Ajker Patrika

ঝড়ে আম-বাড়ির বড় ক্ষতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও ভোলাহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ জুন ২০২২, ১৫: ১০
Thumbnail image

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে জেলাজুড়ে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়। ৪০ মিনিট ধরে চলা এই ঝড়ে কাঁচা-পাকা বাড়ি, দোকান ভেঙে যায় ও টিনের ছাউনি উড়ে যায়। এ ছাড়া বড় বনজ গাছ রাস্তায় পড়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

জানা গেছে, ঝড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায়, শিবগঞ্জ ও ভোলাহাটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে শিবগঞ্জের আমবাগানে বেশি ক্ষতি হয়েছে। শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিডেটের সাধারণ সম্পাদকের দাবি, ঝড়ে তাঁদের শতকোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।

এ ছাড়া ভোলাহাটে ঘরবাড়ির বেশি ক্ষতি হয়েছে। আর বসতবাড়ির ছাউনি উড়ে ও ঘর ভেঙে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

গতকাল সকালে ৪০ মিনিটের ঝড়ে কাঁচা-পাকা বাড়ি, দোকান ভেঙে যায় ও টিনের ছাউনি উড়ে গেছেশ্যামপুর ইউনিয়নের আমচাষি আনারুল ইসলাম বলেন, তাঁর বাগানের প্রায় দেড় শ মণ লক্ষণভোগ আম ছিল। যা পেড়ে বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু সকালে হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। এতে তাঁর বাগানের প্রায় ৮০ মণ আম পড়ে গেছে। এসব আম বাজারে বিক্রি করা যাবে না।

আব্বাস বাজার এলাকার আমচাষি রফিকুল আলম বলেন, তাঁর বাগানে ক্ষীরশাপাতি, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, ফজলিসহ প্রায় ৬ জাতের ৩০০ মণ আম ছিল। কিন্তু সকালের ঝড়ে অর্ধেকের বেশি পড়ে গেছে। কিছু আম আজকেই পেড়ে বিক্রি করার কথা ছিল। এখন সব শেষ হয়ে গেল।

বাবুপুর গ্রামের এক আম ব্যবসায়ী বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে আম পাড়তে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তিনি। এ সময় হঠাৎ ঝড় শুরু হয়। এতে তাঁর বাগানের প্রায় অর্ধেকের বেশি আম পড়ে গেছে।

শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিডেটের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, সকালের ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে লক্ষণভোগ ও খিরসাপাতি গাছ থেকে অর্ধেকের বেশি আম ঝড়ে পড়েছে। তাঁর নিজেরও দুইটি আম গাছ ভেঙে পড়েছে। তাঁর দাবি, ঝড়ে জেলায় প্রায় সব বাগানের কিছু কিছু আম ঝড়ে পড়েছে। এতে শতকোটি টাকার ওপরে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শিবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. সুনাইন বিন জামান বলেন, সকালের ঝড় বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৫০০ হেক্টর আমবাগানের ক্ষতির খবর পেয়েছেন তিনি। তবে এ ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলার সব স্থানে বৃষ্টি হলেও বেশি ঝড় বৃষ্টি হয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলাতে। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। বিস্তারিত পরে জানা যাবে।

Ambari-1এ দিকে ভোলাহাট উপজেলার একটি গ্রামের ওপর বয়ে গেছে এই ঝড়। এতে ঝড়ে ঘরবাড়ি ও দোকান ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া সোনাজলে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের রোপণ করা বড় বড় বনজ গাছ রাস্তায় পড়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

ফতেপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. নাহিদ বলেন, তাঁদের পাকা বাড়ি তারপরও আংশিক ভেঙে গেছে। তিনি আরও বলেন, তাঁর প্রতিবেশী এক চাচির বাড়ির টিন উড়ে গেছে। ফলে তিনি এখন খোলা আকাশের নিচে রয়েছেন।

জামবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আফাজ উদ্দিন পানু মিঞা বলেন, এই ইউনিয়নে কাঁচা পাকা বাড়ি, দোকান, আম, বনজ গাছসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. কাউসার আলম সরকার বলেন, এখনো ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানানো যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত