Ajker Patrika

তিনটি পরিকল্পিত হত্যা প্রমাণ পুলিশের হাতে

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ১৯ আগস্ট ২০২২, ১১: ৪২
Thumbnail image

কক্সবাজারের শহরের পর্যটন জোনের আবাসিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজের কক্ষে মৃত্যুর হার বেড়েছে। তাৎক্ষণিক এসব মৃত্যু আত্মহত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে ধরা হয়। তবে পুলিশের তদন্তে কয়েকটি মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণ মিলেছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত আবাসিক হোটেল থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গত বছর উদ্ধার করা হয় ৯ জন এবং এর আগে ২০২০ সালে উদ্ধার হয়েছে ৫ জনের মরদেহ। পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতি বছর এ হার তুলনামূলকভাবে বাড়ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গত ৬ আগস্ট কক্সবাজার শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের ‘সি কক্স’ আবাসিক হোটেলের স্টাফ কোয়ার্টার থেকে খালেদ আশরাফ বাপ্পি (২২) নামের এক হোটেল ব্যবস্থাপকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাপ্পি সি কক্সে খণ্ডকালীন চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা করতেন। তাঁর, মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে কাজ করছে পুলিশ।

গত ১ আগস্ট কলাতলী ডলফিন মোড়ের একটি অভিজাত রিসোর্ট থেকে সৌরভ শিকদার (৩৪) নামের একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সৌরভ জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধুরং ইউনিয়নের শিকদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি স্ত্রীর সঙ্গে ওই রিসোর্টে ছিলেন। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত হতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে জানান কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. সেলিম উদ্দিন।

গত ১৭ মে উদ্ধার করা হয় ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকার লাবণি মণি (১৯) নামের এক কিশোরীর মরদেহ। এ ঘটনায় কিশোরীর বাবা মো. মনির এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করে মামলা করেছেন।

১৮ মে উদ্ধার হওয়া মো. মনিরুল ইসলামের (৪৬) মৃত্যুর কারণও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ মামলাটি এখনো তদন্তাধীন বলে জানা গেছে।

এরপর ২০ মে একটি রিসোর্ট থেকে ছেনোয়ারা বেগম (২১) নামের এক রোহিঙ্গা নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনাও পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে।

এ বছরের ৭ জুন উদ্ধার করা হয় চকরিয়া উপজেলার রুবি আকতার মিম (২১) নামের এক নারীর মরদেহ। এটিও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে মামলা হয়। এ তিন নারীর মৃত্যু পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে।

২০২১ সালের ১৬ মার্চ কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয় শহরের বাদশাঘোনা এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে আবদুল মালেক (২৪) এর মৃতদেহ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।

২০২১ সালের ২১ সেপ্টেম্বর ফারজানা (২৬) নামের কুমিল্লার এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এটিও পরিকল্পিত হত্যা বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়।

২০২০ সালে আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার হওয়া পাঁচজনের মধ্যে দুটি পরিকল্পিত হত্যা আর তিনটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে পুলিশ জানিয়েছে।

হোটেল মালিক সমিতির এক নেতা বলেন, কিছু হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজের ব্যবস্থাপক নিয়ম না মেনে কক্ষ ভাড়া দেন। এ কারণে এ রকম ঘটনা ঘটছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে কোনো পরিকল্পনার দরকার হয় না। ভ্রমণে এসে সঙ্গীর সঙ্গে অভিমান বা নানা কারণে মৃত্যু হতে পারে। তবে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, পুলিশ এসব মৃত্যু গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে।

কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, পর্যটন জোনের হোটেল মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজগুলোকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত