সাইয়েদুল মোস্তায়িন তরঙ্গ
ট্যুরিজম, মেডিকেল ট্যুরিজমের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্য তুরস্কের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপের জন্য প্রতিবছর প্রায় ১৭৮টি দেশ থেকে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য আবেদন জমা হয়ে থাকে। আর বাংলাদেশ এর মধ্যে একটি। এই স্কলারশিপের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক সরকার।
আবেদনের সময় ও পদ্ধতি
এই বৃত্তির আবেদনের জন্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট অথবা পাসপোর্ট যেকোনো একটি দিয়ে করা যাবে, তবে পাসপোর্ট দিয়ে আবেদন করাই বাঞ্ছনীয়। বৃত্তির আবেদন প্রতিবছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে হয়ে থাকে। পর্যায়ক্রমে মূল্যায়নের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থিত তুরস্ক দূতাবাসে ইন্টারভিউ ও কোয়ান্টিটেটিভ এক্সামের জন্য জানিয়ে থাকে। পরবর্তী ধাপে কোয়ান্টিটেটিভ এক্সাম, ইন্টারভিউ এবং আবেদনের সময় তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে যে পেপারস সার্টিফিকেটগুলো আপলোড করা হয়েছে, সেগুলোর সমন্বয়ে আগস্ট মাসের প্রথম দিকে ফাইনাল রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়। বৃত্তির আবেদনের সময় ইউনিভার্সিটি, সাবজেক্ট ও কোন ল্যাঙ্গুয়েজে (টার্কিশ অথবা ইংলিশ) পড়তে চান, সেসব সিলেক্ট করার সুযোগ থাকে। একজন আবেদনকারী সর্বোচ্চ ১২টি ইউনিভার্সিটি তাঁর চয়েজ লিস্টে যুক্ত করতে পারেন। যাঁরা টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজে পড়ার সুযোগ পান, তাঁদের এক বছর টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজ (TÖMER) শেখানো হয় এবং এর খরচ তুরস্ক সরকার বহন করে থাকে। এই বৃত্তির জন্য স্যাট অথবা টোফেল দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, তবে যদি আপনার লক্ষ্য থাকে তুরস্কের টপ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার এবং ইংরেজিতে পড়াশোনা করার, তাহলে এই টেস্টগুলো যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।
সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থাকুন
বৃত্তির ক্ষেত্রে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজ যথেষ্ট ভূমিকা রাখে, যেমনটা রেখেছে আমার ক্ষেত্রে। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়ার থেকে এটা-ওটা বানানোতে আগ্রহ ছিল প্রচণ্ড। ধীরে ধীরে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে রোবটিকসে আসা এবং টানা তিন বছর জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর কর্তৃক আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় দেশসেরা হওয়া, রোবট অলিম্পিয়াডে গোল্ড মেডেল জেতা, টানা তিন বছর নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে গ্লোবাল নমিনেশন পাওয়া এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে তুরস্ক সরকার কর্তৃক আয়োজিত টেকনোফেস্টে গ্লোবালি পঞ্চম হওয়া আমার আবেদনে যথেষ্ট বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এ জন্য বলব, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের অবশ্যই প্রয়োজন আছে, কারণ স্কলারশিপের জন্য যাঁরা আবেদন করে থাকেন, তাঁদের অধিকাংশের রেজাল্ট ভালো হয়ে থাকে কিন্তু এই যুদ্ধে নিজেকে সেরা প্রমাণ করার জন্য এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের বিকল্প নেই।
সুযোগ-সুবিধা
তুরস্ক সরকারের এই বৃত্তিতে একজন শিক্ষার্থীকে অন্যান্য দেশের বৃত্তির থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়; বিশেষ করে তুরস্কে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে তুরস্কে যাওয়ার এয়ার টিকিট পর্যন্ত দেওয়া হয়। প্রতি মাসে ১ হাজার টার্কিশ লিরা স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য ডরমিটরিরও ব্যবস্থা রয়েছে, ফলে শিক্ষার্থীকে থাকা এবং খাওয়ার জন্য আলাদাভাবে কোনো চিন্তা করতে হয় না। এর বাইরেও যদি শিক্ষার্থীর টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজে পড়াশোনা করতে হয়, সে ক্ষেত্রে ১ বছর তুরস্ক সরকারের খরচে ভাষা শেখানো হয় এবং ভাষা শেখার পরপরই সেই শিক্ষার্থী তাঁর একাডেমিক পড়াশোনা শুরু করতে পারে।
পরীক্ষার ধরন
কোয়ান্টিটেটিভ এক্সাম যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে। আর এই এক্সামে সাধারণত ম্যাথ ও আইকিউ-সম্পর্কিত সমস্যা দেওয়া হয়ে থাকে। ৩০টি মাল্টিপল চয়েজ কোশ্চেন, যা ১ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান বের করার জন্য প্রতিটি প্রশ্নের নিচে কিছুটা জায়গা পাওয়া যায়। ডিটেইলসে ম্যাথ করার কোনো প্রয়োজন নেই। সংক্ষেপে উত্তর বের করতে পারলেই যথেষ্ট। আর এক্সামের সিলেবাসের কথা বলতে গেলে এইচএসসি লেভেলের ম্যাথ (Real Numbers and Inequalities, Complex numbers, Polynomials and polynomial equations, Matrices, Conics, Circle, Straight lines, Differentiation and Integration) এবং আইকিউ সলভিং করতে হবে প্রচুর পরিমাণে। আর ইন্টারভিউর জন্য আপনি যে ইউনিভার্সিটিগুলো আবেদনের সময় নির্বাচন করেছিলেন, সেগুলো সম্পর্কে এবং সেই সব ইউনিভার্সিটি যে শহরে অবস্থিত এবং শহরটি কিসের জন্য বিখ্যাত, এর ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিয়ে যেতে হবে।
লেটার অব ইনটেন্ট
তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ বড় ভূমিকা পালন করবে। এখানে শালীন ভাষায় ফুটিয়ে তুলতে হবে যে পৃথিবীতে আরও দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন আপনি তুরস্কে পড়াশোনা করতে চান।
অনেকেই এই অংশতে ভুল করেন এবং এটাকে ততটা গুরুত্ব না দেয়ার ফলে দেখা যায় ইন্টারভিউ এর আগেই রিজেক্টেড হয়ে যায়। অনেকেই লিখে থাকেন “তুরস্ক একটা শান্তিপূর্ণ দেশ, এই দেশের জীবনধারা এবং সংস্কৃতি আমাকে অনেক আকৃষ্ট করে এজন্য দেশ হিসেবে আমার তুরস্ক পছন্দ। ” উপরিউক্ত লেখার পুরোটিই সত্য কিন্তু তা দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। উদাহরণ হিসেবে আমি আমার আবেদনে যে বিষয়টি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলাম তার সম্পর্কে বললে বুঝতে পারবেন। আমার যেহেতু রোবোটিকস নিয়ে পড়ার ইচ্ছে তাই আমি একটু ঘাঁটাঘাঁটি করেছিলাম যে তুরস্কে এই দিক দিয়ে কী কী সুবিধা রয়েছে এবং এই সুবিধার জন্য তুরস্ক আমাকে এতটা আকৃষ্ট করে। আমার লেটারে উল্লেখ করেছিলাম যে “বর্তমানে তুরস্কে পৃথিবীর শক্তিশালী ড্রোন ম্যানুফ্যাকচার করে BAYKAR Technologies এবং দেশটিতে ড্রোন নিয়ে রিসার্চের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যেহেতু আমি ড্রোন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করেছি প্রায় ৫ বছর সেহেতু পড়াশোনার পাশাপাশি এ রকম রিসার্চ করতে পারা আমার জন্য একটি বড় সুযোগ। এর বাইরেও TÜBİTAK (The Scientific & Technological Research Institution of Turkey) তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প এবং দেশের তথা দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আর্থিক সহযোগিতা সেই সাথে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকে। ” এভাবে পয়েন্ট গুলো যতটা স্পেসিফিক করতে পারবেন আপনি এই যুদ্ধে ততটা এগিয়ে থাকবেন।
কীভাবে সিভি তৈরি করবেন?
আবেদনের সময় সিভি (কারিকুলাম ভিটা) আপলোড করতে বলা হয়। অনেকেই আবেদনের সময় ১ ঘণ্টার মধ্যে কোনোরকম একটা সিভি বানিয়ে আপলোড দিয়ে দেয়। এ রকম প্রশ্ন পেয়েছিলাম যে “আমি তোহ এসব কাজ ভালো জানি না সিভি বানানোর কোন সহজ উপায় আছে কি? ” উত্তর হলো হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। ক্যানভা’র (www. canva. com) ওয়েবসাইটে যেয়ে অনেক গুলো ফ্রি লে–আউট পাবেন যেগুলো এডিট করে নিজের সকল তথ্য দিতে পারবেন। সিভিতে এপর্যন্ত যত অর্জন রয়েছে আপনার, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন সেগুলো উল্লেখ করবেন, যেসব ভাষা আপনার জানা আছে সেগুলোও উল্লেখ করবেন। এর বাইরেও আপনার যে সকল বিষয়ে দক্ষতা, কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কোন প্রকার রিসার্চ করে থাকলে সেগুলো সময় নিয়ে সুন্দরভাবে সাজিয়ে ২ পেজের মধ্যে একটি সিভি তৈরি করে আপলোড করতে হবে।
ইন্টারভিউ নিয়ে ভয় নয়
ইন্টারভিউ নিয়ে সবার একটি ভীতি কাজ করে, হাত পা ঘামতে শুরু করে। আসলে এটি কোন চাকরির ইন্টারভিউ না যে আপনার যত স্কিল রয়েছে তা যাচাই করবে বা একটি বড় প্রবলেম সামনে এনে সেটি সমাধান করতে বলবে। স্বাভাবিক থাকবেন, আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হবে এবং ওপরে যে পয়েন্ট গুলো আলোচনা করা হলো সে সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করতে পারে। হাসি মুখে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসবেন, না পারলেও বিভ্রান্ত হবেন না। আপনার সবকিছু জানতে হবে এ রকম কোন কথা নেই।
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ
সাইয়েদুল মোস্তায়িন তরঙ্গ, শিক্ষার্থী, সাকারিয়া ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স, তুরস্ক
ট্যুরিজম, মেডিকেল ট্যুরিজমের পাশাপাশি উচ্চশিক্ষার জন্য তুরস্কের কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে। তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপের জন্য প্রতিবছর প্রায় ১৭৮টি দেশ থেকে ব্যাচেলর, মাস্টার্স ও পিএইচডির জন্য আবেদন জমা হয়ে থাকে। আর বাংলাদেশ এর মধ্যে একটি। এই স্কলারশিপের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক তুরস্ক সরকার।
আবেদনের সময় ও পদ্ধতি
এই বৃত্তির আবেদনের জন্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট অথবা পাসপোর্ট যেকোনো একটি দিয়ে করা যাবে, তবে পাসপোর্ট দিয়ে আবেদন করাই বাঞ্ছনীয়। বৃত্তির আবেদন প্রতিবছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে হয়ে থাকে। পর্যায়ক্রমে মূল্যায়নের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ই-মেইলের মাধ্যমে বাংলাদেশে অবস্থিত তুরস্ক দূতাবাসে ইন্টারভিউ ও কোয়ান্টিটেটিভ এক্সামের জন্য জানিয়ে থাকে। পরবর্তী ধাপে কোয়ান্টিটেটিভ এক্সাম, ইন্টারভিউ এবং আবেদনের সময় তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপের ওয়েবসাইটে যে পেপারস সার্টিফিকেটগুলো আপলোড করা হয়েছে, সেগুলোর সমন্বয়ে আগস্ট মাসের প্রথম দিকে ফাইনাল রেজাল্ট প্রকাশ করা হয়। বৃত্তির আবেদনের সময় ইউনিভার্সিটি, সাবজেক্ট ও কোন ল্যাঙ্গুয়েজে (টার্কিশ অথবা ইংলিশ) পড়তে চান, সেসব সিলেক্ট করার সুযোগ থাকে। একজন আবেদনকারী সর্বোচ্চ ১২টি ইউনিভার্সিটি তাঁর চয়েজ লিস্টে যুক্ত করতে পারেন। যাঁরা টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজে পড়ার সুযোগ পান, তাঁদের এক বছর টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজ (TÖMER) শেখানো হয় এবং এর খরচ তুরস্ক সরকার বহন করে থাকে। এই বৃত্তির জন্য স্যাট অথবা টোফেল দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়, তবে যদি আপনার লক্ষ্য থাকে তুরস্কের টপ ইউনিভার্সিটিতে পড়ার এবং ইংরেজিতে পড়াশোনা করার, তাহলে এই টেস্টগুলো যথেষ্ট ভূমিকা পালন করবে।
সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থাকুন
বৃত্তির ক্ষেত্রে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজ যথেষ্ট ভূমিকা রাখে, যেমনটা রেখেছে আমার ক্ষেত্রে। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়ার থেকে এটা-ওটা বানানোতে আগ্রহ ছিল প্রচণ্ড। ধীরে ধীরে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে রোবটিকসে আসা এবং টানা তিন বছর জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর কর্তৃক আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় দেশসেরা হওয়া, রোবট অলিম্পিয়াডে গোল্ড মেডেল জেতা, টানা তিন বছর নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে গ্লোবাল নমিনেশন পাওয়া এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে তুরস্ক সরকার কর্তৃক আয়োজিত টেকনোফেস্টে গ্লোবালি পঞ্চম হওয়া আমার আবেদনে যথেষ্ট বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এ জন্য বলব, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের অবশ্যই প্রয়োজন আছে, কারণ স্কলারশিপের জন্য যাঁরা আবেদন করে থাকেন, তাঁদের অধিকাংশের রেজাল্ট ভালো হয়ে থাকে কিন্তু এই যুদ্ধে নিজেকে সেরা প্রমাণ করার জন্য এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিজের বিকল্প নেই।
সুযোগ-সুবিধা
তুরস্ক সরকারের এই বৃত্তিতে একজন শিক্ষার্থীকে অন্যান্য দেশের বৃত্তির থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়; বিশেষ করে তুরস্কে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীকে তুরস্কে যাওয়ার এয়ার টিকিট পর্যন্ত দেওয়া হয়। প্রতি মাসে ১ হাজার টার্কিশ লিরা স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের থাকার জন্য ডরমিটরিরও ব্যবস্থা রয়েছে, ফলে শিক্ষার্থীকে থাকা এবং খাওয়ার জন্য আলাদাভাবে কোনো চিন্তা করতে হয় না। এর বাইরেও যদি শিক্ষার্থীর টার্কিশ ল্যাঙ্গুয়েজে পড়াশোনা করতে হয়, সে ক্ষেত্রে ১ বছর তুরস্ক সরকারের খরচে ভাষা শেখানো হয় এবং ভাষা শেখার পরপরই সেই শিক্ষার্থী তাঁর একাডেমিক পড়াশোনা শুরু করতে পারে।
পরীক্ষার ধরন
কোয়ান্টিটেটিভ এক্সাম যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে। আর এই এক্সামে সাধারণত ম্যাথ ও আইকিউ-সম্পর্কিত সমস্যা দেওয়া হয়ে থাকে। ৩০টি মাল্টিপল চয়েজ কোশ্চেন, যা ১ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে সমাধান করতে হবে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান বের করার জন্য প্রতিটি প্রশ্নের নিচে কিছুটা জায়গা পাওয়া যায়। ডিটেইলসে ম্যাথ করার কোনো প্রয়োজন নেই। সংক্ষেপে উত্তর বের করতে পারলেই যথেষ্ট। আর এক্সামের সিলেবাসের কথা বলতে গেলে এইচএসসি লেভেলের ম্যাথ (Real Numbers and Inequalities, Complex numbers, Polynomials and polynomial equations, Matrices, Conics, Circle, Straight lines, Differentiation and Integration) এবং আইকিউ সলভিং করতে হবে প্রচুর পরিমাণে। আর ইন্টারভিউর জন্য আপনি যে ইউনিভার্সিটিগুলো আবেদনের সময় নির্বাচন করেছিলেন, সেগুলো সম্পর্কে এবং সেই সব ইউনিভার্সিটি যে শহরে অবস্থিত এবং শহরটি কিসের জন্য বিখ্যাত, এর ভৌগোলিক অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা নিয়ে যেতে হবে।
লেটার অব ইনটেন্ট
তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ বড় ভূমিকা পালন করবে। এখানে শালীন ভাষায় ফুটিয়ে তুলতে হবে যে পৃথিবীতে আরও দেশ থাকা সত্ত্বেও কেন আপনি তুরস্কে পড়াশোনা করতে চান।
অনেকেই এই অংশতে ভুল করেন এবং এটাকে ততটা গুরুত্ব না দেয়ার ফলে দেখা যায় ইন্টারভিউ এর আগেই রিজেক্টেড হয়ে যায়। অনেকেই লিখে থাকেন “তুরস্ক একটা শান্তিপূর্ণ দেশ, এই দেশের জীবনধারা এবং সংস্কৃতি আমাকে অনেক আকৃষ্ট করে এজন্য দেশ হিসেবে আমার তুরস্ক পছন্দ। ” উপরিউক্ত লেখার পুরোটিই সত্য কিন্তু তা দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য যথেষ্ট নয়। উদাহরণ হিসেবে আমি আমার আবেদনে যে বিষয়টি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছিলাম তার সম্পর্কে বললে বুঝতে পারবেন। আমার যেহেতু রোবোটিকস নিয়ে পড়ার ইচ্ছে তাই আমি একটু ঘাঁটাঘাঁটি করেছিলাম যে তুরস্কে এই দিক দিয়ে কী কী সুবিধা রয়েছে এবং এই সুবিধার জন্য তুরস্ক আমাকে এতটা আকৃষ্ট করে। আমার লেটারে উল্লেখ করেছিলাম যে “বর্তমানে তুরস্কে পৃথিবীর শক্তিশালী ড্রোন ম্যানুফ্যাকচার করে BAYKAR Technologies এবং দেশটিতে ড্রোন নিয়ে রিসার্চের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যেহেতু আমি ড্রোন টেকনোলজি নিয়ে কাজ করেছি প্রায় ৫ বছর সেহেতু পড়াশোনার পাশাপাশি এ রকম রিসার্চ করতে পারা আমার জন্য একটি বড় সুযোগ। এর বাইরেও TÜBİTAK (The Scientific & Technological Research Institution of Turkey) তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রকল্প এবং দেশের তথা দেশের বাইরের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আর্থিক সহযোগিতা সেই সাথে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিয়ে থাকে। ” এভাবে পয়েন্ট গুলো যতটা স্পেসিফিক করতে পারবেন আপনি এই যুদ্ধে ততটা এগিয়ে থাকবেন।
কীভাবে সিভি তৈরি করবেন?
আবেদনের সময় সিভি (কারিকুলাম ভিটা) আপলোড করতে বলা হয়। অনেকেই আবেদনের সময় ১ ঘণ্টার মধ্যে কোনোরকম একটা সিভি বানিয়ে আপলোড দিয়ে দেয়। এ রকম প্রশ্ন পেয়েছিলাম যে “আমি তোহ এসব কাজ ভালো জানি না সিভি বানানোর কোন সহজ উপায় আছে কি? ” উত্তর হলো হ্যাঁ, অবশ্যই আছে। ক্যানভা’র (www. canva. com) ওয়েবসাইটে যেয়ে অনেক গুলো ফ্রি লে–আউট পাবেন যেগুলো এডিট করে নিজের সকল তথ্য দিতে পারবেন। সিভিতে এপর্যন্ত যত অর্জন রয়েছে আপনার, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করেছেন সেগুলো উল্লেখ করবেন, যেসব ভাষা আপনার জানা আছে সেগুলোও উল্লেখ করবেন। এর বাইরেও আপনার যে সকল বিষয়ে দক্ষতা, কোন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কোন প্রকার রিসার্চ করে থাকলে সেগুলো সময় নিয়ে সুন্দরভাবে সাজিয়ে ২ পেজের মধ্যে একটি সিভি তৈরি করে আপলোড করতে হবে।
ইন্টারভিউ নিয়ে ভয় নয়
ইন্টারভিউ নিয়ে সবার একটি ভীতি কাজ করে, হাত পা ঘামতে শুরু করে। আসলে এটি কোন চাকরির ইন্টারভিউ না যে আপনার যত স্কিল রয়েছে তা যাচাই করবে বা একটি বড় প্রবলেম সামনে এনে সেটি সমাধান করতে বলবে। স্বাভাবিক থাকবেন, আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করা হবে এবং ওপরে যে পয়েন্ট গুলো আলোচনা করা হলো সে সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করতে পারে। হাসি মুখে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসবেন, না পারলেও বিভ্রান্ত হবেন না। আপনার সবকিছু জানতে হবে এ রকম কোন কথা নেই।
অনুলিখন: জুবায়ের আহম্মেদ
সাইয়েদুল মোস্তায়িন তরঙ্গ, শিক্ষার্থী, সাকারিয়া ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স, তুরস্ক
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪