Ajker Patrika

১০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও

আজিজুর রহমান, চৌগাছা
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ২৬
Thumbnail image

যশোরের চৌগাছায় সীমান্ত (বর্ডার) হাট বসানোর অনুমতি মেলেনি। তার আগেই সেখানে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১৯ জনের জনের কাছ থেকে জামানাত হিসেবে দশ লাখ টাকা আদায় করেছেন সাবেক এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য।

তাঁর কাছে টাকা দিয়ে উপজেলার চৌগাছা সদর ইউনিয়নের মশ্যমপুর গ্রামের ১৮ ব্যক্তি প্রতারণার শিকার হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ ছাড়া মোন্তাজ আলী নামে একজন সম্প্রতি সাপের ছোবলে মারা গেছেন।

তবে আলী হোসেন নামে ওই ইউপি সদস্য বলছেন, তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা দিয়ে লাইসেন্সের আবেদন করেছেন। করোনার কারণে এখনো লাইসেন্স হয়নি।

সরেজমিনে মশ্যমপুর গ্রামে গেলে জানা যায়, ২০১৭ সালে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা তাঁদের বলেন এই গ্রামে সীমান্ত হাট বসবে। সেখানে ২০ জন নিরাপত্তা কর্মী লাগবে। তবে চাকরির জন্য প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জামানত দিতে হবে।

তাঁর কথামতো গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে এক্সের হোসেন, শনু মণ্ডলের ছেলে জিয়াউর রহমান মণ্ডল, জাহা বক্সের ছেলে মৃত মোন্তাজ আলী, মহসিন আলীর ছেলে আব্দুল মালেক, রাজু এবং ইয়াসিন আলীসহ ১৯ ব্যক্তি জমি বিক্রি করেন। কেউবা দাদনে টাকা ধার নিয়ে গ্রামের ইউপি সদস্য ইউনুচ আলীর কাছে দেন। ৪ বছর পার হতে চললেও চাকরি তো হয়নি, এমনকি টাকাও ফিরে পাননি তাঁরা। ভুক্তভোগীরা জানান, টাকা ফেরত পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাও দেখছেন না তাঁরা। এদের মধ্যে মোন্তাজ আলী কয়েক মাস আগে সাপের ছোবলে মারা গেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চৌগাছা সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মস্যমপুর গ্রামের ইউপি সদস্য ইউনুচ আলী বলেন, যারা সে সময় হাট করছিল সেই হাট মালিক উপজেলার পাতিবিলা ইউনিয়নের মুক্তদাহ গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আলী হোসেন এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সে সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান জানেন।

সীমান্ত হাটের মালিক পরিচয় দেওয়া সাবেক ইউপি সদস্য আলী হোসেনের মুঠোফোনে কল করলে তিনি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘সেখানে হাট বসবে, দ্রুত তাঁদের টাকাও ফিরিয়ে দেব।’

অভিযুক্ত আলী হোসেন আরও বলেন, ‘এসএম হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে সাড়ে আট লাখ টাকা নিয়েছি। আমাকে দশ লাখ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও মেজ ভাই (এসএম হাবিবুর রহমান) দেড় লাখ টাকা রেখে দিয়েছেন। ওই সাড়ে আট লাখসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে আমি আন্তর্জাতিক গরু হাটের (সীমান্ত হাট) লাইসেন্স করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শাখা-২ এর বিভিন্ন জনকে দিয়েছি। করোনা সমস্যা না থাকলে লাইসেন্স হয়ে যেত।’ তবে তিনি টাকা কাকে কাকে দিয়েছেন তা বলতে রাজি হননি।

চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম হাবিবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা সত্য। ওই প্রতারক আলী হোসেন আমার লোকজনের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। আমিও তাকে খুঁজছি।’

চৌগাছা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক দেবাশীষ মিশ্র জয় বলেন, ‘আলী হোসেন আমার গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একজন আন্তর্জাতিক প্রতারক। হাটের খবর আমি জানি। শুধু হাট নয় বিভিন্নভাবে এই আলী হোসেন বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সীমান্ত হাটের বিষয়টির সঙ্গে এসএম হাবিবুর রহমান এবং রফিকুল ইসলাম জড়িত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত