টাকা ও গরুর মাংস ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ডাবল সেঞ্চুরি পার করেছে ভোজ্যতেল সয়াবিন।

ভোক্তাদের অভিযোগ, নিত্যপণ্যের বাজারে ফায়দা লুটছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। এ ছাড়া বিভিন্ন বাজারে গড়ে উঠেছে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের কারণে হাটে কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য খুচরা বাজারে সরাসরি ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করতে পারছেন না। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়ে একদিকে যেমন ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষকেরা। অন্যদিকে দামেও ঠকছেন ভোক্তারা।

গত শুক্রবার দেলুয়াবাড়ি পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বেগুন প্রকারভেদে ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া করলা ৬০ টাকা, পটল ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, শজনেডাঁটা ৬০ টাকা, দেশি আলু ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। সরিষার তেল প্রতি লিটার ২০০ টাকা ও খোলা সয়াবিন ২১০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলার চককানু গ্রামের কৃষক এনামুল হক বলেন, গত শুক্রবার দেলুয়াবাড়ি পাইকারি হাটে এক মণ বেগুন বিক্রি করেন ১৮০০ টাকায়। যা এক কেজির মূল্য দাঁড়ায় ৪৫ টাকা। এ বেগুন খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। পাইকারি ও খুচরা বাজারে দামের ব্যবধানে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

কৃষক এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘বেগুন উৎপাদনে সার, পানি সেচ ও কীটনাশক প্রয়োগের পাশাপাশি ব্যাপক পরিচর্যা করতে হয়। আমার কাছ থেকে নেওয়া বেগুন একই হাটের খুচরা বাজরে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এ ভাবে বরাবরই কৃষকেরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’

ভোক্তা গাইহানা কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, আগে হাটে কৃষকেরা নিজেদের পণ্য খুচরা বিক্রি করতেন। এতে ক্রেতারা সবজিসহ বিভিন্ন পণ্য সাশ্রয় মূল্যে কিনতে পারতেন। কিন্তু এখন কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য খুচরা বিক্রি করতে দেওয়া হয় না। সিন্ডিকেট করে ভোক্তাদের কাছে বেশি মূল্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

নুরুল্লাবাদ গ্রামের অটোরিকশার চালক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমার আয় সীমিত। অটোরিকশা চালিয়ে যা পাই তা দিয়েই সংসার চলে। বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল থাকছে না। এ কারণে চাহিদার তুলনা কম জিনিসপত্র কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত