Ajker Patrika

সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন

তিন ইস্যু নিয়ে ভোটে সংশয়

  • সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জামায়াতসহ কিছু দলের। বিএনপি এটির বিপক্ষে।
  • সংসদ নির্বাচন আগে, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে—এ নিয়েও বিভক্তি।
  • প্রতিশ্রুত সময়ে জুলাই সনদ সই নিয়ে শঙ্কা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের।
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ৩০ জুন ২০২৫, ১১: ৫৫
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের পর ২০২৬ সালের রমজান শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহেও নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে, এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল যৌথ বিবৃতিতে। সে ক্ষেত্রে ওই সময়ের মধ্যেই সংস্কার এবং জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচারের বিষয়ে পর্যাপ্ত অগ্রগতি‌ অর্জন করা প্রয়োজন হবে। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে এখন পর্যন্ত মৌলিক কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় হিমশিম খাচ্ছে কমিশন। মোটাদাগে তিন বিষয়ে ঝুলে আছে আলোচনা। বিষয়গুলো সমাধান না হলে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সংশয় কাটছে না।

কখনো নেপথ্যে, কখনো আনুষ্ঠানিক সংলাপের যেটুকু প্রকাশ্যে আনা হয়েছে, তাতে এটা পরিষ্কার যে কী কী জোগাড়যন্ত্র করে, কীভাবে এবং ঠিক কখন জাতীয় নির্বাচন করা যাবে, সে বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বেশ দূরত্ব রয়ে গেছে। এ দূরত্ব থাকার বিষয়টি স্বীকারও করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের সপ্তম দিন গতকাল রোববার তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও সত্যি কথা হচ্ছে, আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি।’

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) মাঠে সক্রিয় দলগুলোর সাম্প্রতিক বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে আইনসভার গঠনপ্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলো কমপক্ষে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো আগে জাতীয় নির্বাচন চায়; অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপি চায় আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। তারা মনে করছে, ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা নির্বাচনে দল তিনটির ভালো করার সুযোগ আছে। এতে বিএনপি এককভাবে জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ফল পেতে পারে, এমন ধারণা ভুল প্রমাণ করা যেতে পারে। এর বাইরে নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসনের অবস্থাও যাচাই হয়ে যেতে পারে।

আইনসভায় দলগুলোকে প্রতিনিধিত্বকারী সদস্যরা কী প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হবেন, তা নিয়েও আছে মতভেদ। বিএনপি ও সমমনারা চায়, আইনসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে নিম্নকক্ষে প্রতিটি আসনে এমপিরা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে; আর উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন নিম্নকক্ষে প্রাপ্ত আসনের আনুপাতিক হারে।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন চায়, উভয় কক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন দলগুলোর মোট প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে। আর এনসিপি চায় নিম্নকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হবেন সরাসরি ভোটে; আর উচ্চকক্ষে মোট প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে।

আগে স্থানীয় সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচন করার পর আনুপাতিক হারের বিধানের আওতায় আইনসভার নির্বাচন করা গেলে উভয় কক্ষে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও এনসিপির সদস্যসংখ্যা সরাসরি ভোটে নির্বাচনে জিতে আসা সদস্যের তুলনায় বেশি হতে পারে, এমন আশাবাদ আছে এই তিন দলে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও আইনসভায় সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের দাবিটি গত শুক্রবার ঢাকায় এক সমাবেশে জোরালোভাবে তুলেছে সংশ্লিষ্ট দলগুলো। ইসলামী আন্দোলনের আয়োজনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ সমমনারা এ দাবি তোলে। এ দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান থাকায় বিএনপি ও তার সমমনাদের সেখানে আমন্ত্রণ করা হয়নি।

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান মনে করেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হওয়া উচিত। এতে নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও দক্ষতা যাচাই করা যাবে। শুক্রবার সিলেটে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তবে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে আদালতের মাধ্যমে জুলাই হত্যাযজ্ঞের কিছু অভিযোগের নিষ্পত্তি করা এবং পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করার বাধ্যবাধকতা সংবিধানে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে প্রায় সব দল একমত হয়েছে।

চলতি জুনের মধ্যে মৌলিক বিষয়গুলোয় ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আগামী মাসের শুরুর দিকে ‘জুলাই সনদ’ অথবা ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ একটি দেওয়া যেতে পারে, এমন আশা দেখিয়েছিল সরকার। বাস্তবে অনেক বিষয়ে দলগুলোর অনড় অবস্থানের ফলে জুলাই সনদ নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ‘জুলাই সনদ’ সইয়ের আশা ছিল ঐকমত্য কমিশনের। কিন্তু এটি সেদিনই সম্ভব না-ও হতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ।

দলগুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে বিভিন্ন দাবি জানানো এবং সরকারের ওপর চাপ তৈরির কৌশল নিলেও মুহাম্মদ ইউনূস ঠিক কী করতে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে প্রশ্ন আছে প্রায় সব মহলে। লন্ডন থেকে ফেরার পর তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের আলোচনায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ইস্যু হিসেবে সীমিত আকারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়টি এসেছে, এমন আভাস দিচ্ছেন উভয়ের ঘনিষ্ঠজনেরা। এ কারণে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সিইসির আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।

অন্যদিকে, সরকারের ভেতর-বাইরে অনেকে মনে করছেন, আনুষ্ঠানিক সংলাপ ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের বাইরেও বিভিন্ন মহল নানা ইস্যুতে সংলাপের গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে প্রভাব খাটাচ্ছে। এতে করে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টায় গতি আনা যাচ্ছে না।

জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কোনটি আগে হবে, সংসদে প্রতিনিধিত্ব কীভাবে নির্ণীত হবে, জুলাই সনদ হবে কি না—এসব নিয়ে আলোচনার মধ্যেই আরেকটি বিষয়ও বেশ জোরালোভাবে সামনে এসেছে। তা হলো সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য একটি কমিটি গঠনের বিষয়ও সংবিধানে যুক্ত করতে চায় ঐকমত্য কমিশন। কমিশনের এ প্রস্তাব সমর্থন করছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, এনসিপিসহ কয়েকটি দল। তবে এই ধরনের কমিটি গঠনকে নির্বাহী বিভাগের হাত-পা বেঁধে দেওয়ার শামিল বলে মনে করে বিএনপি। বিএনপির কারণে মৌলিক সংস্কার আটকে আছে বলে অভিযোগ করেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।

সংলাপে বিএনপি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি গতকাল বলেন, ঐকমত্য কীভাবে, কোন প্রক্রিয়ায় হবে, তা ঠিক করতে হবে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব বিষয়ে সনদে আনা যেতে পারে। যেগুলোতে হবে না, সেগুলো এখন বাস্তবায়ন হবে না। ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া সব প্রস্তাব এখনই মানতে হবে, সে ধারণা থেকে বের হওয়ার তাগিদও দেন তিনি।

সাংবিধানিক পদগুলোতে নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনসংক্রান্ত সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়টি গতকালের সংলাপে তুলে ধরেন জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি পরে সাংবাদিকদের বলেন, সার্চ কমিটি থাকলেও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ হতো প্রধানমন্ত্রীর গোপন তালিকা থেকে। সংবিধানে বিষয়টি যুক্ত হলে প্রধানমন্ত্রীর হাত-পা বেঁধে দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, তা ভুল-বোঝাবুঝি থেকে বলা হচ্ছে, এমনটা তিনি মনে করেন।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে করা এবং আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ছাড়া জাতীয় নির্বাচন হবে না, এমন দাবির বিপক্ষে বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একেকজন একেকটা দাবি তুলে নির্বাচনকে পিছিয়ে, নির্বাচনের অবস্থা সর্বনাশ করে দিয়ে এ জাতির সর্বনাশ করতে চাচ্ছে।’ গতকাল ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

এনসিপি মনে করে, সরকার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা বলেছিল। কিন্তু তার কোনো উদ্যোগ নেই। এই অভিযোগ তুলে ধরে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গতকাল বলেন, সরকার এ বিষয়ে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ায় এনসিপির উদ্যোগে আগামী ৩ আগস্ট জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের গত ১০ মের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে: নাহিদ ইসলাম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ১৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই অভিযোগ করেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টা জুলাই সনদের আওতাধীন। সে বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়েছে—তত্ত্বাবধায়ক সরকার কীভাবে গঠিত হবে ও কোন প্রক্রিয়ায় গঠিত হবে। সেখানে নোট অব ডিসেন্টের বিষয়টা আছে। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জুলাই সনদে আসবে। গণভোটের পরে এ বিষয়ে চূড়ান্ত হওয়া সম্ভব। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে যাওয়ার আসলে কোনো ধরনের সুযোগ নেই। ফলে এই কথা (তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা) যদি বলে থাকেন, যাঁরা বলছেন, তাঁদের দুরভিসন্ধি রয়েছে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রসঙ্গে কথা বলে বিএনপির প্রতিনিধিদল ৷

নাহিদ ইসলাম জানান, বিএনপি প্রতিনিধিদলের এই আলাপের বিষয়ে তাঁরা আইন উপদেষ্টার কাছে জানতে চেয়েছিলেন। নাহিদ বলেন, ‘আমরা জিজ্ঞেস করেছি, বিষয়টা কী। আইন উপদেষ্টা আমাদের বলেছেন যে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের না, বরং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো যাতে আচরণ করে, অর্থাৎ নিরপেক্ষভাবে, সেই বিষয়ে বলা হয়েছে।’

অন্তর্বর্তী সরকারে ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে দুজন উপদেষ্টা আছেন। তাঁদের নিয়ে নিরপেক্ষ উপদেষ্টা পরিষদ সম্ভব কি না—তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এ বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্র উপদেষ্টাদের বিষয়ে যেটা বারবার বলা হয়, তাঁরা কোনো দলের প্রতিনিধি হিসেবে কিন্তু সরকারে নেই। গণ-অভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে রয়েছে। ফলে অন্য উপদেষ্টা যে রকম, ছাত্র উপদেষ্টাও সে রকম। ছাত্র উপদেষ্টাকে যদি কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধি বা সংশ্লিষ্টতা হিসেবে দেখা হয়, অন্য অনেক উপদেষ্টারও বিভিন্ন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে।

নাহিদ এ বিষয়ে আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক সাবেক, মানে ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে, ফলে সেই বিষয়গুলোও সরকারকে বিবেচনা করতে হবে; কারণ, সরকার যখন গঠিত হয়েছিল, তখন বিভিন্ন দলের রেফারেন্সে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত হয়েছে এবং তাঁরা এই সরকারে ঠাঁই পেয়েছেন। ফলে উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হলে শুধু ছাত্র উপদেষ্টা নন, অন্য যে উপদেষ্টাগুলো রয়েছেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সেই নামগুলো বলেছি—কার কার কোন কোন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বা প্রশাসনের ভাগবাঁটোয়ারার সঙ্গে জড়িত আছে। ফলে সার্বিকভাবে এটা বিবেচনা করতে হবে।’

আজ বিকেল ৫টায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যমুনায় পৌঁছায় এনসিপির প্রতিনিধিদল। নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এ দলে ছিলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সরকারে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা থাকার কোনো কারণ নেই: রিজভী

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ১৯
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ফাইল ছবি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের প্রশাসনে যদি কোনোভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কেউ থাকে, তাদের রাখা যাবে না। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাই নির্দলীয়। নির্দলীয় হলে সেখানে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা বা দলীয় পরিচয়ের লোকদের থাকার কোনো কারণ নেই।’

আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরের নানা ধরনের অপকর্মে যাঁরা জড়িত এবং যাঁরা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তাঁরা গোপনে থাকেননি, অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপ নেবে, তখন তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। তাহলে বিগত ১৬ বছর যাঁরা ভোটে বিশ্বাস হারিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায়। আইনি প্রক্রিয়ায় যা হওয়ার, তা হবে। যাঁরা অপরাধী, তাঁদের বিচার হওয়া উচিত। তবে এসব কিছুতে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যমুনায় এনসিপির প্রতিনিধিদল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৩৬
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধি দল। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটায় প্রতিনিধি দলটি যমুনায় পৌঁছায়।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এনসিপির আহবায়ক নাহিদ ইসলাম। প্রতিনিধি দলে আছেন দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন ও যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া ও আসন্ন নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে এ বৈঠকে আলোচনা হতে পারে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিতর্কিতদের সরিয়ে সরকারকে সত্বর তত্ত্বাবধায়ক আদলে যেতে হবে: আমীর খসরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৩৪
সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেট বিজনেস ডায়ালগ-২০২৫’ অনুষ্ঠানে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

নিরপেক্ষতার স্বার্থে অন্তর্বর্তী সরকারকে অতিসত্বর ‘তত্ত্বাবধায়কের’ ভূমিকায় চলে যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। সেই সঙ্গে ‘বিতর্কিত’ ব্যক্তিদের সরকার থেকে সরিয়ে দেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আমীর খসরু বলেছেন, যেহেতু বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারই দায়িত্ব পালন করবে আগামী নির্বাচনে, যেহেতু আর কোনো তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসবে না নির্বাচনের আগে, সে জন্য এই সরকারকে অতিসত্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন আমীর খসরু। ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গুরুত্ব’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম।

সরকারের উদ্দেশে আমীর খসরু বলেন, ‘অতিসত্বর সরকারকে কেয়ারটেকার মুডে চলে যেতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারের জায়গায় অবতীর্ণ হওয়ার অর্থ হচ্ছে, পুরোপুরি নিরপেক্ষ অবস্থানে যাওয়ার কথা বলছি।’

অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, অনেকগুলো পদায়ন, অনেকগুলো বদলি, অনেকগুলো বিষয়ে সরকারের অবস্থান যে, কিছু কিছু লোক এগুলোকে প্রভাবিত করছে। সে জন্য আমরা বলেছি, যাদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, যারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে অথবা যারা কোনো দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে কিংবা দলের সঙ্গে নিজেদের আইডেনটিফাই করেছে, তারা সরকারে থাকলে কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকা পালন করতে পারবে না।’

আমীর খসরু আরও বলেন, কেয়ারটেকার সরকারের যে চরিত্র, সেটা সংবিধানে বলা আছে... কেয়ারটেকার সরকার কীভাবে পরিচালিত হবে, সেটাও সংবিধানে বলা আছে পরিষ্কারভাবে। সুতরাং, এই সরকারকে এই মুহূর্ত থেকে সংবিধানে যে কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকা দেওয়া আছে, সেই বৈশিষ্ট্য তাদের এখন থেকে করতে হবে তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ডে।

নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, যে সমস্ত দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় নেমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার যে চেষ্টা হচ্ছে, এগুলো তো ঠিক না। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় যাওয়ার তো দিন শেষ হয়ে গেছে। শেখ হাসিনাকে বিদায় করা হয়েছে। এখন যাবেন জনগণের কাছে। আপনার দলের যদি কোনো কিছু আপনি মনে করেন বাংলাদেশের মানুষের জন্য, আপনার যত দাবিদাওয়া আছে, সবগুলো নিয়ে আগামী নির্বাচনে আপনার মেনিফেস্টো নিয়ে জনগণের কাছে যান।’

বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার পালাবদল চায় উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা চাই, একটা শান্তিপূর্ণ ট্রানজিশন হোক। তাহলে যাঁরা সরকারে আছেন, উনাদের তো সম্মানের সঙ্গে যেতে হবে...আমরা সেটা তো চাই। কিন্তু কিছু লোকের কার্যকলাপের মাধ্যমে সেটা যদি বিঘ্নিত হয়, সে জন্য আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেছি, আপনারা পুরোপুরি কেয়ারটেকার মুডে চলে যান।’

বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, যাঁদের নিয়ে বিতর্ক আছে, সেই লোকগুলোকে চলে যেতে হবে। তাঁরা থাকলে তো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। সবার কাছে মেসেজ যাবে, ক্লিয়ার মেসেজ যাবে যে, অন্তর্বর্তী সরকার তার সঠিক নিরপেক্ষ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান, প্রয়াত মশিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে রিটা রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ হোসেন আলমগীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’

রেডিট পোস্টের জেরে মধ্যরাতে উত্তাল বুয়েট, ছাত্রকে বহিষ্কারের পর মামলা

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

সেনানিবাসের সাবজেলেই রাখা হবে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে: কারা মহাপরিদর্শক

প্রবাসীর স্ত্রীকে বেঁধে মারধর, সালিসে তালাক নিয়ে আরেকজনের সঙ্গে বিয়ে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত