Ajker Patrika

সাহিত্যের জন্য কৃচ্ছ্রসাধন

সম্পাদকীয়
Thumbnail image

...যখন ওই স্যুটকেসটি আমি ছুঁয়ে দেখলাম, তখনো কিন্তু খুলতে পারিনি। তবে আমি জানতাম এর মধ্যের কয়েকটি নোটবুকে কী থাকতে পারে। তার কিছু আমি বাবাকে লিখতেও দেখেছি। এমনটাও নয় যে ওই ব্যাগের ভার সম্পর্কে আমি আগে জানতাম না।

১৯৪০-এর শেষ দিকে বাবার যৌবনকালে, তাঁর একটি বিশাল লাইব্রেরি ছিল। ইস্তাম্বুলের কবি হতে চেয়েছিলেন বাবা, ভালেরির কবিতা তুরস্কের ভাষায় অনুবাদও করেছিলেন। কিন্তু তুরস্কের মতো গরিব দেশে হাতে গোনা পাঠকের জন্য কবিতা লেখকের যে জীবন, তা বাবা যাপন করতে চাননি। আমার বাবার বাবা, অর্থাৎ দাদা ছিলেন একজন ধনী ব্যবসায়ী। ফলে শৈশব ও কৈশোর বৈভবের মধ্যে কাটানো আমার বাবা চাননি লেখালেখির জন্য, সাহিত্যের জন্য কৃচ্ছ্রসাধন করতে বা কিছু ত্যাগ করতে। আমি এটা বুঝি যে জীবনের সব সুন্দর দিক উদ্‌যাপন করতে চেয়েছিলেন তিনি।

প্রথম যে ভয়টা আমার করছিল ওই স্যুটকেস খুলতে তা হলো, খুলে যা পড়ব তা হয়তো আমার পছন্দ হবে না। সেটা আমার বাবাও জানতেন আর সে কারণেই এমন একটা ভাব করেছিলেন যে ওই লেখালেখিকে তিনি খুব একটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ২৫ বছরের লেখকজীবন কাটানোর পর, সেটা দেখে আমার কষ্টই হয়েছিল। তবে সাহিত্যকে ততটা গুরুত্ব না দেওয়ার জন্য আমি বাবার প্রতি রাগ করতেও পারিনি কখনো...। আসল ভয়টা ছিল, আমার বাবা হয়তো ভালো লেখকই ছিলেন—এই সম্ভাবনার বীজকে খুঁজে পাওয়া।

স্যুটকেস খুলিনি প্রথমে, কারণ, ভয় পেয়েছি। আরও খারাপ ব্যাপার হলো, নিজের কাছেই এ ব্যাপারটা খোলাখুলি স্বীকার করতে না পারা।যদি আমার বাবার স্যুটকেস থেকে প্রকৃত মহৎ কোনো সাহিত্য বেরিয়ে আসে, তাহলে আমি মেনে নিতে বাধ্য হব যে আমার বাবার ভেতরে সম্পূর্ণ অন্য একটি মানুষ ছিল। পরিণত বয়সেও বাবাকে শুধু বাবা হিসেবেই দেখতে চেয়েছি, কোনো লেখক হিসেবে তো নয়। 

তুর্কি লেখক ওরহান পামুক ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত