অরুণ কর্মকার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, সেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর তুলনায় দেশের সুশীল সমাজ এবং বিশেষ করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধু দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই বেশি উচ্চকিত।
তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি যে সংলাপে বসতেই চায় না কিংবা সংলাপের দরকার নেই বলে মনে করে, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু সংলাপের প্রশ্নে এই দুই দলেরই অবস্থান হুবহু ‘সালিস মানি, তবে তালগাছটি আমার’ প্রবচনের মতো। আওয়ামী লীগ বলে রেখেছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন মেনে নিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যথায় কোনো আলোচনা বা সংলাপ নয়। একইভাবে বিএনপিও বলে দিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানলেই শুধু তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। অন্যথায় এক দফার আন্দোলনই হবে তাদের পথ।
এই প্রধান দুটি দলের মতোই তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর প্রকাশ্য অবস্থানও অভিন্ন।যদিও রাজনীতিতে অনেক বিষয়েই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে অন্তরালে কিছু কৌশলগত আলোচনা ও তৎপরতা থাকে, যা উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রাখা হয়। তবে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মধ্যে অন্তরালেও কোনো কৌশলগত আলোচনার সামান্যতম আভাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না; অর্থাৎ কারও অবস্থান থেকেই সামান্যতম নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান দুই দল ও জোটের বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নির্বাচনের এই বছরে তাদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন তৎপরতা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রকাশিত তাঁদের অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট উষ্মা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। এত দিন এই উষ্মা ও অস্বস্তির প্রায় সবটাই ছিল সরকার, সরকারি দল, তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ও সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল এসে নির্বাচন কমিশনসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর যখন গণমাধ্যমের কাছে বলল যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে, তখন তা বিরোধী শিবিরকেও সমানভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপি তো ওই প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতেরই অনুমতি দেয়নি। এরপর থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা উষ্মা আর একতরফা নেই।
এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থানের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। সেটি হলো—তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কখনোই বলবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের একমাত্র চাওয়া, যেখানে এ দেশের মানুষ ইচ্ছামতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে পারবে। বিদেশিদের এই অবস্থানও বিরোধী শিবিরের জন্য উদ্বেগের। কারণ তাদের একমাত্র দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, যা সংবিধান অনুমোদন করে না। বিদেশি বন্ধুদের এই অবস্থান প্রকারান্তরে বিরোধী শিবিরের প্রধান ও একমাত্র দাবির অনুকূল নয়। অন্যদিকে সরকার, সরকারি দল ও জোটের নীতিসহায়ক।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এবং তার নেতৃ্ত্বাধীন জোটের এক দফা দাবি আদায়ের একমাত্র পথ গণ-অভ্যুত্থান। এক দফা দাবি ঘোষণা করার পর থেকে তারা সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দফা আদায়ের জন্য আন্দোলনের কী কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, কোন কর্মসূচি কার্যকর হবে তা নিয়ে তারা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেই পড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে ধারণা করছেন, রাজপথের আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য দুরূহ হবে যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিয়ে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে।
বিরোধী শিবিরের নীতিনির্ধারকদের কারও কারও মধ্যে এই ধারণাও থাকতে পারে বলে অনুমান করা যায় যে গণ-আন্দোলন সংঘাতময় (মিলিট্যান্ট) করে তোলা গেলে এবং তা এমনকি প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এক দফা দাবি আদায় সহজ হতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় এই ধারণাও অলীক। দেশে সরকার, বেসরকারি এবং বিদেশি বন্ধুদের কারোরই সমর্থন এই ধারণার প্রতি মিলবে না। এই পথের সাফল্যের সম্ভাবনাও অতিশয় ক্ষীণ। কারণ সরকার এমনকি প্রয়োজনের তুলনায়ও বেশি কঠোরহস্তে তা দমন করার সুযোগ নিতে পারে। তাহলে কী হতে পারে? বিকল্প কী?
ধরা যাক বিএনপিসহ বিরোধী শিবির তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিল না। সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকারি দলের বিজয় অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নির্বাচনে থাকবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ৩০০ আসনে প্রার্থীও না থাকতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং জনঅংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগই যে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনাই প্রায় শতভাগ। সে ক্ষেত্রে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির কি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে? সে চেষ্টার সাফল্যও কী সহজ কিছু হবে? মনে হয় না।
তাদের জন্য তৃতীয় বিকল্প হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই তাদের একধাপ পিছিয়ে থাকতে হবে। দীর্ঘদিন আন্দোলন করে, সরকারের পদত্যাগের জন্য এক দফা পর্যন্ত ঘোষণা করে শেষে দাবি আদায় ছাড়াই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনমানসে বিএনপি এবং তার জোটভুক্তদের ভাবমূর্তির জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হবে না।
অবশ্য উন্নয়ন সহযোগীদের তরফে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা নিয়ে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। বিএনপি এবং হয়তো অন্য অনেক দলের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন। তবে তার ফলাফল কী হবে, তা বলা কিংবা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাজনীতিতে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে প্রকাশ্য আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্তরালেও কিছু তৎপরতা চলে। সেদিকেও সবার নজর রাখতে হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দল এবং জোটের মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা এখন একটি বহু চর্চিত বিষয়। অবশ্য এই সংলাপের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি উপলব্ধি হচ্ছে সক্রিয় রাজনৈতিক পরিমণ্ডলের বাইরে; অর্থাৎ অচলাবস্থার অবসানের জন্য যাদের মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার, সেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটগুলোর তুলনায় দেশের সুশীল সমাজ এবং বিশেষ করে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধু দেশগুলো বিষয়টি নিয়ে অনেকটাই বেশি উচ্চকিত।
তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি যে সংলাপে বসতেই চায় না কিংবা সংলাপের দরকার নেই বলে মনে করে, তেমনটা বলা যায় না। কিন্তু সংলাপের প্রশ্নে এই দুই দলেরই অবস্থান হুবহু ‘সালিস মানি, তবে তালগাছটি আমার’ প্রবচনের মতো। আওয়ামী লীগ বলে রেখেছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন মেনে নিলেই কেবল বিএনপির সঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে করণীয় বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অন্যথায় কোনো আলোচনা বা সংলাপ নয়। একইভাবে বিএনপিও বলে দিয়েছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি মানলেই শুধু তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে। অন্যথায় এক দফার আন্দোলনই হবে তাদের পথ।
এই প্রধান দুটি দলের মতোই তাদের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত দলগুলোর প্রকাশ্য অবস্থানও অভিন্ন।যদিও রাজনীতিতে অনেক বিষয়েই প্রকাশ্য অবস্থানের বাইরে অন্তরালে কিছু কৌশলগত আলোচনা ও তৎপরতা থাকে, যা উপযুক্ত সময় না আসা পর্যন্ত অপ্রকাশিতই রাখা হয়। তবে আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপির মধ্যে অন্তরালেও কোনো কৌশলগত আলোচনার সামান্যতম আভাসও এখন পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে না; অর্থাৎ কারও অবস্থান থেকেই সামান্যতম নড়াচড়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
প্রধান দুই দল ও জোটের বাইরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থান। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণাসহ নির্বাচনের এই বছরে তাদের এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের বিভিন্ন তৎপরতা এবং বক্তব্য-বিবৃতিতে প্রকাশিত তাঁদের অবস্থান দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যথেষ্ট উষ্মা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। এত দিন এই উষ্মা ও অস্বস্তির প্রায় সবটাই ছিল সরকার, সরকারি দল, তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ও সমর্থকদের মধ্যে। কিন্তু সম্প্রতি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত একটি ইউরোপীয় প্রতিনিধিদল এসে নির্বাচন কমিশনসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎকারের পর যখন গণমাধ্যমের কাছে বলল যে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে, তখন তা বিরোধী শিবিরকেও সমানভাবে উদ্বিগ্ন করেছে। বিএনপি তো ওই প্রতিনিধিদলকে সাক্ষাতেরই অনুমতি দেয়নি। এরপর থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা কিংবা উষ্মা আর একতরফা নেই।
এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি বন্ধুদের অবস্থানের আরেকটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। সেটি হলো—তারা সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা কখনোই বলবে না বলে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। সংবিধানের কাঠামোর মধ্যেই সুষ্ঠু নির্বাচন তাদের একমাত্র চাওয়া, যেখানে এ দেশের মানুষ ইচ্ছামতো তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন করতে পারবে। বিদেশিদের এই অবস্থানও বিরোধী শিবিরের জন্য উদ্বেগের। কারণ তাদের একমাত্র দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, যা সংবিধান অনুমোদন করে না। বিদেশি বন্ধুদের এই অবস্থান প্রকারান্তরে বিরোধী শিবিরের প্রধান ও একমাত্র দাবির অনুকূল নয়। অন্যদিকে সরকার, সরকারি দল ও জোটের নীতিসহায়ক।
এই পরিস্থিতিতে বিএনপি এবং তার নেতৃ্ত্বাধীন জোটের এক দফা দাবি আদায়ের একমাত্র পথ গণ-অভ্যুত্থান। এক দফা দাবি ঘোষণা করার পর থেকে তারা সেই লক্ষ্যেই অগ্রসর হচ্ছে। কিন্তু ইতিমধ্যে এক দফা আদায়ের জন্য আন্দোলনের কী কর্মসূচি ঘোষণা করা যায়, কোন কর্মসূচি কার্যকর হবে তা নিয়ে তারা কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বেই পড়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে ধারণা করছেন, রাজপথের আন্দোলন এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া বিএনপির জন্য দুরূহ হবে যাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নিয়ে বর্তমান সরকার পদত্যাগ করে।
বিরোধী শিবিরের নীতিনির্ধারকদের কারও কারও মধ্যে এই ধারণাও থাকতে পারে বলে অনুমান করা যায় যে গণ-আন্দোলন সংঘাতময় (মিলিট্যান্ট) করে তোলা গেলে এবং তা এমনকি প্রাণঘাতী হয়ে উঠলে এক দফা দাবি আদায় সহজ হতে পারে। সার্বিক বিবেচনায় এই ধারণাও অলীক। দেশে সরকার, বেসরকারি এবং বিদেশি বন্ধুদের কারোরই সমর্থন এই ধারণার প্রতি মিলবে না। এই পথের সাফল্যের সম্ভাবনাও অতিশয় ক্ষীণ। কারণ সরকার এমনকি প্রয়োজনের তুলনায়ও বেশি কঠোরহস্তে তা দমন করার সুযোগ নিতে পারে। তাহলে কী হতে পারে? বিকল্প কী?
ধরা যাক বিএনপিসহ বিরোধী শিবির তত্ত্বাধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিল না। সে ক্ষেত্রে সরকারের জন্য সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং সরকারি দলের বিজয় অনেকটাই সহজ হবে। কারণ তখন তার প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নির্বাচনে থাকবে না। এমনকি আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ৩০০ আসনে প্রার্থীও না থাকতে পারে। সুতরাং সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং জনঅংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হলেও আওয়ামী লীগই যে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে—এমন সম্ভাবনাই প্রায় শতভাগ। সে ক্ষেত্রে বিএনপিসহ বিরোধী শিবির কি নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করতে পারে? সে চেষ্টার সাফল্যও কী সহজ কিছু হবে? মনে হয় না।
তাদের জন্য তৃতীয় বিকল্প হতে পারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে অংশগ্রহণ। সে ক্ষেত্রে শুরুতেই তাদের একধাপ পিছিয়ে থাকতে হবে। দীর্ঘদিন আন্দোলন করে, সরকারের পদত্যাগের জন্য এক দফা পর্যন্ত ঘোষণা করে শেষে দাবি আদায় ছাড়াই শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ জনমানসে বিএনপি এবং তার জোটভুক্তদের ভাবমূর্তির জন্য নিঃসন্দেহে ইতিবাচক হবে না।
অবশ্য উন্নয়ন সহযোগীদের তরফে ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের বার্তা নিয়ে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। বিএনপি এবং হয়তো অন্য অনেক দলের সঙ্গেও তিনি আলোচনা করবেন। তবে তার ফলাফল কী হবে, তা বলা কিংবা দেখার জন্য আরও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। রাজনীতিতে কোনো অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে প্রকাশ্য আলাপ-আলোচনা ছাড়া অন্তরালেও কিছু তৎপরতা চলে। সেদিকেও সবার নজর রাখতে হবে।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১১ দিন আগেপাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
১১ দিন আগেভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
১১ দিন আগেঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫