Ajker Patrika

পানিতে বালু, ময়লা-দুর্গন্ধ

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ
আপডেট : ০৩ জুন ২০২২, ১০: ৩০
পানিতে বালু, ময়লা-দুর্গন্ধ

মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রায় তিন হাজার গ্রাহক নিয়মিত বিল পরিশোধ করেও বালু-আয়রন এবং ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অনেক গ্রাহককে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অনেকটা বাধ্য হয়ে এসব পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পাইপলাইনের ভেতর দিয়ে ময়লা-আবর্জনা মিশ্রিত পানি সরবরাহ করার বিষয়টি পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।

এদিকে ময়লা ও আবর্জনা মিশ্রিত পানি খেয়ে ডায়রিয়া ও চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বয়স্ক নারী-পুরুষ ও শিশুরা। অন্যদিকে আয়রনযুক্ত লাল পানিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দামি সাদা কাপড় ও বাড়িতে থাকা ওয়াশিং মেশিন, বেসিন এবং কমোড।

মানিকগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে মানিকগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৭ সালে এই পৌরসভাকে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। এর আগে ১৯৯৬ সালে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য বেউথা এলাকায় বিদেশি অর্থায়নে এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহযোগিতায় একটি পানি শোধনাগার নির্মিত হয়। সেখান থেকে মানিকগঞ্জ শহরসহ পশ্চিম অঞ্চলের বেউথা, দাশড়া, সেওতা, বান্দুটিয়া এলাকার আশপাশে পানি সরবরাহ করা হয়।

এরপর পৌর এলাকায় জনবসতি বাড়তে থাকায় পানির চাহিদা বাড়তে থাকে। বিষয়টি মাথায় রেখে গত পাঁচ বছর আগে পূর্ব দাশড়া শিববাড়ি রোড এলাকায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি পানি শোধনাগার নির্মাণ করা হয়। যার মাধ্যমে পূর্ব দিকে হিজুলী, দক্ষিণে বকজুরী, উত্তরে নওখন্ডা, পশ্চিমে গঙ্গাধর পট্টী ও পূর্ব দাশড়াসহ শহরের প্রায় ৩ হাজার গ্রাহককে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।

গত বছর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াই চালু করা হয় শোধনাগারটি। কিন্তু পানিকে বিশুদ্ধ না করে গভীর নলকূপের পানি সরাসরি পাইপের মাধ্যমে গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে।

পৌরসভার গঙ্গাধরপট্টি এলাকার গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন একটি পানি শোধনাগার নির্মিত হওয়ায় গত বছর তাঁরা পানির লাইন পেয়েছেন। সাপ্লাই পাওয়ার পর থেকে আয়রন, বালু ও ময়লা-দুর্গন্ধ মিশ্রিত পানি দিচ্ছে পৌর কর্তৃপক্ষ। যা খেয়ে ডায়রিয়া ও চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ।

পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রুপা আক্তার বলেন, এই পানি ব্যবহার করে দামি কাপড় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ময়লা-দুর্গন্ধ মিশ্রিত পানি খেয়ে ডায়রিয়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।

পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুবল সাহা বলেন, গত বছর থেকে নিয়মিত বিল পরিশোধ করেও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতে পারছি না। খাবারের পানির জন্য প্রতিদিন সকাল-বিকেল পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নলকূপ থেকে পানি আনতে হয়।

সুবল সাহা আরও বলেন, পৌরসভার পানি শাখার কর্মকর্তাদের এবং মেয়রকে বিষয়টি একাধিকবার মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী গোলাম জাকারিয়া লিটন বলেন, ‘পানি শোধনাগারে ভেতর আর্সেনিক যুক্ত স্লাশ (গাদ) সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায়, পাইপের ভেতর দিয়ে আয়রন-বালু ও ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি চলে গেছে। গ্রাহকদের পানির সেবার আওতায় আনতে গাদসহ পানি সরবরাহ করা হয়েছে। ব্যাক ওয়াশের মাধ্যমে আয়রন-বালু ও ময়লা অপসারণের কাজ চলছে, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’

মানিকগঞ্জ পৌরসভার মেয়র রমজান আলী বলেন, ‘আগের মেয়র গাজী কামরুল হুদা শোধনাগারের সব কাজ না করে তড়িঘড়ি করে এটা চালু করে গেছেন। এখন এই লাইন বন্ধ রাখতে পারছি না। তবে আগামী এক মাসের মধ্যে বিশুদ্ধ ও পরিষ্কার পানি সরবরাহ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত