Ajker Patrika

৩ মাস ধরে অন্ধকারে সেতু

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ১৫: ৫০
Thumbnail image

গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত শেখ হাসিনা সেতুর বাতিগুলো প্রায় তিন মাস ধরে নষ্ট হয়ে আছে। এতে রাতে সেতু দিয়ে চলতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সেই সঙ্গে অন্ধকারে সেখানে মাদক সেবনসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ চলে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর বাতিগুলোতে সন্ধ্যার পর আলো জ্বলছে না। অন্ধকারে গাড়িগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। তরিকুজ্জামান তমজিত নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাতিগুলো বন্ধ হয়ে আছে। এগুলো দেখভালের জন্য কেউ আসেন না। সন্ধ্যার পরই সেতুর ওপর কুচকুচে অন্ধকার হয়ে যায়।

সেতু এলাকায় ফাস্ট ফুডের দোকান চালানো আসিফ জানান, কয়েক দিন আগে সেতুতে একটি মালবাহী ট্রলি দুর্ঘটনায় পড়ে। আর মোটরসাইকেলের চালকেরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। বাতিগুলো সচল থাকলে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত না।

রংপুর শহর থেকে ঘুরতে আসা আশরাফুল ও তাহমিমা দম্পতি জানান, সেতু এলাকায় নিরিবিলি মনোরম পরিবেশ থাকায় তাঁরা প্রায়ই এখানে ঘুরতে আসেন। তাঁরা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বাতিগুলো বন্ধ দেখছেন। তাই সন্ধ্যায় সেতুর ওপরে না থেকে পাশের দোকানে বসে সময় কাটান।

হামিদুর নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, বাতি বন্ধ থাকায় সেতুর ওপরে কেউ কেউ অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ে। আবার বাইরে থেকে বখাটে ছেলেরা এসে মাদক সেবন করে। এতে করে এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তিনি বাতিগুলো ঠিক করে দেওয়ার এবং পুলিশি টহল জোরদার করার আহ্বান জানান।

হামিদুরের সঙ্গে থাকা আরিফ হোসেন নামের একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকারি লোকজনকে যদি সেতুতে টাকা (টোল) তোলার দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে সব বাতি জ্বলত। এখানে টাকা নেই, এজন্য সরকারি লোকজনের খোঁজখবরও নেই।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মুন্নাফ হোসেন জানান, সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০১৮ সালে। এখন বাতি বন্ধ থাকায় রাতে জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগ বেড়েছে। এই সেতু দিয়ে বিভিন্ন যানবাহনে করে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ হাজার লোক চলাচল করেন। বিকেলে বিভিন্ন এলাকা থেকে ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ নদীর তীরে ঘুরতে আসে। বাতিগুলো বন্ধ থাকায় সন্ধ্যার পর তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

লক্ষ্মীটারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদি জানান, সেতুর বাতিগুলো বন্ধ থাকায় এখানে প্রায়ই সন্ধ্যার পর মোবাইল ফোন ছিনতাই হয়। এ ছাড়া বহিরাগত বখাটে ছেলেরা সেতুর ওপরে মাদক সেবন করে। দ্রুত বাতিগুলো মেরামত করা না হলে এখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন বাতিগুলো মেরামত এবং সেতু এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়। তা না হলে এলাকার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুলাল হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। সেখানকার দায়িত্বে থাকা বিট অফিসারকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার জন্য বলা হবে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘সেতুর বাতিগুলো চালু করার জন্য আমি উপজেলা প্রকৌশলীকে বলেছি। হয়তো কয়েক দিন সময় লাগবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁরা বাতিগুলো ঠিক করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।’

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম জানান, কয়েক দিনের মধ্যে বাতিগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত