Ajker Patrika

বলসুন্দরীতে বাজিমাত

সাখাওয়াত হোসেন, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ)
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭: ৪০
বলসুন্দরীতে বাজিমাত

খেতে সুস্বাদু, আকারে বড়। দেখতে সুন্দর হওয়ায় বেশ কদর। বলা হচ্ছে বলসুন্দরী জাতের কুলের কথা। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এ জাতের কুল চাষ করে বাজিমাত করেছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং এখানকার মাটি কুল চাষের উপযোগী হওয়ায় ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত দাম পেয়েও খুশি চাষিরা। খরচের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি লাভবান হবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এখানকার মাটি চাষাবাদের জন্য খুবই উর্বর। দু-তিন বছর ধরে এখানকার চাষিরা উন্নত জাতের কুল চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন। বাজারে এসব কুলের চাহিদা থাকায় তাঁরা লাভবানও হচ্ছেন। এসব কুলের মধ্যে বলসুন্দরী, কাশ্মীরি ও আপেল কুলের আবাদ ব্যাপক বেড়েছে। পৌর সদরের হাপানিয়া, এগারসিন্দুর ইউনিয়নের আদিত্যপাশা, খামা, বাগানবাড়ি, নারান্দী ইউনিয়নের পোড়াবাড়িয়া ও জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় এসব কুলের চাষ হয়েছে এবার। জমিতে কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।

সরেজমিনে পৌর সদরের হাপানিয়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কের পাশে অনেকটা জায়গাজুড়ে কুলের চাষ হয়েছে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ধরে আছে থোকা থোকা কুল। সবুজ আর হালকা গোলাপি বর্ণের এবং আকারে বড় চকচকে এসব কুল পথচারীসহ যে কারও নজর কাড়বে।

বাগান আর থোকা থোকা কুল দেখতে দেখতেই একটি বাগানে গিয়ে কথা হলো নজরুল ইসলাম রঙ্গ মিয়া নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে।

পাশের পাকুন্দিয়া বড়বাড়ি এলাকায় তাঁর বাড়ি। ওই বাগানের মালিকের কাছ থেকে এবারের ফলন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাগানের স্বত্ব কিনে নিয়েছেন তিনি।

নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাসখানেক আগে দেড় লাখ টাকায় আড়াই একরের বলসুন্দরী কুলের এ বাগানটি কিনেছি। কিছুদিন আগে থেকে কুল বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ কেজি কুল বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি ৪৫-৪৭ টাকা দরে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।’ তিনি বলেন, এ পর্যন্ত ৪ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন তিনি। আরও লাখ দুয়েক টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।

উপজেলার আদিত্যপাশা গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানালেন, তিনি এক বিঘা জমিতে বলসুন্দরী জাতের কুল চাষ করেছেন। এতে চারাসহ সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫০-৬০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার কুল বিক্রি করেছেন। আরও লাখখানেক টাকার কুল বিক্রি হবে বলে আশা করছেন।

এগারসিন্দুর ইউনিয়নের আঙ্গিয়াদী ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিমুল হক বলেন, বলসন্দুরী উন্নত জাতের কুল। এ জাতের কুল দেখতে সুন্দর, আকারে বড় ও খেতে সুস্বাদু। বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা থাকায় কৃষকেরা দাম পাচ্ছেন ভালো। দিনদিন এখানে এসব কুলের আবাদ বাড়ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ধান চাষের পাশাপাশি কৃষকদের উন্নত জাতের ফল চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। নতুন উদ্যোক্তা ও শিক্ষিত তরুণেরা এগিয়ে আসছেন। অল্পসময়ের চাষাবাদে লাভবান হয়ে তাঁরা স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন সাধারণ লোকজনের নিরাপদ পুষ্টির চাহিদা মিটছে, তেমনি উদ্যোক্তারা লাভবান হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত