Ajker Patrika

বাড়ছে পদ্মার পানি নির্ঘুম রাত চারঘাটে

সনি আজাদ, চারঘাট (রাজশাহী) 
Thumbnail image

ফারাক্কা থেকে নেমে আসা পানিতে বাড়ছে পদ্মার পানি, সঙ্গে বাড়ছে ভাঙনের আশঙ্কা। এ কারণে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার পদ্মাপারের হাজারো মানুষ। গত সাত দিনে উপজেলার সদর ইউনিয়ন ও ইউসুফপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার জমি, ফসল ও গাছপালা পদ্মায় বিলীন হয়েছে।

এক দশক ধরে এসব এলাকার মানুষ ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) স্থায়ী পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে নদীভাঙনের শিকার হয়ে কয়েক হাজার পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। ভাঙনের কবলে পড়ে ভূমিহীন হয়েছে অসংখ্য পরিবার।

এবারও বর্ষা মৌসুমে পদ্মার পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই চারঘাটের ইউসুফপুর ও সদর ইউনিয়নের প্রায় ছয়টি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়। এসব এলাকায় পাউবোর কার্যক্রম নেই বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তবে পাউবোর কর্মকর্তারা বলছেন, ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি কথাটা ভুল। চারঘাট-বাঘা এলাকায় পদ্মার ভাঙন রোধে ৭২২ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বর্তমানে চলমান আছে। এ মৌসুমে উপজেলার সব এলাকায় কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। এ প্রকল্পের কাজ আগামী মৌসুমে শেষ হবে। এ কাজ শেষ হলেই ভাঙন রোধ হবে।

এলাকার জমি, ফসল ও গাছপালা পদ্মায় বিলীন গত ৭ দিনে। সেখানে পাউবোর কার্যক্রম নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। টাকা বরাদ্দের জটিলতায় ভাঙন রোধ প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয়।

রাজশাহী পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাগুলো নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা প্রকল্পের আওতায় কাজ চলছে। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২২ কোটি ২৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে টাকা বরাদ্দের জটিলতায় প্রকল্পের কাজ সঠিক সময়ে শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

পদ্মাপারের এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, রাওথা এলাকায় নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু বাঁধের পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর, চন্দনশহর ও গোপালপুর চর এলাকায় পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। দক্ষিণ পিরোজপুর এলাকায় গত সাত দিনে কয়েক বিঘা ফসলি জমি ও গাছপালা পদ্মায় বিলীন হয়েছে। এদিকে ইউসুফপুর এলাকার নদী রক্ষা বাঁধেও ভাঙন শুরু হয়েছে।

পদ্মাপারের পিরোজপুর এলাকার বাসিন্দা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, প্রতিবছরই নদীতে বিলীন হচ্ছে তাঁদের বসতভিটা ও কৃষিজমি। ভাঙন রোধে নেই কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা। যখন ভাঙন শুরু হয়, তখনই নামমাত্র কাজ করা হয়। যে কাজে কোনো সফলতা আসে না। গত সাত দিনে কয়েক বিঘা জমি পদ্মায় বিলীন হলেও পাউবো তা প্রতিরোধে আসেনি।

উপজেলার ইউসুফপুর কৃষি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘ইউসুফপুর এলাকার পুরোনো বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে এ বছর নদীতে বিলীন হবে উপজেলার চারটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক গ্রাম।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ বলেন, নদীর পানি প্রতিদিনই বাড়ছে। ভাঙন রোধে প্রকল্পের কাজও চলমান আছে। ইউসুফপুর এলাকায় আগামী মৌসুমে বাঁধের কাজ শুরু হবে। কিন্তু পিরোজপুর ও চন্দন শহর এলাকা বাঁধ তৈরির আওতায় নেই। তবে পানি বাড়ায় যেসব এলাকায় নদীভাঙন শুরু হচ্ছে, সেখানে জিও ব্যাগ ফেলাসহ যাবতীয় প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত