Ajker Patrika

শওকত আলী

শওকত আলী

শওকত আলী বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যিক ছিলেন। তাঁর জন্ম ১৯৩৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ শহরে। রায়গঞ্জ করনেশন ইংলিশ হাইস্কুল এবং সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেন। কলেজে পড়াকালীন তিনি বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হন।

তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় তোলপাড় সৃষ্টির ঘটনা ছিল ভারতভাগ। এই ভাগের আগে-পরে দুই বাংলার মানুষের মহাবিপর্যয়ের তিনি সাক্ষী এবং শিকারও বটে। সে সময় ওই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতিতে তাঁদের টিকে থাকা সম্ভব না হওয়ায় তাঁর পরিবার পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসে। এরপর তিনি ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ সম্পন্ন করেন।

পড়াশোনা শেষ করে ১৯৫৯ সালে ঠাকুরগাঁও কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি দীর্ঘদিন তৎকালীন জগন্নাথ কলেজে অধ্যাপনা করেছেন।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁকে জেলে পাঠায় পাকিস্তানের সামরিক সরকার। তাঁর প্রথম গল্প বামপন্থী ধারার ‘নতুন সাহিত্য’ পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়।

মার্ক্সবাদী রাজনীতির সঙ্গে আজীবন তিনি সক্রিয় ছিলেন। সেই সূত্রে ‘বাঙলাদেশ লেখক শিবির’-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘বাঙলাদেশ লেখক শিবির’কে লেখক-শিল্পীদের একটি স্বাধীন সংগঠন হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টায় এতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন হাসান আজিজুল হক, শওকত আলী, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের মতো বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান ও প্রধান লেখকেরা।

শওকত আলীর বিখ্যাত উপন্যাস ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’। তবে তিনি খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেন তাঁর ত্রয়ী উপন্যাস ‘দক্ষিণায়নের দিন’, ‘কুলায় কালস্রোত’ ও ‘পূর্বরাত্রি পূর্বদিন’-এর জন্য। এই তিনটি উপন্যাসের জন্য তিনি ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার পান।

তাঁর অন্যান্য উপন্যাস হলো—অপেক্ষা, উত্তরের খেপ, শেষ বিকেলের রোদ, জননী, ওয়ারিশ, পিঙ্গল আকাশ ইত্যাদি। তিনি সামাজিক বৈষম্য, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং অর্থনৈতিক টানাপোড়েন প্রভৃতি বিষয় তুলে এনেছেন তাঁর লেখায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত