Ajker Patrika

নলকূপের পানিতে দুর্গন্ধ সংকট হাজারো মানুষের

জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ১৪: ৩৫
Thumbnail image

সুনামগঞ্জের ছাতক, দোয়ারাবাজার ও শান্তিগঞ্জসহ সদর উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে যায় প্রায় দেড় হাজার নলকূপ। এসব নলকূপ থেকে ঘোলাটে ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি বের হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সুপেয় পানির সংকট রয়ে গেছে। অনেকে আবার পানিবাহিত রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন।

বন্যায় তলিয়ে যাওয়া নলকূপ দিয়ে ময়লা পানির সঙ্গে দুর্গন্ধও বের হওয়ায়; পানি ব্যবহার করতে পারছেন না মানুষ। অনেকে সুপেয় পানির জন্য দূর-দুরান্ত থেকে পানি আনতে যাচ্ছেন। এমন অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে বন্যাবলিতদের।

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হাসনবসত গ্রামের পান্না বেগম বলেন, ‘আমরার ইকানো সরকারি একটা নলকূপ আছে। ইটা বন্যার পানিতে ডুবি গেছিল। এখন ময়লা পানি আইতাছে। আমরা অনেক দূর থাইকা পানি আইান্না খাইতাছি।’

সুনামগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বন্যায় চার উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার নলকূপ পানিতে তলিয়ে যায়। বেশ কয়েকটি নলকূপের লেয়ার অকেজো হয়ে গেছে। আরও সপ্তাহখানেক লাগবে নলকূপের সমস্যা স্বাভাবিক হতে।

এখনো অনেক গ্রামের সরকারি নলকূপের আশপাশে নোংরা পানি রয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুলতানপুর, হাসনবসত গ্রামের অনেক নলকূপ অন্যান্য জায়গা থেকে অপেক্ষাকৃত নিচু স্থানে বসানোর ফলে এসব নলকূপের কাছাকাছি বর্ষা কালে পানি থাকে। ফলে এসব নলকূপের পানি পান করার অনুপযোগী হয়ে পরে।

বন্যার পানিতে নলকূপ ছাড়াও ডিপ নলকূপগুলোতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ চালিত ডিপ নলকূপের মোটরে ত্রুটির কারণে পানি উঠছে না।

দোয়ারাবাজার উপজেলার নুরপুর গ্রামের হরিমন বর্মন বলেন, ‘আমরা গাঁওয়ের সব নলকূপ পানিতে ডুবছিল। ওখনো ভালা পানি বাইর ওয় না। এই পানি দিয়া দুর্গন্ধ বাইর ওয়।’

বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে বিপাকে পড়েছেন বন্যাকবলিতরা। বিশেষ করে শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা। ইতিমধ্যেই সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই আউটডোরে শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, বন্যাকবলিত এলাকায় ক্যাম্পিং করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রামেই পানিবাহিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচারণাসহ ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে এবারের বন্যায় পানিবাহিত রোগীর সংখ্যা কম।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রফিকুল ইসলাস বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নানা ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। ফলে এবার হাসপাতালের রোগীর চাপ কম।

যেসব নলকূপ বন্যার পানিতে ডুবেছিল এসব নলকূপের পানি পান ও মেরামতের জন্য আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। আপাতত ১০ মিনিট চাপ দিলে বিশুদ্ধ পানি বের হবে। পানি বিশুদ্ধকরণে ফিটকিরি ব্যবহারের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম বলেন, বন্যায় তলিয়ে যাওয়া নলকূপের পানি এখন পানি ব্যবহার করা যাবে। কিছু সময় চাপ দিলে বিশুদ্ধ পানি বের হবে। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে আরও কিছু সময় লাগবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত