Ajker Patrika

সমস্যা তো গোড়াতেই

মারুফুল হক
আপডেট : ০২ জুন ২০২৩, ১২: ৩৭
সমস্যা তো গোড়াতেই

সংকট শুধু স্ট্রাইকারদের নিয়ে না; সব জায়গায় একই অবস্থা। স্ট্রাইকারদের বেশি চোখে পড়ে এই জন্য যে ওরা ফিনিশিং জোনে থাকে। পুরো দেশের ফুটবলের চিত্রই এটা।

আবাহনী-মোহামেডান ফাইনালে সুলেমান দিয়েবাতের গোলের উৎসগুলো যদি দেখেন, ওখানে চার গোলের দুটির উৎস বিদেশি ফুটবলার। চারটির উৎসই কেন স্থানীয়রা হলো না? দিয়েবাতের প্রথম গোলটা দেখুন। দুজন ডিফেন্ডার তার মার্কিংয়ে ছিল। একজনের মার্কিং ছেড়ে দিয়াবাতে বেরিয়ে গেল। এখানে একজন স্থানীয় ডিফেন্ডার। দেশের পুরো ফুটবলের মানই পড়ে গেছে। স্ট্রাইকারদের মান আরও পড়ে গেছে। বেশির ভাগ ক্লাব বিদেশি ফরোয়ার্ডদের ওপর বেশি আস্থা রাখে। স্থানীয়দের অতটা প্রাধান্য দেওয়া হয় না। সে মানের স্থানীয় স্ট্রাইকারও নেই।

আমাদের ইয়ুথ লেভেল, যেখান থেকে গ্রুমিং হয়, ওখানেই গলদ আছে। খেলোয়াড়দের টেকনিক্যাল-ট্যাকটিক্যালি শক্ত বানাতে পারছি না। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের যে দুই-তিনজন স্ট্রাইকার আছে, শারীরিক গঠন ঠিক আছে। কিন্তু টেকনিকে অনেক সমস্যা। তাদের ধরা হচ্ছে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের স্ট্রাইকার। খুব কাছ থেকে তাদের দেখেছি, কৌশল ও দক্ষতায় তাদের সেই সামর্থ্য নেই।

একজন স্ট্রাইকার যখন এ সমস্যা নিয়ে আরও সামনে যাবে, তত দিনে তাকে আর বহন করা সম্ভব হবে না। কারণ, শেখার বয়স সে পার করে ফেলবে। গোড়ায় গলদ, আর কিছু না। সর্বশেষ জাতীয় দলের ভালো স্ট্রাইকার ছিল জাহিদ হাসান এমিলি আর এনামুল। তারা দক্ষতা আর কৌশলে যথেষ্ট ভালো ছিল। এমিলি গড়পড়তা উচ্চতা নিয়েও আন্তর্জাতিক ফুটবলে অনেক গোল করেছে। সে ঘরোয়া ফুটবলে যে দলে খেলেছে, সেখানে বিদেশি স্ট্রাইকারও ছিল। তবু এমিলিকে মাঠে সুযোগ দিতে হয়েছে। এনামুলকে একইভাবে সুযোগ দিতে হয়েছে। আলফাজ আহমেদও বিদেশি স্ট্রাইকারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গোল করেছে।

আমাদের আসলে ভালো মানের ফুটবলার আসছে না। ক্লাব ফুটবলের কোচরা যে পর্যাপ্ত সুযোগ দিচ্ছে না বা তাদের ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছে, এমন কিছু না। আমাদের ভালো মানের স্ট্রাইকার আসছে না। টেকনিক্যালি-ট্যাকটিক্যালি অনেক ঘাটতি আছে তাদের। শারীরিক বিষয় যদি বাদ দেন, উঠতি স্ট্রাইকাররা টার্নিংয়ের সঙ্গে পরিচিত নয়। স্ট্রাইকাররা যখন বল পায় তখন তাদের ফেস থাকে নিজেদের রক্ষণভাগের দিকে। কিন্তু তাকে ফিনিশিং দিতে হয় ঠিক উল্টো দিকে। এখানে টার্নিংয়ে দক্ষ হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফার্স্ট টাচে খুব দুর্বল। একজন স্ট্রাইকারকে দুই-তিনজন ডিফেন্ডারের মাঝে বলটা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সেখানেও তারা দুর্বল। ১০টার মধ্যে ১টা ফার্স্ট টাচে যদি ভালো হয়, সেটা যখন শুট করে অন টার্গেটে থাকে না। দক্ষতা-কৌশলে কতটা পিছিয়ে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন।

স্ট্রাইকার সংকট কাটিয়ে উঠতে আমি একবার ‘১৯ এইচপি (হাইপারফরম্যান্স)’ নামের একটা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ‘১’ মানে গোলরক্ষক আর ‘৯’ মানে স্ট্রাইকার। দুঃখের বিষয়, মাত্র একজন নিবন্ধন করেছিল এটির জন্য। কেন তারা আগ্রহী হবে? ক্লাবে বসে থেকেই ৪০-৫০ লাখ টাকা পাচ্ছে। তার আর শেখার কী আছে! আসলে দেশের ফুটবলে সামনে আরও দুর্দিন অপেক্ষা করছে।

লেখক: সাবেক কোচ, বাংলাদেশ জাতীয় দল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে এনসিপির শীর্ষ ৫ নেতা হঠাৎ কক্সবাজারে কেন

রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন চাননি সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে চূড়ান্ত বৈঠক করল শশী থারুরের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি

ছাত্র-জনতার মিছিলের মুখে পড়েন এক মন্ত্রী

কক্সবাজারে পিটার হাসের সঙ্গে এনসিপি নেতাদের বৈঠকের খবর, ‘গুজব’ বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত