Ajker Patrika

স্বাভাবিক প্রসবে বাড়ছে আগ্রহ

সবুজ শর্মা শাকিল, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ৪০
স্বাভাবিক প্রসবে বাড়ছে আগ্রহ

সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব বাড়ছে। এতে খরচ যেমন কমছে, তেমনি দক্ষ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তত্ত্বাবধানে থাকায় ঝুঁকি কমছে প্রসূতিদের। এতে সিজারিয়ান প্রসবের প্রতি তাঁদের আগ্রহ কমছে। বাড়ছে স্বাভাবিক প্রসবের প্রতি আগ্রহ।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে প্রসবব্যথা ওঠে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের চৌধুরীপাড়ার ইজাজুল হকের স্ত্রী কোহিনুর আক্তারের (১৯)। এর ঘণ্টাখানেক পর তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ভর্তির আধা ঘণ্টার মধ্যে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. বিবি কুলসুম সুমি ও জেসমিন আক্তারের সহায়তায় স্বাভাবিকভাবে ছেলে সন্তান প্রসব করেন তিনি।

শুধু কোহিনুর আক্তার নন, একই দিনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাহমিনা আক্তার (২৮), নিশি আক্তার (২০), নুসরাত জাহান (২১) ও পলি আক্তার (২০) স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেন।

প্রসূতি তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘স্বাভাবিক প্রসবে মৃত্যুঝুঁকির কথা চিন্তা করে প্রথমদিকে খুব ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসকের নিবিড় তত্ত্বাবধান ও আন্তরিকতায় কিছুক্ষণের মধ্যেই মনোবল বেড়ে যায়।’

আজকের পত্রিকাহাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. বিবি কুলসুম সুমি ও জেসমিন আক্তার, নার্স হোসনে আরা বেগম, মেহেরুন্নেসা ও ইন্দিরা চৌধুরী এবং মিডওয়াইফ মিলে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৫ নারীকে স্বাভাবিক প্রসব করিয়েছেন। একই দলের সদস্যরা একদিন আগে ২৪ ঘণ্টায় ৮ প্রসূতিকে স্বাভাবিক প্রসব করিয়েছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন বলেন, স্বাভাবিক প্রসবের পাশাপাশি চলতি বছর হাসপাতালে প্রসবপূর্ববর্তী এএনসি সেবা নিয়েছেন ৬ হাজার প্রসূতি। প্রসবপরবর্তী পিএনসি সেবা নিয়েছেন ৬ হাজার প্রসূতি।

তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর প্রসূতি মায়েদের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ শুরু করেন। স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসবে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা শুরু করেন। পাশাপাশি প্রসূতিদের সুরক্ষা নিশ্চিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে দেওয়া হয় প্রসূতি কার্ড। প্রসব না হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালে কাউন্সেলিং ও বিনা খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। এখানে চালু হয়েছে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, ওআরটি কর্নার, অটিজম কর্নার, এএনসি ও পিএনসি এবং কেএমসি কর্নার।

ডা. নুর উদ্দিন জানিয়েছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে ডিসেম্বরের ২৮ তারিখ পর্যন্ত হাসপাতালে ১ হাজার ১৬৫ প্রসূতির স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। এর মধ্যে গত নভেম্বরে শতাধিক ও চলতি ডিসেম্বরে এ পর্যন্ত ১২০ জন স্বাভাবিকভাবে সন্তান প্রসব করেছেন।

গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. বিবি কুলসুম সুমি বলেন, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর থেকে তাঁদের কাউন্সেলিং করা হচ্ছে। গর্ভধারণের চতুর্থ মাস থেকে প্রসূতির নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ সার্বিক বিষয়ে তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। সবকিছু ঠিক থাকলে সময়মতো স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়।

সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক লিটন কুমার চৌধুরী বলেন, সিজার বাণিজ্যের ভিড়ে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাভাবিক প্রসবের এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে সিজারিয়ান প্রসবের প্রতি প্রসূতিদের আগ্রহ কমবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত