Ajker Patrika

অরক্ষিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ত্রিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১৯: ১১
Thumbnail image

ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্স। একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ছয় মাস ধরে নষ্ট হয়ে আছে। এ ছাড়া হাসপাতালের সীমানা প্রাচীর ভেঙে পড়েছে। অরক্ষিত অবস্থায় প্রবেশ করছে গরু-ছাগল। রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলেই হাসপাতালে ভুতুড়ে একটা অবস্থা তৈরি হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের একটি অব্যবহৃত জরাজীর্ণ ভবনে কোনো দরজা জানালা নেই। ভবনের কক্ষগুলোতে পড়ে রয়েছে মাদক সেবনের বিভিন্ন উপাদান। মাদকসেবীরা দরজা-জানালা খুলে বিক্রি করে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এগুলো খুলে সংরক্ষণ করেছে।

আরও দেখা যায়, হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ড অপরিষ্কার, বাথরুমের দরজা নেই। সেখানের রোগীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রসূতি ওয়ার্ডের অস্ত্রোপচার কক্ষের যন্ত্রাংশ থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকের অভাবে হয় না অস্ত্রোপচার। সন্তান প্রসবের পর যে কক্ষে রাখা হয়, সেখানে নেই বাতি ও ফ্যান।

হাসপাতালে জেনারেটর থাকলেও তা পড়ে আছে অচল অবস্থায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে গরমে রোগীরা অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েন। অন্যদিকে সেবা ঠিকমতো না মিললেও হাসপাতালের টিকিট ফি ৩ টাকার স্থলে নেওয়া হচ্ছে ৫ থেকে ১০ টাকা। হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফি মেশিন নষ্ট। তাই বাড়তি টাকা খরচ করে চিকিৎসকদের পছন্দমতো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে হচ্ছে। একটি এক্স-রে মেশিন থাকলেও তা অনেক পুরোনো। ইসিজির অবস্থা একই রকম।

ভুক্তভোগী নওপাড়া গ্রামের মামুন তালুকদার অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালটির পরিবেশ নোংরা। আর বিদ্যুৎ চলে গেলে অন্ধকার নেমে আসে। ওষুধ কোম্পানির লোকজন সব সময় চিকিৎসকদের ঘিরে থাকেন। এ কারণে চিকিৎসকেরা ঠিকমতো রোগী দেখতে পারেন না। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রিপ্রেজেনটেটিভের দখলে থাকে পুরো হাসপাতাল।

টিকিটের দায়িত্বে থাকা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি মূল্য ৩ টাকা। কিন্তু আমরা অনেক দিন ধরে ৫ টাকা করে নিচ্ছি। কর্তৃপক্ষ নিতে বলছে তাই ৫ টাকা নিই।’ এই প্রতিবেদকের সামনেই এক রোগীর কাছ থেকে ১০ টাকা নেওয়া হয়। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ভুলে নেওয়া হয়েছে। ফেরত দিয়ে দেব।’

হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের কনসালট্যান্ট সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘এত দিন শল্যচিকিৎসক ও অ্যানেসথেটিস্ট ছিলেন না। তাই অস্ত্রোপচার বন্ধ ছিল। কয়েক দিন হলো চিকিৎসক এসেছেন। এখন দ্রুতই প্রসূতি ওয়ার্ডের কার্যক্রম শুরু হবে। এ ওয়ার্ডে কিছু জিনিসের স্বল্পতা রয়েছে, তা-ও সমাধান হয়ে যাবে।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেনারেটর নষ্ট, তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে রোগীদের সমস্যা হয়। তাই আইপিএসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় বাইরে থেকে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে হয়। অ্যাম্বুলেন্সের জন্য স্থানীয় সাংসদের ডিউ লেটার নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। শিগগিরই অ্যাম্বুলেন্সও চলে আসবে। রোগীর ফি অনেক বছর ধরে ৫ টাকা নেওয়া হয়। অতিরিক্ত ২ টাকা হাসপাতালের উন্নয়নকাজে ব্যয় করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত