Ajker Patrika

স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থীরা বিনা ভোটে জয়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১৬: ২৩
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর পছন্দের প্রার্থীরা বিনা ভোটে জয়ী

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ৬৫টি পদের মধ্যে ৬৪টিতেই আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা ভোটে জিততে চলেছেন। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৪৪ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৫ জন প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। ওই এলাকার সাংসদ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। মন্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা থেকে কেউ আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রাজিবুল করিম চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে দাখিল করা ৬৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল গত রোববার। শুধু উত্তরদা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের জুনায়েদ হোসেনের বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কাশেম পাটওয়ারী মনোনয়নপত্র জমা দেন।

স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে। যে যেভাবে পারছে, সেভাবে ম্যানেজ করে নিয়ে নিচ্ছে।’

যেভাবে ঠিক করা হয় প্রার্থী
মঙ্গলবার লাকসাম হাউজিং এস্টেট এলাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে বিশেষ বৈঠকে বসেন স্থানীয় নেতারা। সেখানেই বর্তমান দুই চেয়ারম্যানকে বাদ দিয়ে মোট ৫টি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইসহাক মিয়ার সভাপতিত্বে মনোনয়ন সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন লাকসাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুছ ভূঁইয়া।

স্থানীর নেতাদের দাবি, তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতেই ইউনুছ ভূঁইয়া ৫ জন চেয়ারম্যানের নাম ঘোষণা করেন।

তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় সাংসদ ও মন্ত্রী তাজুল ইসলামের পছন্দের সব প্রার্থীই মনোনয়ন পেয়েছেন। সভায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মন্ত্রীর শ্যালক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী। প্রত্যেকটি ইউনিয়নের প্রার্থীদের দাঁড়াতে বলা হয়। তারপর পূর্বনির্ধারিত একজনের নাম ঘোষণা করা হয়। আর এটাই মানতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। অন্যথা হলে পরিণতি নিয়ে হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়।

মন্ত্রীর জনপ্রিয়তা
একাধিক প্রার্থী না থাকার কারণ হিসেবে মো. ইউনুছ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের দিক থেকে আমরা যেকোনো দল, যেকোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে স্বাগত জানাই। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক তা আমাদের মন্ত্রীও চান, আমরাও চাই।’ তিনি বলেন, ‘তাজুল ইসলামের নেতৃত্বের প্রতি সব নেতা-কর্মী আস্থাশীল। কাজেই তিনি যেটা সিদ্ধান্ত দেন, তার বাইরে আমাদের প্রার্থীদের বিপরীতে কেউ নির্বাচনে অংশ নেবে না।’

আওয়ামী লীগ নেতা তাবারক উল্লাহ কায়েস বলেন, ‘তাজুল ইসলামের জনপ্রিয়তার কারণে আজকের এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। মানুষ বুঝতে পেরেছে, তাজুল ইসলাম যদি সাংসদ থাকেন, মন্ত্রী থাকেন, তাহলে এলাকার উন্নয়ন হবে। আর ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা ওনার লোক না হয়, তাহলে এলাকার উন্নয়ন হবে না।’ এক পদে অনেকেই নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়ে কায়েস বলেন, ‘তাজুল ইসলামের জনপ্রিয়তা ও তাঁর প্রতি ভালোবাসার কারণে দলের নেতা-কর্মী ও লাকসামের মানুষ এক পদে একাধিক প্রার্থী হননি।’

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে আজকের পত্রিকা। কয়েকবার ফোন ও খুদেবার্তা পাঠিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত