Ajker Patrika

কর্তাদের ‘বক্সিংয়ে’ কাবু ফেডারেশন

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
আপডেট : ২১ জুলাই ২০২২, ১০: ২০
কর্তাদের ‘বক্সিংয়ে’ কাবু ফেডারেশন

ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য এসেছিল বক্সিংয়ের সৌজন্যে। এশিয়ান গেমসে দেশের প্রথম পদকও এনে দিয়েছিল এই খেলাটি। বক্সিংয়ের সেই সাফল্য দিনে দিনে মলিন হয়েছে অনিয়ম, অবহেলা আর কর্তাদের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে।

সাম্প্রতিক সময়ে বক্সিং ফেডারেশন একাধিকবার আলোচনায় এসেছে নির্বাচন নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে। গত ২৬ এপ্রিল নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। ফেডারেশন নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যখন আবারও নির্বাচিত হওয়ার পথে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তুহিন, তখন এই প্যানেলের কজন কাউন্সিলরের প্রার্থিতার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানান সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ কুদ্দুস খান। ২১ এপ্রিল আদালতে রিট করেন তিনি। ২০ ভোটারের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলেন কুদ্দুস খান। যাচাই-বাছাই শেষে নির্বাচন কমিশন থেকে বাদ দেওয়া হয় ছয়জনকে। তুহিন প্যানেলের কাউন্সিলরদের বৈধতার প্রশ্ন তুলে আবারও আপত্তি জানান কুদ্দুস খান। ২২ এপ্রিল থেকে আদালতের আদেশে এখন পর্যন্ত ঝুলে আছে বক্সিং ফেডারেশনের নির্বাচন। সমস্যা সমাধানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের দিকে তাকিয়ে আছে ফেডারেশন।

ফেডারেশনের নির্বাচন-বিতর্ক নিয়ে কুদ্দুস খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নির্বাচনে জিততে নামসর্বস্ব সব ক্লাব থেকে কাউন্সিলর করা হচ্ছে। অনেক ক্লাবের অস্তিত্বই নেই। এমনকি সরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন দপ্তরিও ফেডারেশনের সদস্য। সাধারণ সম্পাদক ফুটবলের লোক। এরা কীভাবে বক্সিংয়ের উন্নতি করবেন?’

লম্বা সময় নির্বাচন না হওয়ায় ফেডারেশনে এখন কোনো নির্বাচিত প্রতিনিধি নেই। নির্বাচনকে সামনে রেখে আগের কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করায় তিন মাসের বেশি সময় বক্সিং চলছে অভিভাবক ছাড়াই। নির্বাচনের আগ পর্যন্ত অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে পরিচালনা করার কথা থাকলেও বক্সিংয়ে সেটি দিতে চায় না জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। সংস্থাটির আইন কর্মকর্তা কবিরুল হাসান বললেন, ‘আর কিছুদিন দেখা হবে, না হলে অ্যাডহক কমিটি দেওয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী অ্যাডহক কমিটি চান না। তিনি চান, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন।’ কুদ্দুস খানের অভিযোগের জবাবে কবিরুল হাসান বলেন, ‘প্রথম শুনানিতে তাঁরা ৯ জনের বিরুদ্ধে তথ্যাদি জমা দিতে পেরেছিলেন, যেখানে তিনজন সঠিক ছিলেন। বাকি ছয়জন ভুয়া। ১১ জনের ব্যাপারে শক্ত প্রমাণ আছে। প্রমাণ ছাড়া কীভাবে তাঁদের ভুয়া বলা যাবে?’

অভিযোগ আছে সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম তুহিন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হোসেনের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ গেমস ও জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও শৃঙ্খলার অভিযোগে এক বক্সারকে বাদ দিয়ে নিজ এলাকা যশোরের বক্সারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে কমনওয়েলথের ক্যাম্পে, এমন অভিযোগ উঠেছে মোতালেবের বিরুদ্ধে। কুদ্দুস খান-সমর্থিত এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলায় একজন কোচকে ‘ব্যারিকেড’ দিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম-সংলগ্ন এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকিও নাকি দিয়েছেন তুহিন। একই অভিযোগ মোতালেবের বিরুদ্ধেও।

মোতালেব হোসেনকে নিয়ে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তুহিন। কমনওয়েলথে যোগ্যরাই সুযোগ পেয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এখানে এলাকাপ্রীতি-স্বজনপ্রীতি করার কোনো সুযোগই নেই। জাতীয় দলে যখন ট্রায়াল হয়, তখন কিছু ব্যাপার আছে। একজন খেলোয়াড়ের যাওয়া-না যাওয়া, কার উঠতি বয়স, কার পড়তি বয়স এসব বিবেচনা করা হয়। এমন না যে কমনওয়েলথে বাংলাদেশের বক্সাররা সোনা পাবে। আমাদের লক্ষ্য এসএ গেমসে ভালো করা।’ কোচকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি, ‘কতজন কত কিছু বলে! কেন আমি এসব বলতে যাব? আমার সঙ্গে কারও শত্রুতা নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত