Ajker Patrika

ধানকাটা শ্রমিকের কাছে জিম্মি কৃষক

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ মে ২০২২, ১৭: ১২
Thumbnail image

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার অধিকাংশ পাকা ধানের জমিতে পানি জমেছে। কৃষকেরা বলছেন, এসব ধান কাটতে শ্রমিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন তাঁরা। শ্রমিকদের বর্তমানে যে পারিশ্রমিক দিতে হচ্ছে, তাতে কৃষকদের বোরো আবাদে উৎপাদন ব্যয় না ওঠার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শ্রমিকেরা বলছেন, ভেজা ধানের বোঝা মাথায় নিয়ে কৃষকের বাড়ি পৌঁছাতে তাঁদের পরিশ্রমও করতে হচ্ছে অনেক। সে জন্য তাঁরা পারিশ্রমিক বেশি নিচ্ছেন।

স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি বছর ২৪ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই সব জমিতে চলছে ধান কাটার ভরা মৌসুম।

তাড়াশ উপজেলার তালম, সগুনা, মাগুড়া বিনোদ, তাড়াশ সদর, নওগাঁ, বারুহাস ইউনিয়নের ফসলি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ পাকা বোরো ধানের জমিতে পানি জমে ধান নুয়ে পড়েছে। এতে করে কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটা যাচ্ছে না।

কথা হয় কুসুম্বী গ্রামের কৃষক আলহাজ আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, তাঁর এলাকায় শত শত বিঘা জমির পাকা বোরো ধান নুয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ওই সব জমিতে পানি জমে ধানগুলো ডুবে যাচ্ছে। কিন্তু মিলছে না কৃষিশ্রমিক। এ ছাড়া তাঁর বাবার আরও ৭ বিঘা জমিতে বেশি পানি জমে যাওয়ায় শ্রমিক না পেয়ে তা না কেটেই ফেলে রেখেছেন।

লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান জানান, বর্তমানে উপজেলার কৃষকেরা কৃষিশ্রমিকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।

দোবিলা গ্রামের কৃষক লুৎফর রহমান জানান, প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে কৃষিশ্রমিকদের ৮ হাজার টাকা এবং ওই কাটা ধান ঘোড়ার গাড়িতে বাড়ি আনতে আরও ২ হাজার ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছে ধানমাড়াই খরচ। এতে কোনোভাবেই তাঁর বোরো ধানের আবাদে এ বছর উৎপাদন ব্যয় উঠবে না। আর এটি পুরো উপজেলার চিত্র।

লুৎফর রহমান আরও বলেন, কয়েক দিন যদি বৃষ্টি থাকে, তাহলে অনেক কৃষক জমির এক মুঠো পাকা ধানও ঘরে তুলতে পারবেন না।

এদিকে পাবনা জেলার সাঁথিয়া, সুজানগর উপজেলা থেকে তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ধান কাটতে আসা শ্রমিক আজগর আলী, জামাল মণ্ডল, আব্দুর রহিমসহ একাধিক শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার বেশির ভাগ জমিতেই বৃষ্টির পানি জমে পাকা ধান নুয়ে পড়ে পানিতে ভাসছে। আর এ ধরনের জমিতে ধান কাটতে এবং ভেজা ধানের বোঝা মাথায় নিয়ে কৃষকের বাড়ি পৌঁছাতে তাঁদের পরিশ্রমও হচ্ছে অনেক বেশি। এ জন্যই তাঁরা পারিশ্রমিক বেশি নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জমিতে পানি জমে যাওয়ায় কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। তবে বৃষ্টি কমে গেলে শ্রমিক-সংকট অনেকটাই কেটে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত