Ajker Patrika

ধলেশ্বরীর ভাঙনে সেতুতে ধস, চলাচলে ভোগান্তি

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
ধলেশ্বরীর ভাঙনে সেতুতে ধস, চলাচলে ভোগান্তি

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর অব্যাহত ভাঙনে একটি সেতুতে ধস দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া বিলীন হয়ে গেছে সেতুসংলগ্ন প্রায় ৫০০ মিটার পাকা রাস্তা। উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বৈলট-জাবরা সড়কের কোশুন্ডা এলাকায় নির্মিত সেতুটি ধসে পড়ায় যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। গতকাল রোববার বিকেলে সেতুটি ধসে যায়।

এলাকাবাসী জানায়, অব্যাহত নদীভাঙনে গত শুক্রবার থেকে সেতুটির দেবে যাওয়া শুরু হয়। দেবে যাওয়া সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করছিল সেতুর ওপর দিয়ে। গতকাল বিকেলে সেতুটি ধসে পড়েছে। এতে সব ধরনের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ওই সেতুর দুপাশের কমপক্ষে ৫০০ মিটার পাকা রাস্তা, পাঁচ একর ফসলি জমি ও ১৫টি বসতবাড়ি। ভাঙনের কবলে রয়েছে আরও অর্ধশত বসতবাড়ি। এদিকে, ভাঙনকবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। কয়েকটি পরিবারের ঠাঁই হয়েছে খোলা আকাশের নিচে।

জানা গেছে, ১৯৮৯ সালে এলজিইডির অর্থায়নে উপজেলার কোশুন্ডা এলাকায় সেতুটি নির্মিত হয়। সেতুর দুপাশে বৈলট এলাকা থেকে জাবরা পর্যন্ত পাকা রাস্তাটি হয় ২০১০ সালে। ধলেশ্বরী নদীর ওই সেতু ও রাস্তা দিয়ে চলাচল করতেন উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কোশুন্ডা, চড় কোশুন্ডা, প্যাঁচার কান্দা, শিমুলিয়া, সাইংজুরী, গোবর চাকা, বেনুরা, চড় বেনুরা, সিংজুরী ইউনিয়নের আশাপুর, শিমুলিয়া, ঘিওর ইউনিয়নের ঘিওর পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দারা। সেতুতে ধস ও পাকা সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার মানুষ বিকল্প রাস্তা দিয়ে কমপক্ষে চার-পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধলেশ্বরী নদীর বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও ফসলি জমি ভেঙে যাচ্ছে। কিন্তু ভাঙনরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ভাঙনে ফসলি জমি ও ভিটে হারানো আনোয়ারুল হক বলেন, ‘চলতি মাসের ভাঙনে আমার ফসলি জমি ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনরোধে দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে আরও অনেকেরই ভিটা হারা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’

সাদেক মোল্লা নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘প্রতিবছরই নদী ভাঙে। ভিটামাটি হারা হয় মানুষ। সংশ্লিষ্ট কেউ এগিয়ে আসেননি।’ স্থানীয় বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রতন মিয়া বলেন, ‘অব্যাহত নদীভাঙনে গত তিন বছরে ইউনিয়নের ৭০-৮০টি বসতবাড়ি ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ (পাউবো) সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার অবহিত করলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’

ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান বলেন, ‘ভাঙনকবলিত এলাকার বিষয়ে বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসন, পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত ও মৌখিকভাবে অবহিত করেছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত