Ajker Patrika

পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে উন্নয়নের ছোঁয়া

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান ও সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি 
পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে উন্নয়নের ছোঁয়া

আজ শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর। ঐতিহাসিক পার্বত্য চুক্তির রজতজয়ন্তী। ১৯৯৭ সালের এই দিনে সরকারের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগঠন জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

এ চুক্তির ফলে পাহাড়ে প্রায় দুই যুগের বিরাজমান সংঘাত, সংঘর্ষ ও রক্তপাতের আনুষ্ঠানিক অবসান হয়। চুক্তির পর থেকে ২৫ বছরে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সবচেয়ে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায়।

আর এর সুফল পাচ্ছেন পাহাড়ি, বাঙালি সবাই।

চুক্তির পর যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল উন্নয়ন হয়। বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামের সঙ্গে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির  সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়। এই তিন জেলায় চুক্তির পর ২৫ বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার সড়কপথ ও সেতু নির্মাণ হয়। এতে পাহাড়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়।

সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশে ১০০টি পাকা সেতু উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত (তিন পার্বত্য জেলা) সড়ক নির্মাণ পার্বত্য চট্টগ্রামে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন এনেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, শান্তিচুক্তির পর পাহাড়ের সড়ক যোগাযোগ ও সেতু নির্মাণে অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকা ব‍্যয় হয়েছে। এর মধ্যে শুধু সড়ক বিভাগের মাধ্যমে অন্তত ১০ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। এ ছাড়া এলজিইডি বিগত ২৫ বছরে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য জেলা পরিষদ আরও পাঁচ হাজার কোটি টাকার সড়ক ও সেতুর উন্নয়নকাজ করেছে।

সড়ক বিভাগের সূত্রমতে, ১ হাজার ৬৯৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সীমান্ত (বান্দরবান-খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি) ৩১৭ কিলোমিটার সড়ক অন্যতম। সড়কটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে তিন পার্বত্য জেলার সীমান্ত যোগাযোগে আমূল পরিবর্তন হবে। সড়কের নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। সম্প্রতি সেনাপ্রধান সীমান্ত সড়কের নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন।

বান্দরবান ও রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং চট্টগ্রাম সংযোগের জন‍্য বান্দরবান সড়ক বিভাগ চুক্তির পর হতে এ পর্যন্ত চার তিন শ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার সড়ক ও শতাধিক পাকা সেতু নির্মাণ করে।

খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশল সবুজ চাকমা বলেন, পাহাড়ের সর্বত্র এখন পাকা সড়ক তৈরি হয়েছে। বেইলি ব্রিজের পরিবর্তে পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে পর্যটকদের যাতায়াতের পথ সুগম হয়েছে। ভোগান্তি ছাড়াই কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারছেন কৃষকেরা।

পার্বত্য চুক্তিকে পাহাড়ে আশীর্বাদ উল্লেখ করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘চুক্তির আগে প্রান্তিক লেভেলে গিয়ে অবকাঠামো উন্নয়নসহ কাজ করার পরিবেশ ছিল না। আজকের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, সড়ক তৈরি হয়েছে, বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন হয়েছে। পর্যটকেরা ভালোভাবে যাতায়াত করতে পারছেন। ফলে পর্যটন খাতে অর্থ সরবরাহ বেড়েছে।’

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে আজ শুক্রবার পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগও কর্মসূচি পালন করবে। সকাল নয়টায় জেলা কালেক্টরেট চত্বর থেকে শোভাযাত্রা বের করা হবে। সকাল ১০টায় টাউন হল মিলনায়তনে শান্তিচুক্তি বিষয়ে আলোচনা সভা। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত