Ajker Patrika

বিআরটিসি বাস, রেল রিকশাতেও ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২১, ১৬: ১১
বিআরটিসি বাস, রেল রিকশাতেও ভোগান্তি

রেলস্টেশনে বিষণ্ন মনে বসে আছেন মিলন মিয়া (২৭)। সঙ্গে হার্টের রোগী মা, ছোট বোন আর ছোট ভাই। এর মধ্যেই মূল প্ল্যাটফর্মে ট্রেন এসে থামল। চারপাশ থেকে যে যার মতো হুড়োহুড়ি করে ট্রেনে উঠছেন। এদিকে, টিকিট কেটেও নিরুপায় হয়ে বসে আছেন মিলন। অসুস্থ মাকে নিয়ে কীভাবে ট্রেনে চড়বেন সেই আক্ষেপ জানালেন।

মিলন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটু আগেই আমার মা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আমি এখন কীভাবে ট্রেনে উঠব। এত ভিড়ে আমার মা আবার অসুস্থ হয়ে যাবেন।’ কিছুক্ষণ পর এক কর্মকর্তার সাহায্যে পরিবার নিয়ে নিজের সিটে গিয়ে বসেন মিলন।

পরিবহন ধর্মঘটের তৃতীয় দিন গতকাল রোববার সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে এমন চিত্র দেখা যায়। বাসসহ দূরপাল্লার প্রায় সব গাড়ি বন্ধ থাকায় বেশির ভাগ মানুষই রেলস্টেশনে ছুটে আসে দূরের গন্তব্যে যেতে। এত বেশি পরিমাণ মানুষের চাপ সামলাতে হিমশিম খায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরাও।

কমলাপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সাধারণ যাত্রীদের যাতায়াতের কথা বিবেচনা করে গত ৫ নভেম্বর থেকে অতিরিক্ত ২৬টি বগি সংযোজন করা হয়েছে। ওই দিন থেকে রেলে ৪০ শতাংশ যাত্রী বেড়ে গিয়েছিল। হঠাৎ করে মানুষের এত চাপ আমরা সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।’

এদিকে, বেসরকারি পরিবহনসেবা বন্ধ করলেও সড়কে চলেছে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন সংস্থার (বিআরটিসি) কিছু বাস। যেগুলো সাধারণ যাত্রীদের ভরসা হয়ে দেখা দেয় দুর্দিনে।

অসুস্থ মামাকে নিয়ে আসাদগেট থেকে কুড়িল বিশ্বরোড যাচ্ছিলেন খায়রুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আসাদগেটে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। সিএনজিতে ৪৫০-৫০০ টাকা ভাড়া চাচ্ছে। তাই ভাবছি বিআরটিসিতে করে কুড়িল গিয়ে পরে রিকশায় করে বাড্ডা যাব।’

বিআরটিসির মোহাম্মদপুর বাস ডিপোর ম্যানেজার প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, ‘আমাদের মোহাম্মদপুর ডিপো থেকে বিভিন্ন রুটে বেসরকারি বিভিন্ন পরিবহনের ব্যানারে পাঁচ শতাধিক বাস চলে। যেখানে বিআরটিসির বাস মাত্র ৩৭টি। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি যাত্রীদের সেবা দিতে।’

মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষমাণ যাত্রী শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘বিআরটিসির বাসে অনেক চাপ। এদিকে সিএনজি, রিকশা কিংবা বাইকওয়ালারা ভাড়া কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের তো কোনো উপায় নেই অফিসে তো যেতেই হবে।’

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম ঊর্ধ্বগতির কারণে ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ডিজেল-কেরোসিনের দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে সরকার। এতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বেড়ে যায়। এর প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেন বিভিন্ন পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত