ফারুক মেহেদী

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
কী দিয়ে শুরু করব ভাবছি। কত কিছুই তো চারপাশে ঘুরছে। সব নিয়ে লিখতে মন চাইছে না। দুয়েকটি বিষয় নিয়ে আজকের লেখা শেষ করব। যেগুলো সরকারের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বিব্রত হওয়ার মতো; কিছু কিছু বিষয় সরকারি দলকে নানান প্রশ্ন আর সমালোচনার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। অথচ এগুলো না হলেই হয়তো ভালো হতো। জনগণও ভালো থাকত, আবার সরকার বা সরকারি দলকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো না।
ক. এ লেখা যখন লিখছি, তখন দেশজুড়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এদিন ৮৩৮টি ইউপিতে নির্বাচন হয়। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে খুনোখুনি, মারামারি, হামলা, সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ খবরগুলো যখন নিউজ ফিডে আসে, তখন চোখ আটকে যায়। পড়তে ইচ্ছে না করলেও পড়তে হয়। তখন ভাবি, একটি নির্বাচন হবে, মানুষ উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন, পরিচিত সব মানুষ নিজেদের প্রতিনিধি বাছাই করবেন, যাঁদের সুখে-দুঃখে পাশে পাবেন, এমন নির্বাচনের বদলে সেখানে কেন মানুষের রক্ত ঝরবে?
ভাবা যায় না। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই কিছুদিন ধরে স্থানীয় এই নির্বাচন ঘিরে ভালো কোনো খবর নেই। প্রথম ধাপের নির্বাচনেও ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এত কিছু দেখে, নিজের ভেতরে হতাশা চেপে বসেছে! সরকারে থাকা দল আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে। বিএনপি সরাসরি নিজেদের মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে না। আর অন্য দলেরও নিজস্ব প্রার্থীর তৎপরতা কম। সুতরাং নির্বাচনটি বলা যায় একেবারে আওয়ামী লীগকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। সমস্যা হলো একটি মাত্র দলের প্রার্থীর অংশগ্রহণের নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে চাঞ্চল্যের কমতি নেই! এ চাঞ্চল্য দলীয় সম্প্রীতি বা ঐক্যের নয়; এ চাঞ্চল্য কোন্দল, খুনোখুনি, মারামারি আর ভাঙনের।
এসব খবর পড়ে ও দেখে এ ধারণা হয়েছে যে, একটি স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। একটি ইউপিতে একজনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, আর বঞ্চিত হচ্ছেন অন্তত কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে দেওয়া হলেও, স্থানীয় শীর্ষ নেতারাই নামের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন।
আর এই নামের তালিকা করার ক্ষেত্রেও যে শতভাগ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা মানা হচ্ছে বা দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য নেতা-কর্মীকে বাছাই করা সম্ভব হচ্ছে, এমন নয়।
এখানেও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে অনেক অযোগ্য, অগ্রহণযোগ্য ও পক্ষপাতদুষ্ট প্রার্থীও মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ঢুকে যাচ্ছেন। এতে তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার লোক।
কোন্দল যদি এখানেই থেমে যেত, তাহলে কথাই ছিল না। কিন্তু এর রেশ রয়ে যাচ্ছে। সামনে আসছে সাধারণ নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই নির্বাচনেও এই কোন্দলের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা তাঁদের। কারণ, প্রার্থী মনোনয়নে দায়ী করা হচ্ছে স্থানীয় এমপিদের। স্থানীয়ভাবে এই ধারণা জন্ম হয়েছে যে, এমপিদের সমর্থন ছাড়া প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার কথা নয়। যদি তা-ই হয়, তাহলে একটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কমবেশি ১৫টি ইউনিয়ন থাকে, সেখানে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন ১৫ জন। অথচ প্রায় প্রতিটি ইউপিতেই দলীয় অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ রকম প্রতি ইউপিতে গড়ে চারজন করে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে ওই সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় মোট বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা হয় ৬০ জন। তাঁদের অনেকেই আবার নির্বাচিতও হচ্ছেন। ফলে বেলা শেষে দেখা যায়, এমপি সাহেবের পছন্দের লোক থাকছেন হয়তো ১৫ জন, কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে কোন্দল ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর বিপক্ষে চলে যাচ্ছেন এর চার গুণ বা ৬০ জন প্রার্থী।
স্থানীয়দের অভিমত, যদি কমবেশি সর্বত্র এ রকম ঘটনা ঘটে, তাহলে আসছে নির্বাচনে দলের হয়ে এমপির জন্য ১৫ জন খাটলেও বাকি ৬০ জনের ভূমিকা কী হবে, এটি যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। তাঁরা কি এমপির হয়ে কাজ করবেন, নাকি নীরব থাকবেন, নাকি আর কারও পক্ষে কাজ করবেন–এটিই বড় প্রশ্ন। তার মানে হচ্ছে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন দলের জন্য ভালোর চেয়ে বরং খারাপই হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত ধারণা করা যায়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন বিতর্কমুক্ত হয়নি। অনেকে একে খুনোখুনির নির্বাচন বলছেন। অনেকে নির্বাচন না বলে প্রহসন বলছেন ইত্যাদি। অথচ সরকার একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলে এত ঘটনা, এত প্রাণহানি কিংবা এত প্রশ্নের জন্ম হতো না। আর সামনে নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থীদের জন্য ঝুঁকিও তৈরি হতো না।
খ. এবার তেল নিয়ে একটু কথা বলি। সাধারণত তেল নিয়ে কথা বললে, অনেক মুখরোচক বিষয় সামনে আসতে পারে বলে মানুষ মনে করে। কিন্তু আমি যা বলব তা পুরোই উল্টো। এটা ‘তেলমারা’ তো নয়ই; বরং তেল-জলের যে সম্পর্ক, সে রকম একটা বিষয়! আমি তেল মানে জ্বালানি তেল; মানে ডিজেল, কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে দুয়েক কথা বলেই লেখাটি শেষ করব।
সম্প্রতি সরকার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার যুক্তিতে দেশের বাজারেও এর দাম বাড়িয়েছে। শুধু বাড়ায়নি; বরং প্রতি লিটার ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। এটা সরকারের কার মাথা থেকে এসেছে, জানি না; তবে যিনিই সরকারকে এ বুদ্ধি দিয়েছেন, তিনি যে সাধারণ মানুষের স্নায়ু বুঝতে পারেন না–এটা নিশ্চিত করে বলা যায়! দুই বছর ধরে সারা বিশ্ব করোনার মতো মরণব্যাধি মহামারির সঙ্গে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধে প্রিয়জন হারানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে মানুষ কঠিন দিন পার করছে। আয় কমেছে, চাকরি চলে গেছে। ব্যবসায় ধস নেমেছে। ব্যাংকঋণ বেড়েছে। সরকারও কিছু কিছু খাতকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা দিয়েছে। এখন সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও মন্দার ক্ষত শুকায়নি। উল্টো প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যব্যবহার্য প্রায় সব পণ্যের দাম অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। বলা যায় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। এ রকম এটি সময়ে কীভাবে সরকার মানুষকে আরও বাড়তি চাপে ফেলতে পারে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে এটা কী করে সম্ভব, এটা বোধগম্য হচ্ছে না।
এটা ঠিক সরকারের আয় কম হলেও ব্যয়ের চাপ আছে। তাই বড় লোকসান দিয়ে বেশি দিন চলা কঠিন। কিন্তু জ্বালানি খাতে সরকার গত কয়েক বছরে বিপুল অঙ্কের মুনাফা করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কিছুদিন যদি ভর্তুকি দিত, তাহলে যে লোকসান হতো, সামনে জ্বালানি তেলের দাম কমলে তা পুষিয়ে নিতে পারত কিংবা মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আরেকটু ভালোর দিকে গেলে সিদ্ধান্তটি নিতে পারত। আকস্মিক একসঙ্গে এত দাম বাড়ানোর আগে মানুষকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। জ্বালানি তেল একক কোনো পণ্য নয়; এটি স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি বা পণ্য হিসেবে পরিচিত। যেমন একটি জাহাজ যখন ডোবে, তখন শুধু জাহাজটিই ডোবে না; এর সঙ্গে শত শত মানুষ, তাদের পরিবার, তাদের প্রতিষ্ঠান, স্বপ্ন কিংবা সম্ভাবনাও ডোবে!
তেমনি জ্বালানি তেলের লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো মানেই ভোক্তার পকেট থেকে শুধু ১৫ টাকাই কেটে রাখা নয়; বরং এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া, কৃষকের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ, উদ্যোক্তার পণ্য উৎপাদন ব্যয়সহ এ রকম অসংখ্য খাতে দাম ও খরচ বাড়ার মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। আর ভোক্তা মানে দেশের সাধারণ মানুষ। যাদের সুরক্ষা দেওয়ার কথা সরকারের। সরকার হয়তো জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে কিছুটা লোকসান কমাল। কিন্তু পুরো অর্থনীতিতে এর সুযোগে যে ব্যয় বাড়ল, তার পরিমাণ এর চেয়ে শত গুণ বেশি; যা শুধু টাকার অঙ্কে হিসাব হবে না। এটা প্রতিযোগিতা সক্ষমতায়ও আঘাত করতে পারে। যে ক্ষতি পুরো অর্থনীতির। এটা সম্ভবত সরকারকে অঙ্ক করে কেউ বুঝিয়ে দেয়নি!
ফারুক মেহেদী, সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
কী দিয়ে শুরু করব ভাবছি। কত কিছুই তো চারপাশে ঘুরছে। সব নিয়ে লিখতে মন চাইছে না। দুয়েকটি বিষয় নিয়ে আজকের লেখা শেষ করব। যেগুলো সরকারের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বিব্রত হওয়ার মতো; কিছু কিছু বিষয় সরকারি দলকে নানান প্রশ্ন আর সমালোচনার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। অথচ এগুলো না হলেই হয়তো ভালো হতো। জনগণও ভালো থাকত, আবার সরকার বা সরকারি দলকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো না।
ক. এ লেখা যখন লিখছি, তখন দেশজুড়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এদিন ৮৩৮টি ইউপিতে নির্বাচন হয়। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে খুনোখুনি, মারামারি, হামলা, সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ খবরগুলো যখন নিউজ ফিডে আসে, তখন চোখ আটকে যায়। পড়তে ইচ্ছে না করলেও পড়তে হয়। তখন ভাবি, একটি নির্বাচন হবে, মানুষ উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন, পরিচিত সব মানুষ নিজেদের প্রতিনিধি বাছাই করবেন, যাঁদের সুখে-দুঃখে পাশে পাবেন, এমন নির্বাচনের বদলে সেখানে কেন মানুষের রক্ত ঝরবে?
ভাবা যায় না। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই কিছুদিন ধরে স্থানীয় এই নির্বাচন ঘিরে ভালো কোনো খবর নেই। প্রথম ধাপের নির্বাচনেও ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এত কিছু দেখে, নিজের ভেতরে হতাশা চেপে বসেছে! সরকারে থাকা দল আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে। বিএনপি সরাসরি নিজেদের মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে না। আর অন্য দলেরও নিজস্ব প্রার্থীর তৎপরতা কম। সুতরাং নির্বাচনটি বলা যায় একেবারে আওয়ামী লীগকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। সমস্যা হলো একটি মাত্র দলের প্রার্থীর অংশগ্রহণের নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে চাঞ্চল্যের কমতি নেই! এ চাঞ্চল্য দলীয় সম্প্রীতি বা ঐক্যের নয়; এ চাঞ্চল্য কোন্দল, খুনোখুনি, মারামারি আর ভাঙনের।
এসব খবর পড়ে ও দেখে এ ধারণা হয়েছে যে, একটি স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। একটি ইউপিতে একজনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, আর বঞ্চিত হচ্ছেন অন্তত কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে দেওয়া হলেও, স্থানীয় শীর্ষ নেতারাই নামের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন।
আর এই নামের তালিকা করার ক্ষেত্রেও যে শতভাগ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা মানা হচ্ছে বা দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য নেতা-কর্মীকে বাছাই করা সম্ভব হচ্ছে, এমন নয়।
এখানেও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে অনেক অযোগ্য, অগ্রহণযোগ্য ও পক্ষপাতদুষ্ট প্রার্থীও মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ঢুকে যাচ্ছেন। এতে তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার লোক।
কোন্দল যদি এখানেই থেমে যেত, তাহলে কথাই ছিল না। কিন্তু এর রেশ রয়ে যাচ্ছে। সামনে আসছে সাধারণ নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই নির্বাচনেও এই কোন্দলের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা তাঁদের। কারণ, প্রার্থী মনোনয়নে দায়ী করা হচ্ছে স্থানীয় এমপিদের। স্থানীয়ভাবে এই ধারণা জন্ম হয়েছে যে, এমপিদের সমর্থন ছাড়া প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার কথা নয়। যদি তা-ই হয়, তাহলে একটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কমবেশি ১৫টি ইউনিয়ন থাকে, সেখানে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন ১৫ জন। অথচ প্রায় প্রতিটি ইউপিতেই দলীয় অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ রকম প্রতি ইউপিতে গড়ে চারজন করে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে ওই সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় মোট বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা হয় ৬০ জন। তাঁদের অনেকেই আবার নির্বাচিতও হচ্ছেন। ফলে বেলা শেষে দেখা যায়, এমপি সাহেবের পছন্দের লোক থাকছেন হয়তো ১৫ জন, কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে কোন্দল ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর বিপক্ষে চলে যাচ্ছেন এর চার গুণ বা ৬০ জন প্রার্থী।
স্থানীয়দের অভিমত, যদি কমবেশি সর্বত্র এ রকম ঘটনা ঘটে, তাহলে আসছে নির্বাচনে দলের হয়ে এমপির জন্য ১৫ জন খাটলেও বাকি ৬০ জনের ভূমিকা কী হবে, এটি যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। তাঁরা কি এমপির হয়ে কাজ করবেন, নাকি নীরব থাকবেন, নাকি আর কারও পক্ষে কাজ করবেন–এটিই বড় প্রশ্ন। তার মানে হচ্ছে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন দলের জন্য ভালোর চেয়ে বরং খারাপই হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত ধারণা করা যায়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন বিতর্কমুক্ত হয়নি। অনেকে একে খুনোখুনির নির্বাচন বলছেন। অনেকে নির্বাচন না বলে প্রহসন বলছেন ইত্যাদি। অথচ সরকার একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলে এত ঘটনা, এত প্রাণহানি কিংবা এত প্রশ্নের জন্ম হতো না। আর সামনে নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থীদের জন্য ঝুঁকিও তৈরি হতো না।
খ. এবার তেল নিয়ে একটু কথা বলি। সাধারণত তেল নিয়ে কথা বললে, অনেক মুখরোচক বিষয় সামনে আসতে পারে বলে মানুষ মনে করে। কিন্তু আমি যা বলব তা পুরোই উল্টো। এটা ‘তেলমারা’ তো নয়ই; বরং তেল-জলের যে সম্পর্ক, সে রকম একটা বিষয়! আমি তেল মানে জ্বালানি তেল; মানে ডিজেল, কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে দুয়েক কথা বলেই লেখাটি শেষ করব।
সম্প্রতি সরকার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার যুক্তিতে দেশের বাজারেও এর দাম বাড়িয়েছে। শুধু বাড়ায়নি; বরং প্রতি লিটার ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। এটা সরকারের কার মাথা থেকে এসেছে, জানি না; তবে যিনিই সরকারকে এ বুদ্ধি দিয়েছেন, তিনি যে সাধারণ মানুষের স্নায়ু বুঝতে পারেন না–এটা নিশ্চিত করে বলা যায়! দুই বছর ধরে সারা বিশ্ব করোনার মতো মরণব্যাধি মহামারির সঙ্গে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধে প্রিয়জন হারানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে মানুষ কঠিন দিন পার করছে। আয় কমেছে, চাকরি চলে গেছে। ব্যবসায় ধস নেমেছে। ব্যাংকঋণ বেড়েছে। সরকারও কিছু কিছু খাতকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা দিয়েছে। এখন সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও মন্দার ক্ষত শুকায়নি। উল্টো প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যব্যবহার্য প্রায় সব পণ্যের দাম অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। বলা যায় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। এ রকম এটি সময়ে কীভাবে সরকার মানুষকে আরও বাড়তি চাপে ফেলতে পারে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে এটা কী করে সম্ভব, এটা বোধগম্য হচ্ছে না।
এটা ঠিক সরকারের আয় কম হলেও ব্যয়ের চাপ আছে। তাই বড় লোকসান দিয়ে বেশি দিন চলা কঠিন। কিন্তু জ্বালানি খাতে সরকার গত কয়েক বছরে বিপুল অঙ্কের মুনাফা করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কিছুদিন যদি ভর্তুকি দিত, তাহলে যে লোকসান হতো, সামনে জ্বালানি তেলের দাম কমলে তা পুষিয়ে নিতে পারত কিংবা মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আরেকটু ভালোর দিকে গেলে সিদ্ধান্তটি নিতে পারত। আকস্মিক একসঙ্গে এত দাম বাড়ানোর আগে মানুষকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। জ্বালানি তেল একক কোনো পণ্য নয়; এটি স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি বা পণ্য হিসেবে পরিচিত। যেমন একটি জাহাজ যখন ডোবে, তখন শুধু জাহাজটিই ডোবে না; এর সঙ্গে শত শত মানুষ, তাদের পরিবার, তাদের প্রতিষ্ঠান, স্বপ্ন কিংবা সম্ভাবনাও ডোবে!
তেমনি জ্বালানি তেলের লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো মানেই ভোক্তার পকেট থেকে শুধু ১৫ টাকাই কেটে রাখা নয়; বরং এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া, কৃষকের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ, উদ্যোক্তার পণ্য উৎপাদন ব্যয়সহ এ রকম অসংখ্য খাতে দাম ও খরচ বাড়ার মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। আর ভোক্তা মানে দেশের সাধারণ মানুষ। যাদের সুরক্ষা দেওয়ার কথা সরকারের। সরকার হয়তো জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে কিছুটা লোকসান কমাল। কিন্তু পুরো অর্থনীতিতে এর সুযোগে যে ব্যয় বাড়ল, তার পরিমাণ এর চেয়ে শত গুণ বেশি; যা শুধু টাকার অঙ্কে হিসাব হবে না। এটা প্রতিযোগিতা সক্ষমতায়ও আঘাত করতে পারে। যে ক্ষতি পুরো অর্থনীতির। এটা সম্ভবত সরকারকে অঙ্ক করে কেউ বুঝিয়ে দেয়নি!
ফারুক মেহেদী, সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
ফারুক মেহেদী

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
কী দিয়ে শুরু করব ভাবছি। কত কিছুই তো চারপাশে ঘুরছে। সব নিয়ে লিখতে মন চাইছে না। দুয়েকটি বিষয় নিয়ে আজকের লেখা শেষ করব। যেগুলো সরকারের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বিব্রত হওয়ার মতো; কিছু কিছু বিষয় সরকারি দলকে নানান প্রশ্ন আর সমালোচনার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। অথচ এগুলো না হলেই হয়তো ভালো হতো। জনগণও ভালো থাকত, আবার সরকার বা সরকারি দলকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো না।
ক. এ লেখা যখন লিখছি, তখন দেশজুড়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এদিন ৮৩৮টি ইউপিতে নির্বাচন হয়। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে খুনোখুনি, মারামারি, হামলা, সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ খবরগুলো যখন নিউজ ফিডে আসে, তখন চোখ আটকে যায়। পড়তে ইচ্ছে না করলেও পড়তে হয়। তখন ভাবি, একটি নির্বাচন হবে, মানুষ উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন, পরিচিত সব মানুষ নিজেদের প্রতিনিধি বাছাই করবেন, যাঁদের সুখে-দুঃখে পাশে পাবেন, এমন নির্বাচনের বদলে সেখানে কেন মানুষের রক্ত ঝরবে?
ভাবা যায় না। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই কিছুদিন ধরে স্থানীয় এই নির্বাচন ঘিরে ভালো কোনো খবর নেই। প্রথম ধাপের নির্বাচনেও ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এত কিছু দেখে, নিজের ভেতরে হতাশা চেপে বসেছে! সরকারে থাকা দল আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে। বিএনপি সরাসরি নিজেদের মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে না। আর অন্য দলেরও নিজস্ব প্রার্থীর তৎপরতা কম। সুতরাং নির্বাচনটি বলা যায় একেবারে আওয়ামী লীগকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। সমস্যা হলো একটি মাত্র দলের প্রার্থীর অংশগ্রহণের নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে চাঞ্চল্যের কমতি নেই! এ চাঞ্চল্য দলীয় সম্প্রীতি বা ঐক্যের নয়; এ চাঞ্চল্য কোন্দল, খুনোখুনি, মারামারি আর ভাঙনের।
এসব খবর পড়ে ও দেখে এ ধারণা হয়েছে যে, একটি স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। একটি ইউপিতে একজনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, আর বঞ্চিত হচ্ছেন অন্তত কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে দেওয়া হলেও, স্থানীয় শীর্ষ নেতারাই নামের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন।
আর এই নামের তালিকা করার ক্ষেত্রেও যে শতভাগ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা মানা হচ্ছে বা দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য নেতা-কর্মীকে বাছাই করা সম্ভব হচ্ছে, এমন নয়।
এখানেও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে অনেক অযোগ্য, অগ্রহণযোগ্য ও পক্ষপাতদুষ্ট প্রার্থীও মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ঢুকে যাচ্ছেন। এতে তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার লোক।
কোন্দল যদি এখানেই থেমে যেত, তাহলে কথাই ছিল না। কিন্তু এর রেশ রয়ে যাচ্ছে। সামনে আসছে সাধারণ নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই নির্বাচনেও এই কোন্দলের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা তাঁদের। কারণ, প্রার্থী মনোনয়নে দায়ী করা হচ্ছে স্থানীয় এমপিদের। স্থানীয়ভাবে এই ধারণা জন্ম হয়েছে যে, এমপিদের সমর্থন ছাড়া প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার কথা নয়। যদি তা-ই হয়, তাহলে একটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কমবেশি ১৫টি ইউনিয়ন থাকে, সেখানে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন ১৫ জন। অথচ প্রায় প্রতিটি ইউপিতেই দলীয় অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ রকম প্রতি ইউপিতে গড়ে চারজন করে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে ওই সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় মোট বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা হয় ৬০ জন। তাঁদের অনেকেই আবার নির্বাচিতও হচ্ছেন। ফলে বেলা শেষে দেখা যায়, এমপি সাহেবের পছন্দের লোক থাকছেন হয়তো ১৫ জন, কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে কোন্দল ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর বিপক্ষে চলে যাচ্ছেন এর চার গুণ বা ৬০ জন প্রার্থী।
স্থানীয়দের অভিমত, যদি কমবেশি সর্বত্র এ রকম ঘটনা ঘটে, তাহলে আসছে নির্বাচনে দলের হয়ে এমপির জন্য ১৫ জন খাটলেও বাকি ৬০ জনের ভূমিকা কী হবে, এটি যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। তাঁরা কি এমপির হয়ে কাজ করবেন, নাকি নীরব থাকবেন, নাকি আর কারও পক্ষে কাজ করবেন–এটিই বড় প্রশ্ন। তার মানে হচ্ছে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন দলের জন্য ভালোর চেয়ে বরং খারাপই হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত ধারণা করা যায়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন বিতর্কমুক্ত হয়নি। অনেকে একে খুনোখুনির নির্বাচন বলছেন। অনেকে নির্বাচন না বলে প্রহসন বলছেন ইত্যাদি। অথচ সরকার একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলে এত ঘটনা, এত প্রাণহানি কিংবা এত প্রশ্নের জন্ম হতো না। আর সামনে নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থীদের জন্য ঝুঁকিও তৈরি হতো না।
খ. এবার তেল নিয়ে একটু কথা বলি। সাধারণত তেল নিয়ে কথা বললে, অনেক মুখরোচক বিষয় সামনে আসতে পারে বলে মানুষ মনে করে। কিন্তু আমি যা বলব তা পুরোই উল্টো। এটা ‘তেলমারা’ তো নয়ই; বরং তেল-জলের যে সম্পর্ক, সে রকম একটা বিষয়! আমি তেল মানে জ্বালানি তেল; মানে ডিজেল, কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে দুয়েক কথা বলেই লেখাটি শেষ করব।
সম্প্রতি সরকার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার যুক্তিতে দেশের বাজারেও এর দাম বাড়িয়েছে। শুধু বাড়ায়নি; বরং প্রতি লিটার ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। এটা সরকারের কার মাথা থেকে এসেছে, জানি না; তবে যিনিই সরকারকে এ বুদ্ধি দিয়েছেন, তিনি যে সাধারণ মানুষের স্নায়ু বুঝতে পারেন না–এটা নিশ্চিত করে বলা যায়! দুই বছর ধরে সারা বিশ্ব করোনার মতো মরণব্যাধি মহামারির সঙ্গে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধে প্রিয়জন হারানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে মানুষ কঠিন দিন পার করছে। আয় কমেছে, চাকরি চলে গেছে। ব্যবসায় ধস নেমেছে। ব্যাংকঋণ বেড়েছে। সরকারও কিছু কিছু খাতকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা দিয়েছে। এখন সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও মন্দার ক্ষত শুকায়নি। উল্টো প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যব্যবহার্য প্রায় সব পণ্যের দাম অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। বলা যায় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। এ রকম এটি সময়ে কীভাবে সরকার মানুষকে আরও বাড়তি চাপে ফেলতে পারে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে এটা কী করে সম্ভব, এটা বোধগম্য হচ্ছে না।
এটা ঠিক সরকারের আয় কম হলেও ব্যয়ের চাপ আছে। তাই বড় লোকসান দিয়ে বেশি দিন চলা কঠিন। কিন্তু জ্বালানি খাতে সরকার গত কয়েক বছরে বিপুল অঙ্কের মুনাফা করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কিছুদিন যদি ভর্তুকি দিত, তাহলে যে লোকসান হতো, সামনে জ্বালানি তেলের দাম কমলে তা পুষিয়ে নিতে পারত কিংবা মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আরেকটু ভালোর দিকে গেলে সিদ্ধান্তটি নিতে পারত। আকস্মিক একসঙ্গে এত দাম বাড়ানোর আগে মানুষকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। জ্বালানি তেল একক কোনো পণ্য নয়; এটি স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি বা পণ্য হিসেবে পরিচিত। যেমন একটি জাহাজ যখন ডোবে, তখন শুধু জাহাজটিই ডোবে না; এর সঙ্গে শত শত মানুষ, তাদের পরিবার, তাদের প্রতিষ্ঠান, স্বপ্ন কিংবা সম্ভাবনাও ডোবে!
তেমনি জ্বালানি তেলের লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো মানেই ভোক্তার পকেট থেকে শুধু ১৫ টাকাই কেটে রাখা নয়; বরং এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া, কৃষকের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ, উদ্যোক্তার পণ্য উৎপাদন ব্যয়সহ এ রকম অসংখ্য খাতে দাম ও খরচ বাড়ার মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। আর ভোক্তা মানে দেশের সাধারণ মানুষ। যাদের সুরক্ষা দেওয়ার কথা সরকারের। সরকার হয়তো জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে কিছুটা লোকসান কমাল। কিন্তু পুরো অর্থনীতিতে এর সুযোগে যে ব্যয় বাড়ল, তার পরিমাণ এর চেয়ে শত গুণ বেশি; যা শুধু টাকার অঙ্কে হিসাব হবে না। এটা প্রতিযোগিতা সক্ষমতায়ও আঘাত করতে পারে। যে ক্ষতি পুরো অর্থনীতির। এটা সম্ভবত সরকারকে অঙ্ক করে কেউ বুঝিয়ে দেয়নি!
ফারুক মেহেদী, সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
কী দিয়ে শুরু করব ভাবছি। কত কিছুই তো চারপাশে ঘুরছে। সব নিয়ে লিখতে মন চাইছে না। দুয়েকটি বিষয় নিয়ে আজকের লেখা শেষ করব। যেগুলো সরকারের জন্য অনেক ক্ষেত্রেই বিব্রত হওয়ার মতো; কিছু কিছু বিষয় সরকারি দলকে নানান প্রশ্ন আর সমালোচনার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। অথচ এগুলো না হলেই হয়তো ভালো হতো। জনগণও ভালো থাকত, আবার সরকার বা সরকারি দলকেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো না।
ক. এ লেখা যখন লিখছি, তখন দেশজুড়ে দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এদিন ৮৩৮টি ইউপিতে নির্বাচন হয়। নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে খুনোখুনি, মারামারি, হামলা, সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এ খবরগুলো যখন নিউজ ফিডে আসে, তখন চোখ আটকে যায়। পড়তে ইচ্ছে না করলেও পড়তে হয়। তখন ভাবি, একটি নির্বাচন হবে, মানুষ উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিতে যাবেন, পরিচিত সব মানুষ নিজেদের প্রতিনিধি বাছাই করবেন, যাঁদের সুখে-দুঃখে পাশে পাবেন, এমন নির্বাচনের বদলে সেখানে কেন মানুষের রক্ত ঝরবে?
ভাবা যায় না। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই কিছুদিন ধরে স্থানীয় এই নির্বাচন ঘিরে ভালো কোনো খবর নেই। প্রথম ধাপের নির্বাচনেও ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এত কিছু দেখে, নিজের ভেতরে হতাশা চেপে বসেছে! সরকারে থাকা দল আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে। বিএনপি সরাসরি নিজেদের মার্কায় প্রার্থী দিচ্ছে না। আর অন্য দলেরও নিজস্ব প্রার্থীর তৎপরতা কম। সুতরাং নির্বাচনটি বলা যায় একেবারে আওয়ামী লীগকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছে। সমস্যা হলো একটি মাত্র দলের প্রার্থীর অংশগ্রহণের নির্বাচন ঘিরে সাধারণ মানুষের তেমন আগ্রহ না থাকলেও আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে চাঞ্চল্যের কমতি নেই! এ চাঞ্চল্য দলীয় সম্প্রীতি বা ঐক্যের নয়; এ চাঞ্চল্য কোন্দল, খুনোখুনি, মারামারি আর ভাঙনের।
এসব খবর পড়ে ও দেখে এ ধারণা হয়েছে যে, একটি স্থানীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। একটি ইউপিতে একজনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে, আর বঞ্চিত হচ্ছেন অন্তত কয়েকজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে দেওয়া হলেও, স্থানীয় শীর্ষ নেতারাই নামের তালিকা করে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছেন।
আর এই নামের তালিকা করার ক্ষেত্রেও যে শতভাগ স্বচ্ছতা, যোগ্যতা মানা হচ্ছে বা দলের ত্যাগী ও জনপ্রিয় এবং গ্রহণযোগ্য নেতা-কর্মীকে বাছাই করা সম্ভব হচ্ছে, এমন নয়।
এখানেও স্বচ্ছতার ঘাটতি রয়েছে। ফলে অনেক অযোগ্য, অগ্রহণযোগ্য ও পক্ষপাতদুষ্ট প্রার্থীও মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ঢুকে যাচ্ছেন। এতে তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। আর আহত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার লোক।
কোন্দল যদি এখানেই থেমে যেত, তাহলে কথাই ছিল না। কিন্তু এর রেশ রয়ে যাচ্ছে। সামনে আসছে সাধারণ নির্বাচন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় অনেক নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই নির্বাচনেও এই কোন্দলের প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা তাঁদের। কারণ, প্রার্থী মনোনয়নে দায়ী করা হচ্ছে স্থানীয় এমপিদের। স্থানীয়ভাবে এই ধারণা জন্ম হয়েছে যে, এমপিদের সমর্থন ছাড়া প্রার্থীর চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার কথা নয়। যদি তা-ই হয়, তাহলে একটি নির্বাচনী এলাকায় যদি কমবেশি ১৫টি ইউনিয়ন থাকে, সেখানে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন ১৫ জন। অথচ প্রায় প্রতিটি ইউপিতেই দলীয় অনেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। এ রকম প্রতি ইউপিতে গড়ে চারজন করে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকলে ওই সাংসদের নির্বাচনী এলাকায় মোট বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা হয় ৬০ জন। তাঁদের অনেকেই আবার নির্বাচিতও হচ্ছেন। ফলে বেলা শেষে দেখা যায়, এমপি সাহেবের পছন্দের লোক থাকছেন হয়তো ১৫ জন, কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে কোন্দল ছড়িয়ে পড়ায় তাঁর বিপক্ষে চলে যাচ্ছেন এর চার গুণ বা ৬০ জন প্রার্থী।
স্থানীয়দের অভিমত, যদি কমবেশি সর্বত্র এ রকম ঘটনা ঘটে, তাহলে আসছে নির্বাচনে দলের হয়ে এমপির জন্য ১৫ জন খাটলেও বাকি ৬০ জনের ভূমিকা কী হবে, এটি যথেষ্ট চিন্তার বিষয়। তাঁরা কি এমপির হয়ে কাজ করবেন, নাকি নীরব থাকবেন, নাকি আর কারও পক্ষে কাজ করবেন–এটিই বড় প্রশ্ন। তার মানে হচ্ছে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন দলের জন্য ভালোর চেয়ে বরং খারাপই হয়েছে বলে এখন পর্যন্ত ধারণা করা যায়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন বিতর্কমুক্ত হয়নি। অনেকে একে খুনোখুনির নির্বাচন বলছেন। অনেকে নির্বাচন না বলে প্রহসন বলছেন ইত্যাদি। অথচ সরকার একটু ভিন্নভাবে চিন্তা করলে এত ঘটনা, এত প্রাণহানি কিংবা এত প্রশ্নের জন্ম হতো না। আর সামনে নির্বাচন ঘিরে দলীয় প্রার্থীদের জন্য ঝুঁকিও তৈরি হতো না।
খ. এবার তেল নিয়ে একটু কথা বলি। সাধারণত তেল নিয়ে কথা বললে, অনেক মুখরোচক বিষয় সামনে আসতে পারে বলে মানুষ মনে করে। কিন্তু আমি যা বলব তা পুরোই উল্টো। এটা ‘তেলমারা’ তো নয়ই; বরং তেল-জলের যে সম্পর্ক, সে রকম একটা বিষয়! আমি তেল মানে জ্বালানি তেল; মানে ডিজেল, কেরোসিনের দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিয়ে দুয়েক কথা বলেই লেখাটি শেষ করব।
সম্প্রতি সরকার বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার যুক্তিতে দেশের বাজারেও এর দাম বাড়িয়েছে। শুধু বাড়ায়নি; বরং প্রতি লিটার ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছে। এটা সরকারের কার মাথা থেকে এসেছে, জানি না; তবে যিনিই সরকারকে এ বুদ্ধি দিয়েছেন, তিনি যে সাধারণ মানুষের স্নায়ু বুঝতে পারেন না–এটা নিশ্চিত করে বলা যায়! দুই বছর ধরে সারা বিশ্ব করোনার মতো মরণব্যাধি মহামারির সঙ্গে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধে প্রিয়জন হারানোর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে মানুষ কঠিন দিন পার করছে। আয় কমেছে, চাকরি চলে গেছে। ব্যবসায় ধস নেমেছে। ব্যাংকঋণ বেড়েছে। সরকারও কিছু কিছু খাতকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা দিয়েছে। এখন সবকিছু খুলে দেওয়া হলেও মন্দার ক্ষত শুকায়নি। উল্টো প্রতিটি জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্যব্যবহার্য প্রায় সব পণ্যের দাম অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছেছে। বলা যায় মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা অবস্থা। এ রকম এটি সময়ে কীভাবে সরকার মানুষকে আরও বাড়তি চাপে ফেলতে পারে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্রে এটা কী করে সম্ভব, এটা বোধগম্য হচ্ছে না।
এটা ঠিক সরকারের আয় কম হলেও ব্যয়ের চাপ আছে। তাই বড় লোকসান দিয়ে বেশি দিন চলা কঠিন। কিন্তু জ্বালানি খাতে সরকার গত কয়েক বছরে বিপুল অঙ্কের মুনাফা করেছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আর কিছুদিন যদি ভর্তুকি দিত, তাহলে যে লোকসান হতো, সামনে জ্বালানি তেলের দাম কমলে তা পুষিয়ে নিতে পারত কিংবা মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা আরেকটু ভালোর দিকে গেলে সিদ্ধান্তটি নিতে পারত। আকস্মিক একসঙ্গে এত দাম বাড়ানোর আগে মানুষকে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। জ্বালানি তেল একক কোনো পণ্য নয়; এটি স্ট্র্যাটেজিক কমোডিটি বা পণ্য হিসেবে পরিচিত। যেমন একটি জাহাজ যখন ডোবে, তখন শুধু জাহাজটিই ডোবে না; এর সঙ্গে শত শত মানুষ, তাদের পরিবার, তাদের প্রতিষ্ঠান, স্বপ্ন কিংবা সম্ভাবনাও ডোবে!
তেমনি জ্বালানি তেলের লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো মানেই ভোক্তার পকেট থেকে শুধু ১৫ টাকাই কেটে রাখা নয়; বরং এর সঙ্গে পরিবহন ভাড়া, কৃষকের উৎপাদন ও পরিবহন খরচ, উদ্যোক্তার পণ্য উৎপাদন ব্যয়সহ এ রকম অসংখ্য খাতে দাম ও খরচ বাড়ার মহোৎসব শুরু হয়ে গেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে ভোক্তার ওপর। আর ভোক্তা মানে দেশের সাধারণ মানুষ। যাদের সুরক্ষা দেওয়ার কথা সরকারের। সরকার হয়তো জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে কিছুটা লোকসান কমাল। কিন্তু পুরো অর্থনীতিতে এর সুযোগে যে ব্যয় বাড়ল, তার পরিমাণ এর চেয়ে শত গুণ বেশি; যা শুধু টাকার অঙ্কে হিসাব হবে না। এটা প্রতিযোগিতা সক্ষমতায়ও আঘাত করতে পারে। যে ক্ষতি পুরো অর্থনীতির। এটা সম্ভবত সরকারকে অঙ্ক করে কেউ বুঝিয়ে দেয়নি!
ফারুক মেহেদী, সহকারী সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
১৩ নভেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
১৩ নভেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
১৩ নভেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

তৃণমূলে দলীয় কোন্দল চূড়ান্ত রূপ নিচ্ছে। আর এসবের ফলই হচ্ছে মানুষ খুন, হামলা, মামলা ইত্যাদি। এখনো নির্বাচনের অনেক বাকি। এর মধ্যেই অন্তত অর্ধশতাধিক লোক নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে বলে গণমাধ্যমে খবর হয়েছে।
১৩ নভেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫