Ajker Patrika

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারে

মোহাম্মদ খলিলুর রহমান, বাজিতপুর
আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২২, ১৬: ৩৮
Thumbnail image

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অতিরিক্ত টাকায় ট্রেনের টিকিট বিক্রি করছে একটি অসাধু চক্র। সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ বহু দিন ধরে উপজেলার তিনটি স্টেশনে সরকারি কর্মকর্তা, প্রভাবশালী রাজনীতিক ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া সাধারণ যাত্রীরা নির্ধারিত মূলে টিকিট পান না। তবে কাউন্টারে গিয়ে টিকিট না পাওয়া গেলেও কালোবাজারে টিকিটের ছড়াছড়ি। স্টেশন মাস্টাররা বলছেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এ কাজগুলো করছে। পুলিশ বলছে, ফেসবুকে ট্রেনের টিকিট বিক্রয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলায় তিনটি রেলস্টেশন রয়েছে। ভাগলপুর, সরারচর ও হালিমপুরের মকসুদ রেলস্টেশন। এসব স্টেশন থেকে কিশোরগঞ্জ টু ঢাকা, কিশোরগঞ্জ টু চট্টগ্রাম রুটে চারটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। ট্রেনগুলো হলো এগারো সিন্ধুর প্রভাতী, এগারো সিন্ধুর গোধূলি, কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ও বিজয় এক্সপ্রেস। এসব স্টেশনে গেলে অধিকাংশ সময়ই টিকিট পাওয়া যায় না। স্টেশনের ভেতর থেকে কিছু কর্মচারী পরিচিত লোকজনের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে টিকিট বিক্রি করেন। সেই টিকিট ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হয়। অথচ কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যায় না। স্টেশনের কিছু কর্মচারীর যোগসাজশে টিকিট কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

কথা হয় আবিরাজ মিয়া নামে এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘অগ্রিম টিকিটের জন্য তিন দিন আগে কাউন্টারে যোগাযোগ করি। তারা টিকিট নেই বলে দেন। পরে বাধ্য হয়ে ১০৫ টাকার টিকিট ৩০০ টাকা দিয়ে কালোবাজারির কাছ থেকে কিনেছি।’

শহিদুল ইসলাম বাজিতপুর থেকে ঢাকা যাবেন। তিনি বলেন, ‘সার্ভার ডাউন থাকায় অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটাতে ব্যর্থ হই। সার্ভার স্বাভাবিক হওয়ার দেখি টিকিট নেই। এরপর ফোন করি মধু মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে। তাঁর কাছ থেকে বাধ্য হয়ে ১০৫ টাকার টিকিট ৩০০ টাকা দিয়ে কিনি। তিনি আমার ইমুতে মেসেজ পাঠান। আমি কাউন্টার থেকে টিকিট তুলে বিকাশে তাঁকে টাকা পাঠিয়ে দিই।’

কথা হয় ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে টিকিট বিক্রি করে এমন একজনের সঙ্গে। তাঁর ফেসবুক আইডির নাম নাহিদুল ইসলাম রিফাত। তিনি বলেন, তাঁরা চার-পাঁচজন মিলে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটেন। অনেক সময় ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দিয়ে কাউন্টার থেকে টিকিট আনেন। সেই টিকিটগুলো ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা মূল্যে বিক্রি করেন।

সরারচর রেলস্টেশন মাস্টার মো. সেলিম হোসেন বলেন, ‘ট্রেনের টিকিট অর্ধেক অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি হয়। কালোবাজারিরা সেখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করে এবং ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে সেই টিকিট বেশি দামে বিক্রি করে। অনেকে আবার ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে বেশি দামে টিকিট বিক্রি করে। তারা একটি সংঘবদ্ধ চক্র। রাজনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে তারা এ কাজগুলো করছে।’

টিকিট কালোবাজারির ব্যাপারে জানতে চাইলে বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রেলস্টেশন জিআরপি পুলিশের অধীন। তারা চাইলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব। ফেসবুকে ট্রেনের টিকিট বিক্রয় নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে, এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত