Ajker Patrika

বাম্পার ফলনেও হাসি নেই পেঁয়াজচাষিদের

শাহীন রহমান, পাবনা 
আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ১৪
বাম্পার ফলনেও হাসি নেই পেঁয়াজচাষিদের

পাবনায় আগাম জাতের ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজ উৎপাদনে বাম্পার ফলনেও হাসি নেই চাষিদের মুখে। তাঁদের অভিযোগ, বাজার ভারসাম্যহীনতায় মিলছে না ন্যায্যমূল্য। লোকসান ঠেকাতে আমদানি বন্ধ এবং কৃষক পর্যায়ে সুনির্দিষ্ট বাজারমূল্য নির্ধারণের দাবি পেঁয়াজচাষিদের। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, মুড়িকাটা পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। আর বাজারে একসঙ্গে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কম পাচ্ছেন চাষিরা।

পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৯ হাজার ৩০৫ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার মেট্রিকটন। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া ভালো থাকায় পাবনায় মুড়িকাটা পেঁয়াজের বাম্পার ফলন পেয়েছেন চাষিরা। বিঘাপ্রতি গড়ে ৫০ থেকে ৫৫ মণ ফলনে ছাড়িয়েছে কৃষি বিভাগের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও। প্রথম দিকে চাষিরা প্রতি মণ পেঁয়াজে ১ হাজার ৩০০ টাকা পেলেও হাট-বাজারে সরবরাহ বাড়ায় হঠাৎই কমে গেছে দাম। এ কারণে ভালো ফলনেও চাষিরা পড়েছেন লোকসানের দুশ্চিন্তায়।

গত বুধবার সরেজমিন পেঁয়াজ উৎপাদনে খ্যাত পাবনার সুজানগর উপজেলার চলনা, চরপাড়া, খলিলপুর, চরখলিলপুরসহ কয়েকটি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কুয়াশাঢাকা শীতের ভোরে মাঠ থেকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। আগাম জাতের এই পেঁয়াজ আবাদে কিছুটা সচ্ছলতার মুখ দেখছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে বাজারে পেঁয়াজ বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখছেন পাবনার চাষিরা।

আলাপকালে চরপাড়া গ্রামের পেঁয়াজচাষি আব্দুল কাদের বলেন, বিঘাপ্রতি যে পরিমাণ খরচ, তাতে ১ হাজার টাকা মণ পেঁয়াজ বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না। বীজ, সার, শ্রমিক, কীটনাশকের যে দাম, তাতে বর্তমান বাজারমূল্যে লোকসানই হচ্ছে। চলনা গ্রামের কৃষক আবু বক্কার বলেন, এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ রোপণ করতে সব মিলিয়ে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন সেই এক বিঘা জমির পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকায়। উৎপাদন খরচই তো উঠছে না। এ রকম হলে ভবিষ্যতে পেঁয়াজের আবাদ বাদ দিতে হবে।

সুজানগর পৌর সদরের পেঁয়াজের হাটে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় সরগরম হাট। কৃষকদের পাশাপাশি কথা হয় কয়েকজন পাইকারের সঙ্গে। তাঁরা বলেন, সকালে ১ হাজার টাকা মণ দরে পেঁয়াজ কেনার পর ঢাকার ব্যাপারীরা সেই পেঁয়াজের দাম বলছেন ৯০০ টাকা। হাটে পেঁয়াজ আসছে বেশি। এভাবে অনেকটা লোকসান দিয়ে পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে।

সুজানগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফিউল ইসলাম বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ বেশি দিন সংরক্ষণ করা যায় না। এটা অল্পদিন বাজারে থাকে। আর বাজারে একসঙ্গে সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কম পাচ্ছেন চাষিরা। অন্যান্য কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ ও সরকারিভাবে সংগ্রহ করা হলেও পেঁয়াজে সেই ব্যবস্থা নেই। বিষয়টি তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত