Ajker Patrika

নাবিল-শাহীন আবারও মুখোমুখি, দলে বিভক্তি

জাহিদ হাসান, যশোর
নাবিল-শাহীন আবারও মুখোমুখি, দলে বিভক্তি

যশোর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে শাহীন চাকলাদার ও কাজী নাবিল আহমেদের বিরোধ দীর্ঘদিনের। মূলত সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন আর আধিপত্য ঘিরেই তাঁদের দ্বন্দ্ব। এখানে টানা তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে শক্ত ভিত গড়েছেন নাবিল। অন্যদিকে কেশবপুরে সরে গিয়ে সংসদ সদস্য হওয়া শাহীন সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে হেরে গেছেন। সদরের রাজনীতিতে ভাটা পড়েছে তাঁর।

এখন সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবারও দুজনে মুখোমুখি হয়েছেন। তাঁরা পৃথকভাবে দুটি প্যানেল ঘোষণা করেছেন। প্রতিদিনই নিজস্ব প্রার্থীদের প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় পুরো জেলার রাজনীতি। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন এই উপজেলা পরিষদের টানা তিনবারের চেয়ারম্যান ছিলেন। তবে তিনি কেশবপুরে যাওয়ার পর সদরের রাজনীতিতে কিছুটা হালকা হয়ে যান। তাই এখন আবারও এখানে আধিপত্য বিস্তার করতে চান তিনি। এরই অংশ হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বসাতে চান তাঁরই চাচাতো ভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টুকে। শাহীনের এই প্যানেল থেকে সুলতান মাহমুদ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ও জ্যোৎস্না আরা মিলি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। 
এ ছাড়া শাহীনের অনুসারীদের মধ্যে আরও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ, সাধারণ সম্পাদক শাহারুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জুয়েল।

অন্যদিকে নাবিলের প্যানেলে চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী জাহিদুর রহমান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী বাশিনুর রহমান। এ ছাড়া নাবিল গ্রুপ থেকে আরও চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী এবং যুব মহিলা লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা ফাতেমা আনোয়ার।

দুই নেতা তাঁদের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে ইতিমধ্যে শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে সভা-সমাবেশ করছেন। একে অন্যকে সমালোচনা করে বক্তব্য দিচ্ছেন। এতে করে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া প্যানেলের বাইরে থেকে যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন তাঁরা দীর্ঘদিন শাহীন ও নাবিলের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। এখন নির্বাচনের সময় দুজনকে কাছে না পাওয়ায় তাঁদের এড়িয়ে চলছেন দুই বলয়ের অন্য প্রার্থীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পদবি না থাকলেও তৌহিদ চাকলাদার দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে। তৃণমূলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সে প্রার্থী হয়েছে। এখানে আমার আধিপত্য কোনো বিষয় নয়। জনগণ চাইলে সে নির্বাচিত হবে, জনপ্রতিনিধিও হবে।’

এদিকে নাবিলের মোবাইল ফোনে কয়েক দফা কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে তাঁর অনুসারী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টু বলেন, ‘এমপি তৃণমূলের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে প্যানেল ঘোষণা করেছেন। এর বাইরে গিয়ে নাবিল ভাইয়ের সঙ্গে রাজনীতি করেন এমন আরও দুজন প্রার্থী হয়েছেন। এতে দলে কোন্দল সৃষ্টি হলো।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত